Home » MAWblog » Sustainable Development » পিপিপিঃ কি এবং কিভাবে? বাংলাদেশে আমেরিকার ন্যায় জীবনযাপন করতে চাইলে যত আয় করতে হবে আপনাকে।
Sustainable Development
Written by: এস এম নাহিয়ান
11-08-2024
বেতন, আয়, টাকা। এই তিনটি শব্দ যেন একই সূত্রে গাঁথা। আপনি কত বেতন পাচ্ছেন বা কত আয় করছেন সেটির সাথেই যেন আপনি কেমন আছেন তার উত্তর অনেকে খুঁজে পেতে চায়। কিন্ত দিন শেষে একটি দেশে আপনি ঠিক কেমন জীবনযাপন করবেন তা কিন্তু শুধু আপনার আয়ের উপর নির্ভর করে না। বরং অনেকটাই নির্ভর করে আপনার দেশে জিনিসপত্রের দাম আসলে ঠিক কতটা এবং আপনার বেতন দিয়ে কতটুকু কিনতে পারছেন তার উপর। ঠিক এ কারণেই একেক দেশে বসবাসের অভিজ্ঞতা হয় একেক রকম।
আমেরিকা বসে আপনি যেই একটি জিনিস যেই দামে ক্রয় করতে পারবেন, বাংলাদেশে বসে হয়তো তার জন্য খরচ করতে হবে অনেক বেশি। আবার তার উলটোটাও হতে পারে। তবে সব মিলিয়ে মানুষের মনে প্রায়ই একটি কথা ঘুরপাক খায়। সেটি হলো, আমি যেই অর্থ উপার্জন করছি, তা দিয়ে অন্য দেশে কেমন চলতে পারতাম? প্রশ্নটা খুব সরল হলেও উত্তরটা বেশ জটিল। আর আজকের লেখাতে আমরা তুলে ধরেছি এ প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কেই বিস্তারিত।
ক্রয় ক্ষমতা অথবা পারচেজিং পাওয়ার কি?
আয় এবং ক্রয়ক্ষমতা, দুটো কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। প্রশ্ন হলো, আপনার ভাল ভাবে বেঁচে থাকার জন্য কোনটি বেশি জরুরী? উত্তর হলো, ক্রয়ক্ষমতা। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে আপনি কি পরিমাণ পণ্য অথবা সেবা ক্রয় করতে পারবেন সেটিই হলো ক্রয় ক্ষমতা। খুব সহজ করে বললে, একটা সময় ছিল যখন ১০০ টাকায় ১ সপ্তাহের বাজার হয়ে যেত। আর এখন ১ জন মানুষের এক বেলা খেতেও ১০০ টাকার বেশি লাগে। অর্থাৎ পূর্বের ১০০ টাকার বিনিময়ে যা পাওয়া যেত, এখন তার থেকে অনেক কম পাওয়া যায়।
সময়ের সাথে ক্রয় ক্ষমতার যেমন পরিবর্তন হয়, এক দেশ থেকে আরেক দেশে গেলেও তেমনই পরিবর্তন হয়। আপনাকে যদি বলা হয় এক প্যাকেট রুটির দাম ৩৫০ লক্ষ টাকা, তাহলে আপনি ভিরমি খাবেনই বটে। কিন্তু জিম্বাবুয়েন ডলারের একটি নোটই ১০০ মিলিয়ন ডলারের। আর এক প্যাকেট রুটির মূল্য ৩৫ মিলিয়ন জিম্বাবুয়েন ডলার। আর ঠিক এখানেই উঠে আসে পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটির কথা।
পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি কি?
পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি হলো এমন একটি অর্থনৈতিক পরিমাপক যার সাহায্যে দুইটি দেশের মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতার তুলনা করা যায়। এক্ষেত্রে যেই পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয় সেটিকে বলা হয় ‘বাস্কেট অফ গুডস’ অ্যাপ্রোচ। তাহলে প্রথমেই জানা যাক এই ‘বাস্কেট অফ গুডস’ অ্যাপ্রোচ কি?
