Home » MAWblog » Miscellaneous » ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’ এর ঠিক কি কাজ?
Miscellaneous
Written by: এস এম নাহিয়ান
20-08-2024
র’ - রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসি উইং। বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর নাম এদেশের মানুষ যতটা শুনেছে, তার চেয়ে যেন বেশি শুনেছে র’ এর নাম। বিশেষত যেকোনো রাজনৈতিক ইস্যু থেকে শুরু করে সামরিক ইস্যু, সব কিছুতেই যেন র’ এর নাম। কিন্তু সেই র’ সম্পর্কে আমরা আসলে ঠিক কতটা জানি? তাদের কাজের ধরন, গঠন, সংখ্যা, সফলতা, ব্যার্থতা এ সকল কিছু নিয়ে প্রশ্ন যেন থেকেই যায়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তারা আসলে কতটুকু কার্যকরী, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার যেন উপায় নেই। তাই আজকের এই লেখায় চেষ্টা করেছি র’ সম্পর্কে ধোয়াশা নানা ধারনাকে খানিকটা পরিষ্কার করতে।
র’ এর জন্ম
র’ (R&AW) অথবা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (Research and Analysis Wing) এর জন্ম ১৯৬৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর। রামেশ্বর নাথ কাও - এই নামটি তখন থেকেই যেন র’ এর সাথে ওতপ্রোত ভাবে গাঁথা। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে র’ এর প্রথম প্রধান হন আর. এন. কাও। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭৭, টানা ৯ বছর র’ এর দায়িত্বে থাকেন কাও। তার হাত ধরেই মূলত র’ হয়ে ওঠে ভারতের জন্য এক নির্ভরযোগ্য নাম।
র’ এর ফাউন্ডিং ফাদার আর. এন. কাও
র’ সৃষ্টির কারণ
১৯৬৮ সালের পূর্বে ভারতের গোয়েন্দা কার্যক্রমের সার্বিক নিয়ন্ত্রণে ছিল ইন্টিলিজেন্স ব্যুরো (Intelligence Bureau) তথা আইবি (IB)। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রেই আইবির সক্ষমতা ছিল সীমাবদ্ধ। আর সে সীমাবদ্ধতা প্রকাশ পায় পরপর দুইটি যুদ্ধে।
তার ভেতর প্রথমটি ছিল সিনো-ইন্ডিয়ান ওয়ার ১৯৬২। ১৯৫৮ সন থেকেই চীনের সাথে ভারতের সীমান্তবর্তী সংঘর্ষ লেগেই থাকতো। ১৯৬২ সালে কিউবান মিসাইল ক্রাইসিসের সুযোগ নিয়ে চীন আক্রমণ করে বসে ভারত-চীনের মধ্যেকার বিতর্কীত এলাকায়। প্রায় ৭০০০ সেনা হারিয়ে সে যুদ্ধে খুব করুণ পরাজয় বরণ করে ভারত। অনেক অঞ্চলের দখল ছেড়ে দিলেও চীন আজ অবধি ১৪,০০০ বর্গ কিলোমিটার বেশি ভূমি দখল করে রেখেছে। আর সেটিই এখন পরিচিত আকসাই চীন নামে।
মানচিত্রে চীনের দখলকৃত আকসাই চীন
এ যুদ্ধে চীনের শক্তি সঞ্চয় এবং অতর্কীত আক্রমণ সম্পর্কে তেমন কোনো আগাম বার্তাই জানাতে পারে নি আইবি। অনেকটা একই রকম চিত্রের অবতারণা ঘটে ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে। ফলস্বরুপ ১৯৬৮ সালে সৃষ্টি হয় র’।
