বুহাসার অয়েল ফিল্ডে
এই ঘটনার প্রেক্ষিত আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। সময় ২০০৪ সালের জুন মাসের এক গ্রীষ্মের দুপুর। স্থান আবুধাবির গ্যাস কো বুহাসার অয়েল ফিল্ড।মাস দেড়েক আগে একটা বহুজাতিক কোম্পানিতে জয়েন করে আমার পোস্টিং হোয়েছে ওখানে।কাছেই মানে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে আমাদের ক্যাম্প বিনথানি। ওখানেই থাকার ব্যবস্থা করেছে কোম্পানি থেকে। আপাতত আমি একাই আছি। আমার কাজ প্রিলিমিনারি সার্ভে করা। আমরা জায়গাটার নাম দিয়ে ছিলাম ভূতহাসা। সত্যিই সন্ধ্যাবেলা যখন অন্ধকার নেমে আসে আর অনেকটা দূরে দূরে যখন ক্যাম্পগুলোর আলো জ্বলে ওঠে সত্যি গা ছম ছম করা ভূতুড়ে এলাকা বলেই মনে হয় বইকি।
তা যাই হোক সেদিনও লাঞ্চ করে সেকেন্ড হাফে সাইট সার্ভে কোরতে বেরিয়েছি সাথে আছে একজন পাতলা মতন সর্দারজি সার্ভেয়ার একটা লম্বা স্টিক হাতে। ঘন্টা দুই পর কাজ কমপ্লিট কোরে এবার ফেরার পালা। সর্দারজি অনেকটা এগিয়ে গেছে। জোরে মরুভূমির গরম হাওয়া বইছে। শুনেছিলাম মরুভূমিতে স্যান্ড়বাগ থাকে। একবার ওখানে পড়লে আর রক্ষা নেই নির্ঘাত সলিল সমাধি। আমার নিজেরই যে সেই অভিজ্ঞতা হবে তা কে জানতো। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ বুঝলাম আমি নিচে তলিয়ে যাচ্ছি। তারস্বরে চেঁচিয়ে সর্দারজিকে ডাকছি কিন্তু কাকস্য পরিবেদনা সে তার মতো আপন খেয়ালে এগিয়ে চলেছে। এদিকে আমার প্রায় কোমর অবধি বালির তলায় চলে গেছে।আর একটু পরে কিছুই করার থাকবে না। কিন্তু না কপাল ভালো ছিলো ওই সর্দারজি কেন জানি না পেছন ফিরে দূর থেকে আমাকে দেখতে পেয়ে দৌড়ে এসে আমার হাত ধরে টেনে আমাকে ওই সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে উদ্ধার করে। তারপর থেকে আমিও ষ্টিক নিয়ে চলতাম যাতে ওই স্যান্ডবাগ বা চলতি ভাষায় চোরাবালি এড়ানো যায়।
বুহাসার অয়েল ফিল্ডে || অপূর্ব চক্রবর্তী
মূলত একজন ছাত্র। পড়াশুনার পাশাপাশি বই পড়তে ভালো লাগে। বইয়ের প্রতি এবং জীবনানন্দ দাশের কবিতার প্রতি ভালোলাগা-ভালোবাসা থেকেই অতি নগণ্য এই লিখা। আশা করি সবাই আরো উৎসাহ দিবেন। আপনাদের উৎসাহই আমার অনুপ্রেরণা যোগাবে।