বাস্কেট অফ গুডস পদ্ধতি
বাস্কেট অফ গুডস বলতে মূলত বোঝনো হয়ে থাকে একাধিক পণ্যকে। কারণ শুধু একটি পণ্যের দাম অনেক কারণেই একেক দেশে একেক রকম হতে পারে। যেমন যেই ব্রডব্যান্ড সংযোগ ব্যবহার করে আপনি এই লেখাটি পড়ছেন, তার জন্য হয়তো মাসে আপনি ৮০০ থেকে ১,০০০ টাকা খরচ করে থাকেন। কিন্তু আমেরিকাতে একটি সাধারণ ব্রডব্যান্ড সংযোগের জন্য আপনার গুণতে হবে নূন্যতম ৩০ ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় ৩,৫০০ টাকার বেশি। অন্যদিকে আপনি যদি ঘরের কাজের একজন সার্বক্ষণিক সাহায্যকারী চান, ইংরেজিতে যাকে বলে হাউজ মেড, সেক্ষেত্রে মাসিক ১০,০০০ টাকাই বাংলাদেশে যথেষ্ট। কিন্তু আমেরিকাতে তার জন্য আপনার খরচ করতে হবে ২,০০০ থেকে ৪,০০০ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় আড়াই থেকে সাড়ে লক্ষ টাকার আশে পাশে।
মূল বিষয়টি হলো, শুধু মাত্র একটি পণ্য বা সেবার দাম তুলনা করে কখনোই দুইটি দেশের বসবাসের সার্বিক খরচের তুলনা করা যায় না। সেজন্যই পিপিপি তথা পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি মাপার ক্ষেত্রে কোনো একটি পণ্য নয় বরং একাধিক পণ্যের সামগ্রিক মূল্যমানের তুলনা করা হয়।
ল অব ওয়ান প্রাইস
পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি সম্পর্কে বুঝতে হলে আপনাকে দ্বিতীয় যেই বিষয়টি বুঝতে হবে সেটি হলো ‘ল অব ওয়ান প্রাইস’। এটি এমন একটি নীতি যা অনুসারে পরিবহন খরচ, ভ্যাট, ট্যাক্স, চাহিদার পার্থক্য ইত্যাদি সকল কিছুর অনুপস্থিতে একটি পণ্যের দাম বিশ্বের সকল দেশে সমান হবে। অর্থাৎ একটি আপেল কিনতে যদি ব্রিটেনে ২ পাউন্ড খরচ করতে হয় এবং বাংলাদেশে ২০ টাকা খরচ করতে হয়, তাহলে টাকার মূল্যমান হতে হবে ১০ টাকা = ১ পাউন্ড।
কিন্তু বাস্তবে কখনই তা হয়ে থাকে না। কারণ আমরা সকলেই জানি ১ পাউন্ডের মূল্যমান ১০ টাকা নয় বরং বর্তমানে ১৫১ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় লন্ডনের একটি দোকান থেকে একটি আপেল কিনতে খরচ হবে মাত্র ৩০২ টাকা। আর এখানেই বাংলাদেশী টাকা এবং ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্রয় ক্ষমতার পার্থক্য।
দুই দেশের মুদ্রার মানের যে পার্থক্য হয়েই থাকে, তা কারও অজানা নয়। আর সেই মুদ্রার মানের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে ফরেক্স ট্রেডিংও নতুন কিছু নয়। কিন্তু টাকা আর ক্রয়ক্ষমতা যে এক নয়, দুই দেশে একই জিনিসের দাম যে এক নয় সেটিও নতুন কিছু নয়। আর ঠিক এ কারণেই পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটির ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
পিপিপি কিভাবে হিসাব করা হয়?