অন্য সকল গোয়েন্দা সংস্থার মতই র’ এর গঠন সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। এর সদস্যসংখ্যা অথবা বাজেট, কোনো বিষয়েই তথ্য প্রকাশ করে না ভারতীয় সরকার। তবে জন্মলগ্নে খুব বেশি জনসংখ্যা ছিল না র’ এর। ২৫০ জনের মতো জনবল এবং ৪ লক্ষ ডলার নিয়ে যাত্রা শুরু করে র’। সর্বশেষ এর আকার নিয়ে নির্ভরযোগ্য মন্তব্য করেছিলো ফেডারেশন অফ আমেরিকান সাইন্টিস্ট। সেটিও ২০০০ সালে। তাদের তথ্যমতে র’ এর সদস্য সংখ্যা তখনই ছিল ৮ থেকে ১০ হাজার। বাজেট ছিল ১৪৫ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এ থেকে কিছুটা হলেও অনুমান করা যায় যে ২০২৪ সালে র’ এর জনবল এবং বাজেট ঠিক কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। তবে র’ সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য না থাকলেও কিছু বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। যেমনঃ
১। সাংগঠনিক কাঠামো
আর. এন. কাও র’ কে আমেরিকান সিআইএ এবং ব্রিটিশ এমআইসিক্স এর আদলে গড়ে তুললেও এর সাংগঠিনক কাঠামো অনেকটাই আলাদা। র’ প্রধানের পদমর্যাদা হলো ‘সেক্রেটারি। যিনি কি না সরাসরি কেবিনেটে পদপ্রাপ্ত হন। আরও একটি বড় পার্থক্য হলো র’ ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে না। কোনো ধরনের সাংসদীয় নিয়ন্ত্রণবিহীন এই বাহিনী সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অধীনে নিয়োজিত। র’ প্রধান দৈনিক রিপোর্ট করেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর (National Security Advisor) কে। এছাড়াও র’ এর সরাসরি সংযোগ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে।
ভারতের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর অজিত দোভাল
র’ অফিসারদের প্রধানত ৭টি পদ ও তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়ে থাকে। চলুন সেগুলো দেখা যাক একটি ঝলকে।
২। বাহিনী প্রধান
র’ কে পরিচালনার দায়িত্ব কখনই কোনো সামরিক বা প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাঁধে বর্তায় না। বরং র’ তে দীর্ঘ অনেক বছর ধরে কাজ করা এজেন্টরাই র’ প্রধান হন। এক্ষেত্রে প্রায় সময়ই ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস থেকে র’ তে যুক্ত হওয়া অফিসাররা র’ এর প্রধান হয়ে থাকেন। বর্তমান র’ প্রধান রাভি সিনহা (Ravi Sinha) ও একজন আইপিএস অফিসার।
র’তে যোগদানের উপায়
যেই র’ কে ঘিরে এত জল্পনা-কল্পনা, সেই র’ আসলে ঠিক কিভাবে তাদের এজেন্টদের নিয়োগ দিয়ে থাকে? একজন র’ এজেন্টকে ঠিক কি কি যোগ্যতার অধিকারী হতে হয়? লেখার এ অংশে ধাপে ধাপে এই প্রক্রিয়াটিকেই ব্যাখা করা হয়েছে। র’ তে নিয়োগের প্রক্রিয়াটিকে মূলত দুইটি ভাগে ভাগ করা যায়।
সরাসরি নিয়োগ
সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে স্নাতক-পাশ তরুণ-তরুণীরা র’তে যোগদান করে থাকেন। এক্ষেত্রে তাদের নিচের ধাপ গুলো পার করতে হয়।
ইউপিএসসি পরীক্ষা
সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রত্যেককে একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তবে অবাক করা বিষয় হলো র’ এজেন্ট হওয়ার জন্য আলাদা কোনো পরীক্ষায় বসতে হয় না। ভারতের ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (Union Public Service Commission) তথা ইউপিএসসি পরীক্ষার মাধ্যমেই একজন ভারতীয় র’ তে যোগদান করতে পারেন। এটি মূলত ভারতের সরকারি চাকরির পরীক্ষা যাকে অনেকটা বাংলাদেশের বিসিএস এর সাথে তুলনা করা যায়।
