Home » MAWblog » Miscellaneous » ভ্রমণের আগে যে সকল জিনিস সাথে নিতে ভুলবেন না কখনই
Miscellaneous
Written by: এস এম নাহিয়ান
08-01-2024
ভ্রমণ, আমাদের মনকে সতেজ করে তোলার জন্য এর চেয়ে ভাল কিছুই যেন আর হয় না। কিন্তু এই ভ্রমণই হয়ে ওঠে সমস্যাময় যখন আপনি এই ভ্রমণের জন্য জরুরী কিছু জিনিস ভুলে যান। দেশে হোক বা বিদেশ, ভ্রমণের সময় কিছু জিনিস আমাদের সবসময়ই প্রয়োজন। আর সেই জিনিসগুলোই পেয়ে যাচ্ছেন একসাথে এই লেখাতে। আর এর ভেতর কোনোটির সাথে যদি আপনি এখনো পরিচিত না হয়ে থাকেন, তাহলে একবার পরিচিত হয়ে ব্যবহার করেই দেখুন ভ্রমণের সময় সেই জিনিসটির গুরুত্ব।
তালিকার প্রথমেই থাকছে চার্জার এবং পাওয়ার ব্যাংক। এই দুইটি জিনিসকে নিয়ে একসাথে লেখার কারণ একটিই। এদের দুইটিরই কাজ মূলত আপনার ডিভাইসকে জীবিত রাখা। বর্তমানের যোগাযোগের যুগে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সুযোগ নেই এক মূহুর্ত। এমনকি পথ চলতেও প্রয়োজন নানা দিক নির্দেশনা। আর তাই সবার আগেই ব্যাগে ঢুকিয়ে নিন আপনার চার্জারটি। সাথে পাওয়ার ব্যাংক নিতেও ভুলবেন না। সাধারণত ভ্রমণের জন্য ১০০০০ থেকে ২০০০০ এমএএইচ (MAH) এর পাওয়ার ব্যাংক আদর্শ।
বিদেশে ভ্রমণে সময় পাসপোর্ট ছাড়া বের হলে ভ্রমণই আর সম্ভব হয়ে উঠবে না। কিন্তু দেশে ভ্রমণের সময়েও জাতীয় পরিচয় পত্র বা যেকোনো ফটো আইডি সাথে রাখা উচিত। কারণ যেকোনো পরিস্থিতিতে সেটি আপনার পরিচয়ের প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। যেকোনো পুলিশি ঝামেলা বা সিকিউরিটি চেক থেকেও রক্ষা পাবেন সহজে।
প্লাস্টিকের পানি নিরোধক ব্যাগ জিনিসটিকে খুব ফেলনা মনে হলেও এটি ভ্রমণের সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ধরুন আপনি সমুদ্র তীরে ঘুরতে গেছেন, স্বভাবতই সমুদ্রের পানিতে ভিজবেন। কিন্তু বালু সহ সেই কাপড় ধুলেও সহজে শুকাবে না। আর তেমন ভেজা কাপড় ফিরিয়ে আনতেই প্রয়োজন একটি পানি নিরোধক ব্যাগের। এছাড়া যেকোনো স্থানে গেলেই ভেজা কাপড় শুকোনো একটি বিশেষ ঝামেলা। সেই ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে এটি হতে পারে ভাল একটি সমাধান। পাশাপাশি জরুরী জিনিস গুলোও বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে এর ভেতর সংরক্ষণ করতে পারেন।
ভ্রমণে বের হলে রোদে পুড়তে হবেই, আর যদি সেটি হয় সমুদ্রের তীর কিংবা পাহাড়ের চূড়া, তাহলে কথাটি আরও অনেক বেশি সত্যি। তাই ঘুরতে গেলে অবশ্যই নেওয়া উচিত সানক্রিম প্রডাক্ট। প্রথমে এটিকে অপ্রয়োজনীয় মনে হলেও, দুই এক দিন পরেই পার্থক্যটি বুঝতে পারবেন।
এন্টি মসকুইটো ক্রিম মানে মশানিরোধী ক্রিম। বাংলাদেশে এর প্রচলন কম হলেও এদেশেই এর প্রচলন হওয়া উচিত সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের শহর থেকে শুরু করে গ্রামে-গঞ্জে এমন কোনো স্থান নেই যেখানে মশার প্রভাব নেই। প্রতিটি স্থানে স্থানে কয়েল জ্বালানো কিংবা অ্যারোসল স্প্রে করা সম্ভবও নয়। তাই বনে-জঙ্গলে কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে একমাত্র ভরসা হলো এন্টি মসকুইটো ক্রিম। এর বেশিরভাগই আবার একাধিক পোকা-মাকড় থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকে।