পিপিপি হিসাবের প্রক্রিয়াটি কিছুটা দীর্ঘ বটে। পুরো প্রক্রিয়াটিকে মোটামুটি ৫টি ভাগে বিভক্ত করা যায়।
১। প্রথমেই ‘বাস্কেট অফ গুডস’ এ ঠিক কি কি গুডস থাকবে তা নির্ধারণ করা হউ অর্থাৎ কোন কোন পণ্য বা সেবার দামের উপর নির্ভর করে পিপিপি নির্ধারণ করা হবে তা ঠিক করতে হবে।
২। দ্বিতীয় ধাপে প্রতিটি পণ্যের সঠিক দাম নথিভুক্ত করা হয়।
৩। তৃতীয় ধাপে সকল পণ্য অর্থাৎ বাস্কেট অফ গুডস এর সামগ্রিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে যেই দুই দেশের মধ্যে তুলনা চলছে প্রথমে সেই দুইটি দেশের মুদ্রায় মোট দাম নির্ধারণ করা হয়।
৪। চতুর্থ ধাপে ‘বাস্কেট অফ গুডস’ এর মূল্যমানকে একটি সাধারণ মুদ্রায় রুপান্তর করা হয়। অর্থাৎ দুইটি দেশের দুইটি ভিন্ন ভিন্ন দামকে একই মুদ্রায় প্রকাশ করা হয়। যেমন একটি জ্যাকেটের মূল্য বাংলাদেশে ২০০০ টাকা এবং যুক্তরাজ্যে ১০০ পাউন্ড হলে দুইটি দামকেই হয় পাউন্ড অথবা টাকাতে নির্ধারণ করতে হবে।
৫। পঞ্চম ধাপে এই দুইটি মূল্যকে ভাগ করে পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি নির্ধারণ করা হয়।
মূলত এটিই পিপিপি নির্ধারণের প্রধান নিয়ম। তবে এর বাইরেও পিপিপি ইন্ডেক্স নির্ধারণ, নমিনাল জিডিপিকে পিপিপি জিডিপি’তে পরিণত করা ইত্যাদির জন্য আরও জটিল হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন হয়।
যত দিন যাচ্ছে, বাংলাদেশের অভিবাসীর সংখ্যা বাড়ছে। শুধু মানবসম্পদ্দ অভিবাসন নয়, ব্যবসায়িক অভিবাসনের হারও বাংলাদেশে বেড়েই চলেছে। আর ঠিক সেজন্যই লেখার এ অংশে বাংলাদেশীরা যেতে আগ্রহী এমন কিছু দেশের সঙ্গে পিপিপি এর ভিত্তিতে বাংলাদেশের তুলনা করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র, অধিকাংশ বাংলাদেশী সদ্যপাস যুবকদের জন্য স্বপ্নের দেশ বলা চলে। ভিসা, কাজের সুযোগ, আর টিকিট হাতে ধরিয়ে দিলে সম্ভবত সিংহভাগ যুবকই আমেরিকাতে পাড়ি জমাবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশে একটি ভাল জীবনযাপন করার থেকে আমেরিকাতে ভাল জীবনযাপন করা কি সহজ?
বাংলাদেশ থেকে যারা একটি ভাল জীবনের আশায় অভিবাসন করেন, তাদের সিঙ্ঘভাগই মূলত মধ্যবিত্ত। তাই প্রশ্ন আসে যে, আমেরিকাতে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের আয় ঠিক কতটা হওয়া উচিত। পিউ রিসার্চ সেন্টার এবং আমেরিকান আদমশুমারি ব্যুরো (২০২০) এর তথ্য অনুসারে, চার সদস্যের একটি পরিবারের উপার্জন যদি বাৎসরিক ৬৭,১০০ থেকে ২০১,২৭০ ডলারের মধ্যে হয়ে থাকে, তবে তারা মধ্যবিত্ত। এক্ষেত্রে মধ্যক হলো ১৩৪,১৮৫ ডলার। অর্থাৎ আমেরিকাতে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মাসিক আয় ১১,১৮২ ডলার বা তার আশেপাশে।
অপরদিকে ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ এর তথ্য অনুসারে, যে সকল মানুষের দৈনিক আয় ২ ডলারের নিচে, তাদেরকে নিম্ন আয়ের মানুষ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। এ তথ্যের উপর ভিত্তি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সাইন্স বিভাগের প্রাক্তন প্রধান, অধ্যাপক ড. মাইনুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে চার সদস্যের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মাসিক আয় নূন্যতম ৭০,০০০ থেকে ১৫০,০০০ টাকা”।