ফাউন্ডেশন কোর্স
ইউপিএসসি পরীক্ষায় নির্বাচিত প্রত্যেক অফিসারই চলে যান ‘লাল বাহাদুর শাস্ত্রি ন্যাশনাল একাডেমি অফ এডমিনিস্ট্রেশন’ এ। সেখানেই সিভিল সার্ভিস এর ফাউন্ডেশন কোর্সে অংশগ্রহণ করতে হয় সকলকে। ১ বছর মেয়াদী এই কোর্স শেষে সেই একাডেমিতেই র’ এর পক্ষ থেকে একটি ইন্টারভিউ এর আয়োজন করা হয়। সেই ইন্টারভিউ এ নির্বাচিত খুবই স্বল্প সংখ্যক প্রার্থী র’ তে কাজ করার সুযোগ পান।
লাল বাহাদুর শাস্ত্রি ন্যাশনাল একাডেমি অফ এডমিনিস্ট্রেশন
প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত হলেও সেটিই শেষ কথা হয়। একাডেমির ফাউন্ডেশন কোর্স শেষ করার পর নির্বাচিতদের আবার এক বছরের লিয়েন পিরিয়ডের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এই সময়ে যেকোনো অফিসার চাইলে র’ এর চাকরি ছেড়ে দিয়ে তার পূর্বের প্রশাসনিক চাকরিতে যোগদান করতে পারেন। অতঃপর ১ বছর শেষ হলে প্রত্যেক অফিসার স্থায়ী ভাবে র’ এর ডেপুটি ফিল্ড অফিসার হিসেবে নিয়োগ পান।
বিশেষ নিয়োগ
প্রয়োজন ভেদে র’ ভারতীয় বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক বাহিনী থেকেও এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে। যেমন পুলিশ, সেনাবাহিনী ইত্যাদি। এক্ষেত্রে তারাও কিছু বছর পরে তাদের মূল বাহিনীতে ফেরত যেতে পারেন। আবার স্থায়ী ভাবে র’ এর সাথেও কাজ করার সিধান্ত নিতে পারেন। ক্ষেত্র বিশেষে বিজ্ঞানী, ভাষাবিদ, নৃবিজ্ঞানীদেরও র’ তে নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে।
র’ এর কিছু অপারেশন
র’ এর সৃষ্টি, গঠন, নিয়োগ সম্পর্কে তো অনেক কিছুই জানলেন। এবার চলুন একটু জানা যাক এদের কাজ সম্পর্কে। সকল গোয়েন্দা সংস্থার কাজ সম্পর্কে অনেক জল্পনা-কল্পনাই চলে। কিন্তু বাস্তবতা আসলে কী? তারই উত্তর মিলবে তাদের কিছু অপারেশনের বর্ণনায়।
১। অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধা
ভারত যে আজ পৃথিবীর বুকে একটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র, এর পেছনের র’ এর একটি বড় অবদান রয়েছে। পারমাণবিক শক্তিধর কোনো রাষ্ট্র কখনই চায় না অন্য আরেকটি রাষ্ট্র পারমাণবিক শক্তিধর হোক। একই কথা খাটে ভারতের ক্ষেত্রেও। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীন সে সময় ভারতের উপর বেশ কড়া নজর রাখছিলো।
অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধা
এক্ষেত্রে একটি গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে র’ সফলতার সাথে পারমাণবিক সকল কার্যক্রমকে লুকিয়ে রাখে। বোমার পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রমকে ভিন্ন রুপ দেয়। এছাড়াও ভারতে অবস্থানকারী চিহ্নিত সকল ভিনদেশী গোয়েন্দা, কূটনৈতিক, সাংবাদিকদের নজরে রাখে। পারমাণবিক কার্যক্রম সংক্রান্ত সকল যোগাযোগে নজরদারি করে। র’ এর এই ধারাবাহিক কার্যক্রমের ফলে পুরো বিশ্বকে মোটামুটি চমকে দিয়েই ভারত সংগঠিত করে তাদের অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধা। যা ছিল পারমাণবিক বোমার সফল পরীক্ষা।
