ন ডরাই
মুভির নাম: ন ডরাই
পরিচালক : তানিম রহমান অংশু
মুক্তিরসাল: ২৯ নভেম্বর ২০১৯
প্রধান চরিত্র : শরিফুল রাজ এবং
সুনেহরা বিনতে কামাল
আইএমডিবি রেটিং :৭.২/১০
ন ডরাই সিনেমার নামেই বলে দেয়া যে ন ডরাই যার মানে হলো ভয় না পাওয়া।
সার্ফিং নিয়ে নির্মিত প্রথম কোন বাংলাদেশী সিনেমা।
যার কাহিনিতে চট্টগ্রামের ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে নিম্ন স্তরের মানুষ আর সমুদ্রকে ঘিরে আবর্ত হওয়া তাদের জীবন৷ মেয়ে হয়ে সার্ফিং করা এবং নিজের পরিবার এবং সমাজের চাপে পড়ে প্রতিনিয়ত নিজের একমাত্র পছন্দের জন্য লড়াই করে যাওয়া এক মেয়ের গল্প।
সিনেমাটি ২ ঘন্টা৩০ মিনিট রান টাইম যা যথেষ্ট বলে মনে হয় কিন্তু সিনেমার গল্পে আমাদের শিক্ষা দিয়ে যায় আমাদের নিজেদের জন্য হলেও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া কতটা জরুরি।
আমাদের গ্রাম্য সমাজ সংস্কৃতি আমাদের ধর্মীয় গোড়ামি আর আমাদের বর্তমান এবং সমুদ্র পাড়ের মানুষদের জীবন কতটা সুন্দর আর কতটা অনিশ্চিত তা সুন্দর করে চিত্রায়িত করা হয়েছে ।
গল্পের কাহিনি তে প্রধান পুরুষ চরিত্রে শরিফুল রাজ অভিনয় করেছে।তার আশপাশের মানুষদের জীবন এবং তার পছন্দের মানুষ আর তাদের জীবনে সার্ফিং এর প্রভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।এই চরিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নিজের প্রতিপক্ষ যদি শক্তিশালী এবং বেশি দক্ষ হয় তবে তার যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য লড়াইয়ের ময়দানে তাকে আসতে সাহায্য করা উচিত। যদিও বর্তমানে আমাদের সমাজে সবাই মনে করে প্রতিপক্ষ যদি ময়দানে না আসে তবে আমার নিজের জেতার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
আবার নিজের মধ্যে লালিত স্বপ্ন পূরণ করার সুযোগ পাওয়া । নিজের জন্য সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নিয়ে ক্ষণিকের মোহে আকৃষ্ট হযে দ্বিধায় পড়ে নিজের জীবনের লক্ষ এবং নিজের পছন্দ বেছে না নিয়ে ভুল পথে এগিয়ে গিয়ে নিজের এবং নিজের কাছের মানুষদের তাচ্ছিল্য করে ভুলটাকে বেছে নিয়ে নিজের ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাওয়া।
সময় আমাদের সাথে দয়া দেখিয়ে কখনো কখনো আমাদের হারিয়ে যাওয়া জিনিসগুলো ফেরত দেয় তা এই সিনেমার শেষে দেখানো হয়েছে।কিন্তু মাঝে আমাদের নেয়া কিছু ভুল সিধান্ত আর আমাদের কাছের মানুষদের পাশে সবসময় সাপোর্ট হিসেবে না থাকা তাদের কাছে সেই মুহুর্তগুলো আরও যে কতটা অসহনীয় করে তোলে তার একটি শিক্ষা দিয়ে যায় এই মুভিটি।
মুভিটির নামেই বলা আছে ন ডরাই যার মানে না ভয় পাই অর্থাৎ ভয় পেয়ে পালিয়ে না গিয়ে দাঁড়িয়ে আমাদের জীবনে যাই ঘটুক না কেন আমরা যেনো তার মোকাবিলা করি।যে কোন পরিস্থিতিতেই ভয় না পাই।সবসময় নিজেদের সামনে আসা সমস্যাগুলোর মুখোমুখি দাড়িয়ে লড়াই করে যাই এবং কখনোই পথ ভুল না করি এবং জীবনের সিদ্ধান্তগুলো নিজের জন্য নেয়ার সময় আবেগের স্রোতে গা ভাসিয়ে না দিয়ে বুদ্ধি দিয়ে বিচার করে তারপর ঠিক করি কি করতে চাই বা কি করা উচিত।
ন ডরাই || অনামিকা চৌধুরী
অনামিকা চৌধুরী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী। শিল্পের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা থাকলেও তার সৃজনশীলতার পরিধি শুধুমাত্র ভাস্কর্যের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি কবিতা ও সাহিত্যচর্চার প্রতিও সমানভাবে আকৃষ্ট, যেখানে শব্দের বুননে তিনি অনুভূতির রঙ ছড়িয়ে দেন। শিল্প ও সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি অনামিকা চৌধুরীর আরেকটি বড় ভালোবাসা সিনেমা দেখা। তিনি শুধু সিনেমা দেখেনই না, বরং চমৎকার বিশ্লেষণধর্মী রিভিউ লেখেন, যা পাঠকদের সিনেমার গভীরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। তার রিভিউগুলো কেবলমাত্র গল্প বিশ্লেষণ নয়, বরং সিনেমার শৈল্পিক ও আবেগী দিকগুলোকেও অনন্যভাবে তুলে ধরে। ভবিষ্যতে অনামিকা চৌধুরী তার সৃজনশীলতার বিচিত্র দিকগুলোর সংমিশ্রণে শিল্প, সাহিত্য ও চলচ্চিত্র বিশ্লেষণের এক অনন্য ধারায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। তার প্রতিটি সৃষ্টি শিল্প, সাহিত্য ও অনুভূতির এক সুন্দর সংমিশ্রণ হয়ে উঠুক, এটাই তার স্বপ্ন।
This post of CC is sponsored by- Print World