Home » MAWblog » Sustainable Development » ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক কি সবার পান করা উচিৎ?
Sustainable Development
Written by: সুরাইয়া জামান
21-05-2024
ড্রিংক্স বলতে সাধারণত আমরা ঠান্ডা পানীয় অর্থাৎ সফট ডিংক্স যেমন, কোকাকোলা, পেপসি, সেভেন আপ, এনার্জি ড্রিংক্স এগুলোকে বুঝি। সাধারণত প্রচন্ড গরমে গলা ভিজিয়ে একটু স্বস্তি পেতে এই পানীয়গুলো আমরা হারমেশাই কিনে খাই। এসবের পাশাপাশি অনেকে ভালোমন্দ বিচার না করেই শরীরে লবণের মাত্রা ঠিক রাখতে খাবার স্যালাইন খেয়ে থাকেন। গরমে ডিহাইড্রেশনের কবল থেকে বাচ্চাদের সুস্থ রাখতে মায়েরা পানির বোতলে সাধারণ পানির বদলে গ্লুকোজের ব্যবহার করে থাকেন। গরমকালে নিজেদের সুস্থ রাখার এই পন্থাগুলো বেশ পুরনো হলেও হালের নতুন চালে ড্রিংক্সের তালিকায় যুক্ত হয়েছে নতুন এক ধরনের ড্রিংক্স। ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স নামে খ্যাত এই ড্রিংক্স বাইরের দেশগুলোতে নতুন কিছু না হলেও বাংলাদেশের মার্কেটে এই ড্রিংক্সের আগমণ ঘটেছে মাত্র কিছু বছর আগে। দেশের গন্ডিতে সবেমাত্র আস্তে আস্তে পরিচিতি পাচ্ছে এমন একটি ড্রিংক্স, ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্সের বিশদ নিয়ে আজকের এই লেখা।
গরমকালে আমাদের জীবনের অন্যতম আনুষাঙ্গিক পণ্য হয়ে উঠেছে এসি। এসির আবিষ্কার, বাংলাদেশে এই ব্যবসার উত্থান নিয়ে পড়তে পারেন এই লিংকে- এসি ব্যবসার আদ্যোপান্ত!
ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স কি?
ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স সাধারণত স্পোর্টস ড্রিংক্স নামে বেশি পরিচিত। ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স এই নামটি এসেছে ‘ইলেক্ট্রোলাইট’ শব্দটি থেকে। ইলেক্ট্রোলাইট হচ্ছে খনিজ উপাদানের সমষ্টি। তাহলে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স কথাটির অর্থ দাঁড়ায় খনিজ উপাদানের সমষ্টি যা একত্রে পানিতে দ্রবীভূত হয়ে বৈদ্যুতিক শক্তি বহন করে। মূলত সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম এর খনিজ থেকে এই খনিজ উপাদানগুলো পাওয়া যায়।
ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স এর কাজ কি?
‘ইলেক্ট্রোলাইট’ শরীরের বিভিন্ন দৈনন্দিন কাজ সম্পন্ন করতে ব্যবহার হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শরীরে পানি ও অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য বজার রাখা, বিভিন্ন কোষের মধ্যে পুষ্টি উপাদান পৌঁছে দেওয়া এবং সেখান থেকে বর্জ্য অপসারণে সহায়তা করা। এছাড়াও স্নায়ু, পেশি, হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের কার্যক্রম অক্ষুণ্ম রাখা এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষের ক্ষয়পূরণও হয়ে থাকে ইলেক্ট্রোলাইট এর মাধ্যমে।
প্রথম ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স
সর্বপ্রথম কে এই ড্রিংক্স আবিষ্কার করেন সেই ধারণা পেতে হলে মাল্টি-বিলিয়ন ডলারের স্পোর্টস ড্রিংক্স শিল্পে ‘গ্লুকোজেড’ (পূর্বনাম ‘লুকোজেড’) নামক একটি কোম্পানীর নাম আসে সবার আগে। ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স বাজারজাতকরণে প্রথম এই কোম্পানীটির উত্থান ঘটে ১৯২৭ সালে। কেমিস্ট উইলিয়াম ওয়েন সাধারণ পানিঘটিত অসুস্থতা মোকাবিলায় এবং শরীরে পর্যাপ্ত ইলেক্ট্রোলাইটের অভাব পূরণে প্রথম ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স তৈরি করেন এবং এই কোম্পানীর মাধ্যমে তা প্রথম বাজারে আসে।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় কিছু ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স এর মধ্যে শিশুদের জন্য Pedialyte এবং পূর্ণবয়স্কদের জন্য Gatorade, ORS, Powerade, Prime Hydration, Bodyarmor ইত্যাদি অন্যতম।
ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা
ইলেক্ট্রোলাইট আমরা সাধারণত খাবার থেকেই গ্রহণ করে থাকি। সবুজ শাক, টাটকা ফলমূল, লেবুপানি, কলা, ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমানে ইলেক্ট্রোলাইট থাকে। তবে কখন আলাদা করে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স খাবার প্রয়োজন পড়ে?