২। সিক্কিম দখল
১৯৭৫ সালে ভারতের সিক্কিম দখলের পেছনে অন্যতম হাত ছিল র’ এর। তখনও র’ এর প্রধান ছিলেন মিস্টার কাও। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশদের আগমন থেকেই সিক্কিম ছিল ব্রিটিশের অধীনে। ব্রিটিশদের চলে যাওয়ার পরে সিক্কিমের ভারতের সাথে ‘রক্ষাকারী’ চুক্তি হয়। এ চুক্তির অধীনে সিক্কিমের সামরিক প্রতিরক্ষার দায়িত্ব ছিল ভারতের।
ভৌগলিক ভাবে সিক্কিম ছিল ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সিক্কিমের চারপাশে রয়েছে তিব্বত (চীন), ভুটান এবং নেপাল। সিক্কিমের শাসনব্যবস্থা ছিল রাজতন্ত্র ভিত্তিক। কিন্তু সিক্কিমের রাজার চীনের সাথে সখ্যতা ভাল চোখে নেয় নি র’। ফলস্বরুপ ভারতপন্থী রাজনৈতিক দল গুলোকে গোপনে প্রত্যক্ষ সহায়তে দিতে থাকে সংস্থাটি। একই সাথে বৈদিশিক প্রভাব রুখে দেওয়ার নানা পদক্ষেপ দেয়। এছাড়াও রাজার দুঃশাসন এবং স্বজনপ্রীতির কারণে সিক্কিমের জনগণের ভেতর ক্ষোভ বাড়তেই থাকে। এর ফলস্বরুপ ১৯৭৫ সালের এপ্রিল মাসে এক গণভোট আয়োজিত হয়। সেই গণভোটে রাজতন্ত্রকে হটিয়ে ভারতের সাথে একীভূত হওয়ার সিধান্ত গৃহীত হয়। এর মধ্যে দিয়েই সিক্কিম ভারতের ২২তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়।
৩। শ্রীলংকান তামিল টাইগারসদের সহায়তা
উপরের দুইটি ক্ষেত্রেই র’ এর সাফল্যগাঁথা আপনারা জেনেছেন। তবে র’ যে শুধু সাফল্যের চাদরে ঢাকা, বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। র’ এর সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যর্থতার মধ্যে একটি হলো তামিল টাইগারদের সহায়তা।
শ্রীলংকায় যখন সংখ্যাগুরু শিংহলি এবং সংখ্যালঘু তামিল নৃগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের স্ফুলিঙ্গ ছড়াতে থাকে তখন ভারতের প্রাথমিক সমর্থন ছিল তামিলদের প্রতি। তামিল গ্রুপ গুলোকে প্রত্যক্ষ সহায়তা দিতে থাকে র’। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে অস্ত্র, গোলা-বারুদ, তথ্য, প্রশিক্ষণ সবই পৌঁছে যায় শ্রীলংকান তামিলদের কাছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ধষ ও নৃশংস গোষ্ঠী ছিল এলটিটিই তথা ‘লিবারেশন টাইগারস অফ তামিল ইলম’ (Liberation Tigers of Tamil Eelam - LTTE)।
তামিল টাইগারের প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ ‘ব্ল্যাক টাইগার’ গ্রুপের সাথে।
তামিল টাইগার খ্যাত এই গ্রুপটির নৃশংস আত্নঘাতী হামলায় শ্রীলংকাতে পুরদস্তর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ফলস্বরুপ সারা বিশ্ব জুড়ে প্রচন্ড সমালোচিত হয় ভারত। ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পরে তার ছেলে রাজীব গান্ধী ভারতের হাল ধরেন। আন্তর্জাতিক চাপ সামলাতে তিনি তামিল টাইগারদের সমস্ত সহায়তা বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী শৃলংকাতে পৌছায়। কিন্তু তামিল টাইগারদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয় ভারতীয় বাহিনী। ক্ষয়-ক্ষতি সহ্য করতে না পেরে ১৯৯০ সালে পিছু হটে ভারতীয় বাহিনী।