ক্রিম থেকে আবার ফেরত আসা যাক প্রযুক্তিতে। বর্তমানে পাবলিক প্লেসে উচ্চ স্বরে মোবাইলে কিছু শোনা চূড়ান্ত অভদ্রতার কাতারে পড়ে। কিন্তু বাসে বা ট্রেনে চড়ে যেতে যেতে আপনার গান শোনার ইচ্ছে হতেই পারে। অথবা চলে আসতে পারে জরুরী কোনো কল। তাই কোনো ভাবেই নিজেই ইয়ারফোন ভোলা চলবে না।
দেশের ভেতরে ভ্রমণের সময় এটি তেমন কাজের জিনিস না। কিন্তু বিদেশ ভ্রমণের সময় এর চেয়ে কাজের জিনিস আর একটিও নেই। কারণ ভিন্ন দেশে সাধারণত বৈদ্যুতিক চার্জিং পোর্ট, ভোল্টেজ সবই আলাদা হয়ে থাকে। তাই আপনার ডিভাইস গুলোকে চার্জ দিতে আবশ্যক বস্তুটি হলো ইউনিভার্সাল ট্রাভেল অ্যাডাপ্টার। এটি এমন একটি অ্যাডাপ্টার যা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের প্লাগের সাথে সংযুক্ত হয়ে আপনার ডিভাইসটিকে চার্জ করতে পারবে।
যদিও আজকালকাল ফোনের ক্যামেরাতেই অনেক ভাল ছবি ওঠে। কিন্তু একটি পেশাদার ক্যামেরার মর্ম আলাদা। প্রিয়জনের সুন্দর মূহুর্ত ছবিতে সংরক্ষণ করতে চাইলে তাই ক্যামেরা সাথে নেওয়া বাধ্যতামূলক। এছাড়াও ভ্রমণের স্মৃতি ধরে রাখতেও ক্যামেরা হতে পারে একটি চমৎকার মাধ্যম।
আপনার যদি নিয়মিত ঔষুধ খেতে হয় তাহলে সে সব আপনি সাথে নেবেন তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু এর বাইরেও অনেক সাধারণ ঔষুধ সাথে নেওয়া উচিত। বিশেষত ভ্রমণ জনিত নানা সমস্যা, যেমন বমি, মাথা ব্যাথা, গা ব্যাথা ইত্যাদির জন্য ঔষুধও মজুদ রাখতে হবে। সাথে অবশ্যই রাখতে হবে স্যালাইন। কারণ পথি মধ্যে পেটের সমস্যার থেকে দুঃখজনক আর কিছুই হতে পারে না।
প্রত্যেকের উচিত ভ্রমণের জন্য একটি আলাদা মাল্টিপারপাস জুতো কিনে ফেলা। এ ধরনের জুতো গুলো একই সাথে নানা ভাবে ব্যবহার করা যায়। তবে মাল্টিপারপাস জুতো বাংলাদেশে তেমন পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে ভ্রমণের জন্য অন্তত এমন কেডস নেওয়া উচিত যা সহজেই শুকিয়ে যায়। তবে পাহাড়ী অঞ্চলে গেলে স্পাইকযুক্ত ভারী কেডস পড়াই বাঞ্চণীয়।
এর পাশাপাশি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো স্যান্ডেল। বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণে গেলে খালি পায়ে থাকাটা সম্ভব নয়। আবার চট করে ভাল জুতো পড়ে বের হওয়াও মুশকিল। সেটি সার্বক্ষণিক পড়ার জন্যও আদর্শ নয়। তাই স্যান্ডেল সাথে রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
অবশ্য সাপ্তাহিক ছুটিতে ঢাকার ভিতরেই অনেক স্থানে বেড়াতে পারেন যেখানে যেতে তেমন আহামরি আয়োজনের প্রয়োজন নেই।
আপনি যদি রোমাঞ্চ প্রেমী হয়ে থাকেন তাহলে তাবুই আপনার জন্য সবচেয়ে আদর্শ জিনিস। লেকের পাহারে সহস্র তারার নিচে অথবা পাহাড়ের উপর আগুন জ্বালিয়ে, তাবুতে থাকার মজাই আলাদা। যদিও সংখ্যা কম, কিন্তু অনেক ভ্রমণকারীই নিজেদের তাবুতে থাকার শখ পূরণ করেন। তাই ভ্রমণের যাওয়ার পূর্বে আপনার এই সম্ভাবনাটাও খতিয়ে দেখা উচিত। এছাড়াও থাকার যায়গা অনিশ্চিত থাকলে সবসময়ই তাবু নিয়ে ভ্রমণ ভাল।