এখন প্রশ্ন হলো বাংলাদেশের একটি মধ্যবিত্ত পরিবার এবং আমেরিকার একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবন যাত্রার মান কি এক? উত্তর হলো অবশ্যই না। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের তথ্যের উপর ভিত্তি করে চালিত পিপিপি ক্যালকুলেটর বলছে মাসিক ১১,১৮২ ডলারের আয় করা আমেরিকান পরিবারের সমমানের জীবন যাপন বাংলাদেশে করতে চাইলে মাসিক আয় হতে হবে ৩,২০,২৬৮ অর্থাৎ ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকার কিছু বেশি। বিষয়গুলোকে একটু ছক ভুক্ত করতে বুঝতে সুবিধা হবে।
তথ্যসূত্রঃ ইনভেস্টোপেডিয়া
অর্থাৎ এ বিষয়ে পরিষ্কার যে, আমেরিকাতে বসবাস করতে যেই অর্থ উপার্জন করা প্রয়োজন, বাংলাদেশে তার থেকে অনেক কম অর্থ উপার্জন করেই সেরকম জীবনযাপন করা সম্ভব। তবে বিষয়টি বলতে যত সহজ শোনায়, ততটি সহজ আসলে নয়। আর সে কারণ গুলো ব্যাখা করা হবে লেখার পরবর্তী অংশে। তার আগে চলুন আমেরিকার মতো এমন আরও কিছু দেশের সাথে বাংলাদেশের তুলনা দেখে আসা যাক।
যুক্তরাজ্য
বাংলাদেশের একটি বৃহৎ সংখ্যক অভিবাসীর ঠিকানা যুক্তরাজ্য। সংখ্যাটি এতটাই বেশি যে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ইংরেজির পরে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ভাষাটি বাংলা। চলুন জানা যাক পিপিপি এর প্রেক্ষিতে একটি বাংলাদেশী পরিবারের ঠিক কেমন আয় করতে হবে একটি মধ্যবিত্ত ব্রিটিশ পরিবারের তুলনায়।
তথ্যসূত্রঃ নিউস্টেটসম্যান, ইউরোনিউজ
কানাডা
সহজ অভিবাসন প্রক্রিয়ার জন্য অনেক বাংলাদেশীরই পছন্দের শীর্ষে একসময় ছিল কানাডা। কিন্তু বর্তমানে প্রচুর অভিবাসীর কারণে চাকরির বাজার থেকে শুরু করে আবাসন, সব কিছুতেই কিছুটা টাকা-পোড়ন চলছে। তবুও কানাডা এখনও অনেক বাংলাদেশীর অন্যতম গন্তব্যস্থল। চলুন জানা কানাডা সম্পর্কে।
তথ্যসূত্রঃ স্প্রিং ফিনানশিয়াল
অস্ট্রেলিয়া
উপরের চারটি দেশের ন্যায় প্রায় সমান জনপ্রিয় আরেকটি দেশ অস্ট্রেলিয়া। উচ্চশিক্ষার জন্য অনেকেই পাড়ি জমান এ দেশে। অনেকেই চেষ্টা করেন থেকে যাওয়ার। মেট্রোপলিটন জীবন-যাপন, ভাল আবহাওয়া, স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা ইত্যাদি নানা কারণেই অস্ট্রেলিয়া অন্যতম অভিবাসন স্থান হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু পিপিপি এর প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার ন্যায় জীবনযাপন করতে কতটা আয় করতে হবে একটি বাংলাদেশী পরিবারকে।
তথ্যসূত্রঃ এমসি ক্রিন্ডেল
পিপিপি ভিত্তিক তুলনা এর দুর্বলতা
পিপিপি ভিত্তিক তুলনাতে প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে বাংলাদেশে উপর্যুক্ত চারটি দেশের তুলনায় অনেক কম আয় করেই সেসব দেশের সমমানের জীবন-যাপন করা যায়। কিন্তু আসলেই কি বিষয়টা সেরকম? ঠিক এখানেই ফুটে ওঠে পিপিপি ভিত্তিক তুলনা গুলোর দুর্বলতা।
পণ্যের গুণগত মান
