Economy

ছোট প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে মহীরুহ হয়ে উঠেছে ব্র্যাক

Written by: Suraiya Zaman

12-10-2023

ছোট প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে মহীরুহ হয়ে উঠেছে ব্র্যাক



১৯৭১ সালের শেষের দিকের কথা। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর বাংলার মানুষ ফিরে পেয়েছিলো তাদের নিজেদের রাষ্ট্র। এই যুদ্ধ বিধ্বস্ত রাষ্ট্রে তখন তুমুল হাহাকার। দেশে ভালো কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই, ভালো কোনো সংগঠন কিংবা এনজিও নেই যারা এই বিধ্বস্ত দেশের বিধ্বস্ত-অসহায় মানুষগুলোর ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হাত বাড়িয়ে দিতে পারে। সাহায্যকারী সংগঠন বা এনজিও হিসেবে বিদেশি কিছু সংগঠন থেকে নিয়মিত ত্রাণ আসতো। ব্যস এটুকুই! 

সেই সময় যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের অনেক কাজ ছিল। তাই সরকারের পাশাপাশি কয়েকটি ছোট প্রতিষ্ঠান সেইসব উন্নয়নমূলক কাজে এগিয়ে আসে। এদের মধ্যে ব্রাক অন্যতম। তবে আজ আর ব্র্যাক ছোট প্রতিষ্ঠান নেই। দেশের পুনর্গঠন এবং উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসা সেই ছোট্ট ব্র্যাক আস্তে আস্তে নিজেকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। হয়ে উঠেছে বিশ্বের অন্যতম প্রধান জনপ্রিয় এনজিও সংস্থাগুলোর শীর্ষস্থানীয় একটি। 

আজ জানবো ব্র্যাকের জন্ম ইতিহাস এবং এর গ্রোথ স্ট্রাটেজি, জানবো কিভাবে দেশ ছাপিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে গেছে ব্রাক। 

 

 ব্রাকের জন্ম ইতিহাস 

এক যুবকের গল্প দিয়ে শুরু করি। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৬২ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত লন্ডন, কানাডা, আমেরিকার বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির বড় পোস্টে চাকরী করছিলেন বাংলাদেশী সেই যুবক। ১৯৭০ এর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে যখন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়, তখন ফজলে হাসান আবেদ নামের এই যুবক শেল অয়েল কোম্পানির চট্টগ্রাম অফিসে ফাইন্যান্স বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দেশের মানুষের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তাকে ব্যথিত করে তোলে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, তিনি এই দুস্থ মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরন করবেন। বন্ধুদের নিয়ে তিনি “হেলপ” নামক একটি সংগঠন তৈরি করলেন এবং সেই সংগঠনের আওতায় তাঁরা ব্যাপক ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

পরের বছরই শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের সময় ফজলে হাসান আবেদ লন্ডনে ছিলেন। সেখান থেকেই তিনি আরো দুটি সংগঠন তৈরি করে বন্ধুদের নিয়ে তা পরিচালনা করেন। এই সংগঠন দুটির লক্ষ্য ছিলো, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সপক্ষে জনমত তৈরি এবং অর্থ সংগ্রহ করে মুক্তিবাহিনীকে সহযোগিতা করা। শেষ অব্দি তিনি এভাবেই দেশ মুক্তির কাজে সহযোগীতা করে গেছেন। 

কিন্তু সত্তরের ভয়াবহ দুর্যোগ স্বচক্ষে দেখার পর তিনি লন্ডনে যেন স্থির হয়ে থাকতে পারছিলেন না। তাই লন্ডনের নিশ্চিত জীবন পেছনে ফেলে যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে এসে তিনি দুর্ভোগ পীড়িত মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করেন। সদ্যস্বাধীন দেশে আসার সময় তিনি লন্ডনের ফ্ল্যাটটি ৬,৮০০ পাউন্ড দামে বিক্রি করে দিয়েছিলেন।

তিনি দেশে ফিরে আসার পর, যুদ্ধের সময় ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীরা দেশে ফিরে আসতে শুরু করলে আবেদ সেইসব শরণার্থীদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনকল্পে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন।