তাবুর কথা যদি আসে, তাহলে স্লিপিং ব্যাগ অবশ্যই আসে। তাবুতে সরাসরি ঘুমানো গেলেও একটি ভাল স্লিপিং ব্যাগ হতে পারে আপনার ভাল ঘুমের সঙ্গী। এছাড়াও মশাসহ যেকোনো পোকা মাকড় থেকে বাচতে কিংবা অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকে নিজেকে সুরক্ষা দিতে স্লিপিং ব্যাগ অসাধারণ কাজ করে।
হ্যামক জিনিসটি প্রায় সকলে চিনলেও অনেকেই এর নাম জানে না। কিন্তু ঘুরতে গেলে এই হ্যামক হতে পারে চমৎকার সময় কাটানোর মাধ্যম। ঝিরি ঝিরি বাতাসে হ্যামকে শুয়ে গান শোনা, বা গল্পের বই পড়া। এর চেয়ে ভাল ভাবে হয়তো বিশ্রাম নেওয়া যায় না। তাই আপনার যদি তেমন কোনো স্থানে ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকে, তাহলে হ্যামকটি সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।
ভ্রমণ শুধু ঘোরার জন্যই নয়, শেখার জন্যও। তাই অনেকেই ভ্রমণের সময় একটি জার্নাল কিংবা ডায়েরি সঙ্গে রাখেন। অনেকেই অনেক শখ করে খুঁটিনাটি বিস্তারিত নোট করেন ডায়েরিতে। কেউবা সামান্য কিছু ব্যাপারে একটি দুইটি বাক্য লিখেন। কারও মনে আবার কবি ভাগ জাগ্রত হলেও তারও সাক্ষী হয় ডায়েরিটি। তাই বলা যায়, ভ্রমণের সময় কাগজ কলম সাথে থাকলে লাভ বই ক্ষতি নেই।
আপনার কাছে যদি অতিরিক্ত কোনো ফোন থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই সেটি ভ্রমণে নিন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল হয় একদম কম দামী বাটন ফোন সাথে রাখলে। যা চুরি হওয়ার ভয় কম এবং সহজে হারাবেও না, নষ্টও হবে না। দুর্ভাগ্যক্রমে যদি আপনার স্মার্টফোন নষ্ট হয়, তাহলে সেই বাটন ফোনই হবে আপনার যোগাযোগের সবচেয়ে বড় ভরসা।
সাবধানের মার নেই। আর যদি অতিরিক্ত ফোন থেকে না থাকে, তাহলে অবশ্যই একটি কাগজে আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নাম্বারগুলো নিন। কারণ একটি নাম্বার বর্তমান যুগে মোবাইলের উপর অরিতিক্ত নির্ভরশীল হওয়ায় কারোরই কোনো নাম্বার মুখস্ত থাকে না। তাই বিপদের মোকাবেলা করতে কিছু জরুতী নাম্বার ও ঠিকানা সাথে লিখে নেওয়াই ভাল।
ভ্রমণে গেলে কার কি জিনিস লাগবে তা নিতান্তই ব্যক্তিগত চাহিদার উপর নির্ভর করে। উপরে উল্লিখিত জিনিস গুলোর বাইরেও অনেকেরই জামাকাপড় থেকে শুরু করে নানা জিনিসের প্রয়োজন হয়। নিতান্তই সাধারণ জিনিস গুলোর বদলে এ তালিকায় এমন সব জিনিস উল্লেখ করা হয়েছে যা সহজেই আপনি ভুলে যেতে পারেন। তাই এই লেখাটি ভ্রমণের আগে একবার পড়লে আশা করি আপনি কিছুই নিতে ভুলবেন না, এবং আপনার ভ্রমণ হবে সুন্দর ও শান্তিময়।
28-11-2024
Miscellaneous
সংবিধানকে বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক দলিল। সরকার...
Read More20-11-2024
Miscellaneous
শিশুদের মনোরঞ্জন এবং শেখার অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম হল...
Read More31-10-2024
Miscellaneous
বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের সূচনার শুরুটা বস্তুত...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.