কিন্তু ঘটনা এখানেই শেষ নয়। তামিল টাইগার ছিল প্রতিশোধের নেশায় বদ্ধপরিকর। তারই জের ধরে ১৯৯১ সালের ২১ মে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে হত্যা করে তামিল টাইগার। কিন্তু এমন আক্রমণ সম্পর্কে আগাম তথ্য দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিলো র’। এছাড়াও প্রথম দিকে তামিল টাইগারদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হওয়ার দায়ও বেশ কিছুটা র’ এর উপর বর্তায়। প্রধান মন্ত্রীর মৃত্যুতে তামিল নাড়ু সহ সারা ভারতের রাজনীতিতেই টালটামাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। সব মিলিয়ে এই ঘটনা পরিবর্তনশীল পররাষ্ট্রনীতি ভয়াবহতা এবং গোয়েন্দা সংস্থার উপর তার প্রচন্ড প্রভাবকেই তুলে ধরে।
রাজীভ গান্ধী
সব মিলিয়ে র’ সাফল্য এবং ব্যার্থতা মন্ডলীত একটি গোয়েন্দা সংস্থা। অনেক ভারতীয় একে সেরা গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে দাবি করলেও বিশ্বে আরও অনেক বাঘা বাঘা গোয়েন্দা সংস্থা বিদ্যমান। তবে ভারতের স্বার্থ রক্ষায় যে র’ যেকোনো পন্থা অবলম্বন করতে পারে, সে নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
শেষকথা
পরিশেষে এটি বলা যায় যে, র’ অন্তত ভারতীয় উপমহাদেশে অত্যন্ত প্রভাবশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থা। বলা বাহুল্য যে বাংলাদেশেও র’ এর প্রভাব অনেক। তবে একটি গোয়েন্দা সংস্থা সম্পর্কে যত কম তথ্য পাওয়া যায়, সংস্থাটি ততটাই সফল। র’ ও সেই নীতিই অনুসরণ করে থাকে। যদিও র’কে নিয়ে ভারতের চলচিত্র জগত ব্যাপক অতিরঞ্জন করে। আর তার একটি প্রভাবও বাংলাদেশের জনমনে পড়ে থাকে। কিন্তু এটি মাথায় রাখতে হবে যে, র’ এজেন্টরা কোনো সুপারহিরো নয়। বরং তারা খুবই উচ্চ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সিভিল অফিসার মাত্র। আশা করি এ লেখার মাধ্যমে তাদের কাজের ধরন সম্পর্কে ধারনা পেয়েছেন। র’ এর কাজ মূলত তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, প্রেরণ, প্রভাব বিস্তার, ইত্যাদি। ক্ষেত্র বিশেষে অপহরণ বা হত্যার মত কাজও তারও সংগঠিত করে থাকে। তবে দিনশেষে র’ একটি গোয়েন্দা বাহিনী যার সাথে পেশাদার সামরিক বাহিনীর যথেষ্ঠ তফাত বিদ্যমান।
তথ্যসূত্র
১। রঃ আ হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া’স কভার্ট অপারেশন্স
২। দ্যা কাওবয়স অফ রঃ ডাউন মেমোরি লেন
৩। ইন্ডিয়া’স এক্সটার্নাল ইন্টিলিজেন্সঃ সিক্রেটস অফ রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাসিস উইং - র’
৫। অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন
৬। টেস্টবুক
28-11-2024
Miscellaneous
সংবিধানকে বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক দলিল। সরকার...
Read More20-11-2024
Miscellaneous
শিশুদের মনোরঞ্জন এবং শেখার অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম হল...
Read More31-10-2024
Miscellaneous
বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের সূচনার শুরুটা বস্তুত...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.