সেই লক্ষ্যে, ১৯৭২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া নিজ এলাকা সিলেটের সুনামগঞ্জের শাল্লা’য় তিনি ব্র্যাক এর শাল্লা প্রকল্পের প্রথম পর্বের সূচনা করেন। তখন এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য ছিলো, বাইরে থাকা শরণার্থীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করা। 

ব্র্যাকের আনুষ্ঠানিক জন্মদিন ১৯৭২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, যেদিন শুরু হয়েছিলো বাঙালির সংগঠনের যুগ। তাই বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রার ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

 

ব্রাকের পরবর্তী যাত্রা

অকূলতারণ হিসেবে সেসময় উদ্বাস্তু মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আবেদ। তার পরিচালিত ব্র্যাক, এনজিও প্রতিষ্ঠান হিসেবে সাময়িক ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারকে করেছে নানান সহায়তা। 

শুরুতে ব্র্যাক ‘বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিটি (BRAC)’ হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার পর এর নাম বদলে ‘বাংলাদেশ রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি (BRAC)’ রাখা হয়। এখন অবশ্য ব্রাকের কোনো ব্যাখ্যামূলক বর্ননার দরকার নেই। এর বৈশ্বিক পরিচয়ই হচ্ছে ‘ব্রাক’। 

কোনো সংগঠনের এগিয়ে যাবার নেপথ্যের গল্প সেই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের পরিচয় ছাড়া অসম্পূর্ণ। কবি বেগম সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক, কাজী ফজলুর রহমান, আকবর কবির, ভিকারুল ইসলাম চৌধুরী, এর আর হোসেন এবং ফজলে হাসান আবেদ – এই ৭ কৃতি ছিলেন সূচনালগ্নে ব্র্যাকের গভর্নিং বোর্ডের সদস্য। ১৯৮০ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ব্র্যাকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ হুমায়ুন কবির। ২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন ফজলে হাসান আবেদ।

বাড়ি বিক্রি আর জমানো অর্থ দিয়ে কাজ শুরু করলেও, এরপরে বিদেশি দাতা সংস্থা অক্সফাম-জিবির সহায়তা পায় ব্র্যাক। ১৯৭২ সালের দিকে অক্সফাম-জিবি প্রায় দুই লক্ষ পাউন্ড দিয়েছিল। সেই অর্থ দিয়ে ব্র্যাক অনেকগুলো প্রকল্প নেয়। পরবর্তীতে আরো কিছু বিদেশি সংস্থার সহায়তা পাওয়া যায়। ১৯৭৪ সালের দিকে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করে ব্র্যাক।

এরপর ব্র্যাক বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং দরিদ্র জনগণের ক্ষমতায়নের মতো দীর্ঘমেয়াদি বিষয়ে মনোনিবেশ করে। এরই ধারায় বর্তমানে ব্র্যাক  ক্ষুদ্রঋণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানবাধিকার, নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন প্রভৃতি কার্যক্রমের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমান পরিবর্তনের লক্ষ্যে তাদের কর্মসূচি পরিচালনা করে চলেছে।

 

বর্তমান অবস্থা

শুরু থেকেই ব্র্যাকের মূল লক্ষ্য ছিলো, জনগনের ক্ষমতায়ন এবং দারিদ্র্য, অশিক্ষা, ব্যাধি ও সামাজিক অবিচারমুক্ত সমাজ গঠন। এরই ধারায় ক্রমাগত কাজ করে গেছে ব্র্যাক।  বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলাসহ এশিয়া, আফ্রিকা এবং আমেরিকার ১২টি দেশে ব্র্যাকের  কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। ২০০২ সালে আফগানিস্তানে কাজ করার মাধ্যমে দেশের বাইরে কর্মকাণ্ড শুরু হয়।

বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে এক লক্ষের মত কর্মী কাজ করে থাকেন। তবে এদের মধ্যে ৭০ ভাগই নারী কর্মী। শেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্র্যাকের পরিসেবার আওতায় আছে ১২৬ মিলিয়ন লোক।

ব্র্যাক দরিদ্র জনগণের স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা পূরণে ব্যাপকভিত্তিক চিকিৎসা, পুষ্টি এবং জনসংখ্যা কার্যক্রম পরিচালনা করে। ব্র্যাকের স্বাস্থ্যসেবার সুবিধাভোগী লোকের সংখ্যা প্রায় ১০০ মিলিয়ন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যসেবিকারা গ্রামের দরিদ্র জনগণের স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করেন। 