পিপিপি ভিত্তিক তুলনা গুলোর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো পণ্যের গুণগত মানের পার্থক্য। বস্ত্র, খাদ্যপণ্য, ইন্টারনেট পরিষেবা, নিরবিচ্ছিন বিদ্যুৎ ইত্যাদি সকল কিছুর মানের দিক থেকেই অনেক সময় থাকে আকাশ পাতাল তফাত। তাই স্বভাবতই এসবের মূল্য অনেক দেশেই বেশি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশে বেশি মূল্য দিয়েও বাংলাদেশের প্রচলিত পণ্যই ব্যবহার করতে হয়।
খুব সহজ ভাবে বললে, যতই খরচ করা হোক না কেন, বাংলাদেশের ফলমূল অথবা অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যে ভেজালের মাত্রা থেকে রেহাই পাওয়ার সুযোগ অনেকটাই কম। তাই অপেক্ষাকৃত কম দামে পণ্য কিনলেও পণ্যের গুণগত মান, তথা জীবনযাপনের মানের দিক থেকে বাংলাদেশ বা অন্যান্য তৃতীয় বিশ্বের দেশ সর্বদা পিছিয়েই থাকে।
যেকোনো দেশে কোনো পণ্যের দাম নির্ভর করে সেই পণ্যের চাহিদার উপর। কোনো দেশে একটি পণ্যের অনেক চাহিদা থাকলে এবং অন্য দেশে চাহিদা অনেক কম থাকলে এদের দামের তুলনা হয় অসম।
একেক দেশের ভ্যাট, ট্যাক্স, আমদানি-রপ্তানি নীতিতে প্রচুর পার্থক্য বিদ্যমান। যেমন অটোমোবাইলের উপর বাংলাদেশে যেই বৃহৎ আকারের আমদানি শুল্ক দিতে হয় তা খুব অল্প দেশেই বিদ্যমান। ফলে পিপিপি দিয়ে একটি সাধারণ ধারনা পাওয়া গেলেও বাস্তব জীবনে এসব নীতিগত সিধান্ত জীবনযাপনের মানে বিশাল প্রভাব ফেলে।
আরেকটি বড় সমস্যা হলো ঠিক কোন কোন পণ্যের দামের ভিত্তিতে পিপিপি নির্ধারণ হবে তা ঠিক করা। সাধারণত জনজীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য গুলোই এই বাস্কেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে। তবে তুবুও কিছুটা বৈচিত্রতা থেকেই যায়। আর ঠিক সেজন্যই একেক পদ্ধতিতে পিপিপি একেক রকম দেখাতে পারে।
একটি দেশের জীবনযাপনের মান শুধুমাত্র তার পণ্যের দাম দিয়ে নির্ধারণ হয় না। বরং সেখানে সামাজিক নিরাপত্তা, চিকিৎসা ব্যবস্থা, প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতা, আইনের সুশাসন, এবং সর্বোপরি ভাল আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। তাই শুধুমাত্র পিপিপি এর সাহায্যে কোনোভাবেই দুইটি দেশের সামগ্রিক জীবনযাপনের মান তুলনা করা সম্ভব নয়।
শেষকথা
পিপিপি বা পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি মূলত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে দুইটি দেশকে তুলনা করার একটি মাধ্যম মাত্র। সাধারণত এ ধরনের মাধ্যম গুলো ম্যাক্রো ইকোনমিতে ব্যবহৃত হয়। তবে মাইক্রো ইকোনমি বা অর্থনীতির ক্ষুদ্র পর্যায়ে তুলনা করার জন্য আরও নানা ধরনের মাধ্যম রয়েছে। দিনশেষে দেখা যায় যে, ক্রয়ক্ষমতার দিক থেকে দেশে ভাল অবস্থানে পৌছাতে পারলেও সার্বিক ভাবে একটি ভাল জীবনের আশাতেই অধিকাংশ অভিবাসী দেশ ত্যাগ করেন।
৫। নিউস্টেটসম্যান,
৬। ইউরোনিউজ
12-11-2024
Sustainable Development
বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বহু দশক ধরে বিকশিত...
Read More27-10-2024
Sustainable Development
ভারত নাকি চীন, বাংলাদেশের জন্য এ যেন এক চিরন্তন টানা...
Read More27-10-2024
Sustainable Development
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ গত কয়েক বছরে...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.