প্রথম আলাপ
পুরোনো আলমারির কোণ-ঠাসা ডায়েরিটা অনেক কাল নির্বাক ভাবে চেয়েছিল- গল্পের খোঁজে,
দোয়াতের লাল রঙে ভরে উঠতে, আতরের মাদকীয় গন্ধে নির্বাসনের মুক্তিতে।
এতদিনে, না-বলা কথার রেশ ভাসবে মেঘে,
ওর মুখে হাসি ফুটবে।
চোখের আদানপ্রদানে একটা আস্ত উপন্যাস খাড়া হবে রূপাই-সাজুর,
হয়ত হবে, হয়ত-বা না,- কিন্তু সে কি চায়?
এই উত্তর জানতে বড়ো ভয় হয় - যদি বন্ধুত্বের সম্পর্কে গ্রানাইটের বিস্ফোরণ ঘটে,
ওই সুন্দর কাটানো মুহূর্তগুলো - পাশে বসে গল্প করা, দূর থেকে হাসি মাখো ঠোঁট দেখতে থাকা, সকলের মাঝেই ওর সাথে ঠাট্টা তামাশা, ওর চোখের গল্পগুলোর গভীরে প্রবেশ করা, এ সব কিছুই, এক পলকের মধ্যেই মোমবাতির গলনে নিভে যাবে।
তাই ভয় হয় ওকে বলতে-পাহাড়ের চুড়ায় আমার সাথে বাসা বাঁধবি?
চিলেকোঠায় পায়ে পা মিলিয়ে তুমল ঝগড়া করবি,
গোধূলির আলতো আলোয় তোর সাদা লাল পাড় শাড়ির আঁচলের ছোঁয়ায় কপালের জলবিন্দু মোছাবি,
হাঠাৎ রাতেই তুই আবদার ছুঁড়বি নর্থ ভ্রমণ।
হ্যাঁ, আমি ভীতু!
তুই যদি হারিয়ে যাস- মনের কোটরকে শীতল না করে বাষ্প হয়ে মেঘ তার থেকে তুমুল বর্ষণ, তাহলে মিথ্যে হয়ে যাবে সেই উপন্যাস।
যদিও একতরফা আমায় আরাম দেয়- স্বপ্ন বোনায় মেঘ-মল্লারের, তোর কাঁধে মাথা রেখে রাত জাগার ক্লান্তি ভোলায়।
মুগ্ধ হয়ে বসে থাকি আঁকিবুঁকি ভাবনার কাঠগড়ায়,
আঁকড়ে রাখে সেই মোলায়েম হাসি।
জানি কথাগুলো খুব উদ্ভট আমার মতোই- তাও অন্ধ হওয়ার আগে বলে ফেলাটা জরূরি,
নাহলে অবিচার করা হবে আমার আমিকে।
গল্পটা আপাতত এইটুকুই থাক! অপেক্ষায় .. তুই কি চাস?
নিছকই জানি আবার বসন্তের ঝড় গোলাপের কাঁটার মতো মনসাগরে ক্রুশ বিদ্ধ রবে,
তবুও অপেক্ষায়...
প্রথম আলাপ || রাহুল বোস
রাহুল বোস ২৬ বছর বয়সী একজন অভিনেত্রী। তিনি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়া-শুনা শেষ করেছেন। বই পড়া তার অন্যরকম ভালো লাগা। আর লেখা-লেখি তার নেশা। তিনি নিয়মিত অভিনয়ের পাশাপাশি প্রচুর লিখতে পছন্দ করেন। তিনি মূলত বাস্তবিক জীবন নিয়ে লিখতে বেশি তৃপ্তিকর মনে করেন।