বর্তমানে ৩৮,২৫০টি এক কক্ষবিশিষ্ট বিদ্যালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত ব্র্যাকের উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম ১.১২ মিলিয়ন শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান করছে। এই শিশুদের ৬৫ শতাংশ মেয়ে। এ ছাড়া ব্র্যাক ২৬,৩৫০টি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা করছে। 

ব্র্যাকের আরো অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচি, সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি, অ্যাডভোকেসি এবং জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচি। এগুলির মাধ্যমে ব্র্যাক মানবাধিকার রক্ষা, লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে।

১৯৯৮ সালে ব্র্যাক ডেইরি ফার্ম চালু করার মাধ্যমে গাভিপালনে ঋণ প্রদান করে ব্র্যাক সেই খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংগ্রহ করে মানসম্পন্ন দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে।

২০০১ সালে স্থাপন করা হয় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। শিক্ষা উন্নয়ন এবং গভর্নেন্স স্টাডিজ নামে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির রয়েছে দুটি আলাদা ইনস্টিটিউট।

একই সালে জন্ম হয় ব্র্যাকের আওতাভুক্ত ব্র্যাক ব্যাংক এর। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ব্যাংকিং-সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড-এর যাত্রা শুরু হয়েছিলো ২০০১ সালে। তারা যাদের সাথে কাজ করে এবং যাদের পরিচালনা করে, তাঁদের প্রতি এই ব্যাংকের দায়বদ্ধতা রয়েছে- এমন বিশ্বাস নিয়েই এগিয়ে চলেছে এই ব্র্যাক ব্যাংক। 

বর্তমানে মোবাইল ফোন ভিত্তিক দেশের সবচাইতে বড় অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বিকাশ। এর পেছনেও রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক! আমেরিকান মানি ইন মোশন এলএলসি এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড এর যৌথ উদ্যোগে ২০১১ সালে শুরু হয়েছিল এই এমএফএস প্রতিষ্ঠানটি যা বর্তমানে দেশের লাখ লাখ মানুষকে মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা দিয়ে আসছে। 

শুধু তাইই নয়, দেশের বাইরে কাজ করার জন্য তৈরি হয়েছে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৫ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে ব্র্যাক এমনটাই ধারনা করা হচ্ছে। 

 

গ্রোথ স্ট্রাটেজি 

ব্রাকের মতো বাংলাদেশী ছোট একটি প্রতিষ্ঠান কিন্তু রাতারাতি বিশাল হয়নি। একটু একটু করে ডালপালা মেলে বড় হতে হতে ছোট্ট একটি চারাগাছের মতো এই সংগঠন আজ মহীরুহে পরিণত হয়েছে। 

বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির প্রবর্তক বলা হয় ফজলে হাসান আবেদকে। যুদ্ধের বছর দুয়েকের মধ্যে দরিদ্র মানুষ আবার যখন নিজেদের গুছিয়ে ভবিষ্যত উন্নতির কথা চিন্তা করছিলো, তখন ব্র্যাক নিয়ে এলো ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা। শুধু ঋণ দিলে তারা সেই টাকা নষ্ট করতে পারে ভেবে ব্র্যাক প্রতি পদে সেই ঋণ-নেওয়া মানুষগুলোর পাশে থাকতে শুরু করলো। যে ছোট্ট ব্যবসাটির জন্য তারা ঋণ নিচ্ছে, সেই ব্যবসার বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে শিক্ষা দিয়ে তাদের এ ব্যাপারে যোগ্য করে তোলার প্রয়াস নিলো ব্র্যাক। এমনকি ব্যবসাটি চালাতে হলে যেসব উপকরণ দরকার, তা তাদের কাছে সুলভ করতে অগ্রনী ভূমিকা রাখতে শুরু করলো তারা।