প্রচন্ড রোদে খেলাধুলা করলে বা প্রচুর পরিশ্রমের কাজ করলে সাধারণত আমাদের প্রচুর ঘাম হয়। অতিরিক্ত ঘামের সাথে আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় লবণ এবং খনিজ বের হয়ে যায় এবং আমরা দূর্বল হয়ে পড়ি। এই অবস্থায় শরীরে খনিজের ভারসাম্য ঠিক রাখতে এবং হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স খাওয়া উচিত।
যারা নিয়মিত খেলাধূলা এবং শরীরচর্চা করে, তারা পানীয় হিসেবে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স নিয়ে থাকেন। মূলত এই কারণেই ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স, স্পোর্টস ড্রিংক্স নামে বেশি পরিচিত।
ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স খাওয়ার উপকারীতা এবং অপকারীতা
ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স শরীরে শক্তি যোগায়। অতিরিক্ত ঘামের পর হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক, পেশি ও শরীরের অন্যান্য কার্যক্রম সক্রিয় রাখতে এই ড্রিংক্সের ভূমিকা অনন্য। বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়া, বমি ইত্যাদি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স খাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তার। অর্থাৎ যেকোনোভাবে শরীরে তরলের মাত্রা কমে গেলে তা পুষিয়ে দিয়ে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স বিশেষ ভূমিকা রাখে।
এতো গেলো ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স খাওয়ার উপকারীতার কথা। কিন্তু এর বিপরীতের কথাও তো জেনে রাখা প্রয়োজন। প্রয়োজন ছাড়া ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স খাওয়া উচিত নয়। হাই স্যুগার কন্টেন্ট থাকায় ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স নিয়মিত খেলে ওজন বাড়ার ঝুকি থাকে। ক্রনিক কিডনী ডিজিজ এবং ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই ড্রিংক্স পান করতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বাংলাদেশে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স এর আবির্ভাব
রাজধানীর বড় সুপার শপগুলোতে বাইরের দেশের ইলেক্ট্রোলাইট বুস্টার ড্রিংক্স আগে থেকে পাওয়া গেলেও তা ছিলো মূলত আমদানীপণ্য এবং এর ক্রেতা ছিলো ধনী স্বাস্থ্য সচেতনরা। ২০২১ সালে এসএমসি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স ‘এসএমসি প্লাস’ বাজারজারকরণ করে। টেস্টি এবং হেলদি ফিচারে তারা দুটি ফ্লেভারের ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স বাজারে আনে যা খুবই অল্পসময়ে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এরই ধারায় মাত্র দুবছরে বর্তমানে দেশের বাজারে ৯-১০টি ব্র্যান্ডের ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে প্রাণের এক্টিভ, আকিজ ফুড এন্ড বেভারেজের টারবো, ব্রুভানা, রিচার্জ অন্যতম। এছাড়াও দেশের জনপ্রিয় ইউটিউবার ব্লু’ নামের একটি ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স গতবছরের শেষে বাজারে আনে।
গত দু বছরে দেশের বাজারে সবক’টি ড্রিংক্স মোটামুটি ব্যবসা করলেও সম্প্রতি সময়ে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক্স এর বড় ব্র্যান্ডগুলোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চলমান এই জাতীয় ইস্যুর শেষ কোথায় তা অজানা হলেও দেশের তরূনদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠা ড্রিংক্সগুলো আদৌ বাজারে টিকবে কিনা তা নিয়ে বেশ সন্দেহ রয়ে যায়। তবে স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে হেলথ ড্রিংক্স নামে চলমান এই ড্রিংক্সগুলোর থেকে নিরাপদ স্বাস্থ্য বেছে নেওয়াই কাম্য এবং আরাধ্য।
তথ্যসূত্রঃ
Bangla News
12-11-2024
Sustainable Development
বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বহু দশক ধরে বিকশিত...
Read More27-10-2024
Sustainable Development
ভারত নাকি চীন, বাংলাদেশের জন্য এ যেন এক চিরন্তন টানা...
Read More27-10-2024
Sustainable Development
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ গত কয়েক বছরে...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.