জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারন কেন্দ্র সূত্র মতে বাংলাদেশে মাশরুম চাষের ইতিহাস খুব একটা পুরোনো নয়। ১৯৭৬ সালে তৎকালীন কৃষি উপদেষ্টা মরহুম আজিজুল হক থাইল্যান্ড থেকে সর্বপ্রথম স্ট্র মাশরুমের বীজ এদেশে নিয়ে এসে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের খাদ্য শষ্য উইং শাখার নির্বাহী পরিচালক এম শহীদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে তা রাজধানী ঢাকার আসাদগেট সংলগ্ন উদ্যান নার্সারীতে চাষের সূচনা হয়।
ঢাকায় ১৯৭৯-৮০ সালে দেশের সর্বপ্রথম জাপান ওভারসীজ কো-অপারেটিভ ভল্যান্টিয়ার সদস্য জাপানের মাশরুম বিশেষজ্ঞ মি. নাকানোর নেতৃত্বে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে মাশরুমের স্পন উৎপাদন ও মাশরুম চাষের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে এ ল্যাবের দায়িত্বভার গ্রহন করেন ইউয়োশো-আকি-কাকি-জাকি নামের আরেকজন জাপানী বিশেষজ্ঞ। ১৯৮৪ সালে জাপান ওভারসীজ কো-অপারেটিভ ভল্যান্টিয়ারের অর্থায়নে ল্যাবটির বেশকিছু উন্নয়ন করা হয়। পরের বছরই বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে সোবাহানবাগ হর্টিকালচার নামের সাভারের এ ল্যাবরেটরী বিল্ডিংটি বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রনালয়ে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বেশ কিছু নিন্ম তাপমাত্রার ওয়েষ্টার মাশরুমের বীজ বাংলাদেশে আনা হয়।
অর্থায়নে ১৯৮৭ সালে মাশরুম বিশেষজ্ঞ ড. ফ্যাডিরিকো জেনী ও ড. মাজিওরিয়ানা বাংলাদেশে এসে সোবাহানবাগ হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এক মাস মেয়াদী মাশরুম চাষের একটি প্রশিক্ষন দেন।
পর্যায়ক্রমে মাশরুম সেন্টারের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ অভূতপূর্ব অগ্রগতি হতে থাকে। কারিগরি উন্নয়নের লক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী মাশরুম চাষী প্রশিক্ষন, ৫ দিনব্যাপী সম্প্রসারন কর্মকর্তা প্রশিক্ষন, ৪৫ দিনব্যাপী মাশরুম শিল্প উদ্যোক্তা প্রশিক্ষনসহ এলাকায় সভা-সেমিনারের মাধ্যমে মাশরুমের ব্যাপক প্রচারনার লক্ষ্যে গ্রহন করা হয় নানা পদক্ষেপ। মূলত মাশরুমের ব্যাপক সম্প্রসারনসহ মাশরুম শিল্পের উত্তোরন ঘটে ২০০৬-২০০৯ পর্যন্ত সময়ে। কৃষি মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের সাভারের সোবাহানবাগস্থ মাশরুম চাষ কেন্দ্রকে বাংলাদেশের মাশরুম গবেষনা ও সম্প্রসারন কার্যক্রম পরিচালনা ও সমন্বয়কারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারন কেন্দ্রে রুপান্তর করা হয়।
এ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের ৬টি বিভাগের কুমিল্লার শাসনগাছা, ফরিদপুরের ভাজন ডাঙ্গা, যশোরের খয়েরতলা, সিলেটের মেহেদীবাগ, দিনাজপুর সদর ও চট্ট্রগ্রামের হাটহাজারিসহ মোট ১৬টি হর্টিকালচার সেন্টারে মাশরুম সাব সেন্টার স্থাপন করা হয়। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে জনপ্রিয় মাশরুমের ১১৬টি জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করা হয়েছে। ৩’শ ৫০ জন বে-সরকারী মাশরুম বীজ উৎপাদক, ১৫টি বড়, মাঝারি ও ছোট আকারে মাশরুম ভিত্তিক খাদ্যশিল্প ও একটি ঔষধ শিল্প স্থাপনসহ সরাসরি মাশরুম চাষে সম্পৃক্ত হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ।
No existing sales at this time
No existing deals / offers at this time
No existing coupons at this time
No existing coupons at this time