পাশাপাশি নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করলো তারা। তাদের ঋণ দিলো, বাড়িতে বসে অল্প পুঁজিতে হাতের কাজ, হাঁস মুরগী পালনে উৎসাহিত করলো। সেই হাঁস মুরগীর ভ্যাকসিন এবং খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করতে তারা পুরো দেশে নানা ধরনের কর্মসূচি চালিয়েছে। এভাবেই ব্র্যাক একটা ছোট ঘটনাকে জাতীয় ঘটনায় পরিণত করেছে এবং প্রত্যেক ঋণ গ্রহীতার ব্যবসা বৃদ্ধি নিশ্চিত করেছে। এতে শুধু তারা বা ব্যবসায়িই নয়, পুরো দেশের অর্থনীতি লাভবান হয়েছে।

এছাড়াও ১৯৭৬ সালে দারিদ্র্য বিমোচন ও গ্রামীণ নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন হস্তশিল্পের পণ্য তৈরি শুরু করেছিলো ব্র্যাক যার ধারায় পরবর্তীতে গড়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম ব্র্যান্ড আড়ং। 

গ্রামের দরিদ্র মানুষের সাথে এভাবেই মিশে গিয়েছিলো ব্র্যাক। আন্তর্জাতিকভাবে আসা ত্রাণের সুষ্ঠু বন্টনের মাধ্যমে তারা মানুষের আস্থার জায়গা করে নিয়েছিলো সহজেই। 

শুধু তাই না, পর্যায়ক্রমে কৃষকের আলু মজুদ রাখার জন্য কোল্ড স্টোরেজ, গাভী পালনকারীর কাছ থেকে দুধ কিনে পাস্তুরিকৃত দুধ ও দুগ্ধজাতীয় পণ্যের ব্যবসা, নারীদের তৈরি পণ্য বিক্রি করার জন্য তারা আউটলেট তৈরি করতে থাকলো। এভাবেই জাতীয় পরিসরে বেড়ে উঠেছে ব্র্যাক। 

ব্রাকের আরেকটি গ্রোথ স্ট্রাটেজি হচ্ছে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের আদলে এই প্রতিষ্ঠান চালানো। গ্রামের অসহায় মানুষ নিয়ে কাজ করলেও ব্র্যাক তার শিক্ষা, রুচি, বিশ্বাস এবং স্বপ্ন বজায় রাখতে অটুট ছিলো। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট স্যার আবেদ তাই ব্র্যাকের কর্মকাণ্ডকে দক্ষ ও সক্ষম করে তুলতে এর ভেতর পুঁজিবাদী অর্থনীতির প্রতিযোগিতা, টার্গেট ও জবাবদিহির ধারণাকে প্রায় পুরোপুরি প্রয়োগ করেছিলেন। এতে সংগঠন হিসেবে মজবুত ও নিরঙ্কুশ ব্র্যাক অতি সহজেই বিশ্বের দরবারে পরিচয় লাভ করেছে।  

ব্র্যাক নামটির সঙ্গে ‘বৃহত্তম’ শব্দটি কিন্তু হেলাফেলায় এসে জুড়ে যায়নি। স্যার ফজলে হাসান আবেদের বিস্ময়কর সাংগঠনিক প্রতিভা, সহজাত কাণ্ডজ্ঞান ও উঁচু মাপের কর্মোদ্যমই একে সম্ভব করেছে। তাইতো ব্র্যাক আজ পৃথিবীর বৃহত্তম এনজিও’র একটি।

 

Previous Post

Next Post

Related Posts

বাংলাদেশের রিজার্ভ সংকট নিরসন হবে কিভাবে?

28-08-2024

Economy

বাংলাদেশের রিজার্ভ সংকট নিরসন হবে কিভাবে?

গত বেশ কয়েক বছরে বাংলাদেশের ফরেইন রিজার্ভ নিয়ে...

Read More
মুদ্রাস্ফীতির একাল সেকাল

23-05-2024

Economy

মুদ্রাস্ফীতির একাল সেকাল

বাংলাদেশের জনজীবনের সবচেয়ে বড় দুর্ভোগ যেন এখন...

Read More
ঈদের অর্থনীতিঃ বাংলাদেশের যত ব্যবসা ঈদে

09-04-2024

Economy

ঈদের অর্থনীতিঃ বাংলাদেশের যত ব্যবসা ঈদে

পবিত্র রমজান মাস জুড়ে রোজা পালনের মাধ্যমে দেহের...

Read More

Trending

About MAWblog

MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.

We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.

Sign Up for Our Weekly Fresh Newsletter