সরকারের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট দিতে হয়। কিন্তু, অনেক সময় দেখা যায় যে সঠিক জ্ঞানের অভাবে এটা করতে গিয়ে হিমশিম খান। তবে, আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশে এটি অনেক সহজ হয়েছে। অনলাইনে ভ্যাট  রিটার্ন জমা দেয়া যায়।

আমরা এখানে আলোচনা করেছি আপনি কিভাবে ভ্যাট  নিবন্ধন করবেন ও রিটার্ন জমা দিবেন।

রাজস্ব আহরণ

ভ্যাট সম্পর্কে জানার আগে সরকার কিভাবে রাজস্ব আহরণ করে সে সম্পর্কে জানা দরকার। আমাদের দেশে NBR দুই উৎস থেকে রাজস্ব আহরণ করে থাকে। যথা:

1. Direct Tax
2. Indirect Tax

Indirect Tax

আমরা যখন কোন খরচ করি, তখন আমাদেরকে Indirect tax দিতে হয়। Indirect tax কয়েক প্রকারের আছে। যেমন:

• VAT
• Custom duty
• Supplementary duty

এরকম আরও আছে। তবে, আমরা এখানে শুধুমাত্র VAT নিয়ে কথা বলব।

ভ্যাট রিটার্ন

আপনি যে ভ্যাট দিচ্ছেন এটি সরকারকে নিয়মিত জানাতে হয়। এটি VAT return প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জানান হয়। দুই ধরনের দাতা এটি করে থাকেন। যথা:

1. Registered member
2. Enlisted Taxpayer

Enlisted Taxpayer

যে ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক Turn over পঞ্চাশ লাখ থেকে তিন কোটি এবং যদি তার জন্য বাধ্যতামূলক ব্যাট নিবন্ধন করার বিধান না থাকে তাহলে তিনি বা সে প্রতিষ্ঠান Enlisted সুবিধা নিতে পারেন। এর সুবিধা হচ্ছে তাকে ৪% ব্যাট দিতে হয়। এছাড়া, তিনি ত্রৈমাসিক হিসাবে ব্যাট রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।

Mandatory VAT registered Member

অন্যদিকে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের Turnover যাই হোক, তাকে বাধ্যতামূলক ভ্যাট নিবন্ধন করতে হবে। যেমন:

• উৎপাদন শিল্প
• পরামর্শ-দানকারী প্রতিষ্ঠান
• অনলাইন ব্যবসা
• Sublimentary duty দিতে হয় এমন পণ্য
• টেন্ডার
• আমদানি-রপ্তানি
• শাখা, মৈত্রী, প্রকল্প অফিসে কর্মরত ব্যক্তি
• লিমিটেড প্রতিষ্ঠান

আপনি যদি উক্ত প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তাহলে ৫% থেকে ১৫% হারে ভ্যাট দিতে হতে পারে।

ভ্যাট নিবন্ধনের জন্য প্রতিষ্ঠানের ধরণ

যখন কেউ ব্যাট নিবন্ধন করতে যায় তখন তাকে নির্বাচন করতে হয় যে সে কি ধরনের প্রতিষ্ঠানের জন্য নিবন্ধন করবে। যেমন:

• কেন্দ্রীয় নিবন্ধন: যদি আপনি একই ধরনের পণ্য একাধিক স্থানে বিক্রয় করেন এবং হিসাব-নিকাশ একসাথে করেন তাহলে কেন্দ্রীয় নিবন্ধন করতে হবে।
• ইউনিট নিবন্ধন: যদি আপনি একাধিক পণ্য বিক্রয় করেন অথবা একই ধরনের পণ্য বিক্রয় করেন কিন্তু হিসাব-নিকাশ আলাদা জায়গায় করেন তাহলে ইউনিট নিবন্ধন করতে হবে।

ভ্যাট প্রদানের সময়

বিভিন্ন সময়ে কাজের উপর নির্ভর করে ব্যাট দেয়া লাগতে পারে। যেমন:

• কর দিতে হয় এমন পণ্য সরবরাহ করার সময়
• পণ্য আমদানি করার সময়

ভ্যাট প্রদানের পরিমাণ

আপনি কি ধরনের কাজ করেন তার উপর নির্ভর করে আপনাকে কি পরিমাণ ভ্যাট দিতে হবে। যেমন:

• আমদানি খাত = ১৫%
• রপ্তানি খাত = ০%
• দেশের ভিতরে পণ্য সরবরাহ = ১৫%
• ট্রেডার = ৫%
• Procurement Receiver = 7.5%

লেনদেনের যে পর্যায়ে ভ্যাট দিতে হবে

কোন প্রতিষ্ঠান একটা পণ্য ক্রয় করার সময় লেনদেনের বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যায়। এর মধ্যে যেটি আগে ঘটবে তখন ভ্যাট দিতে হবে। যেমন:

• অর্থ অগ্রিম প্রদান
• পণ্য সরবরাহ
• Invoice issue
• আংশিক অর্থ অগ্রিম প্রদান

উপরের যে কাজ আগে ঘটবে তখন ভ্যাট প্রদান করতে হবে। অন্যদিকে, নিজের ব্যবহারের জন্য কোন পণ্য যে মাসে ব্যবহার করা হবে সে মাসে তার ভ্যাট দিতে হবে।।

ভ্যাট রিটার্ন প্রদানের মাধ্যম

ভ্যাট রিটার্ন বর্তমানে অফলাইন ও অনলাইন দুই মাধ্যমে দেয়া যায়। তবে, অনলাইনে দেয়া ভালো। কারণ, অনেক সময় ভ্যাট সার্টিফিকেট নিতে হয়। এটা অনলাইনে আপডেট না হলে নিতে পারবেন না।

তবে, অনলাইনে জমা দেয়ার পর এটি প্রিন্ট করে ভ্যাট অফিসে গিয়ে দিতে হবে। এছাড়া, সরকার ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয়ার অন্য কোন ব্যবস্থা করলে সেখানে গিয়ে জমা দিতে পারবেন।

ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয়ার ধরণ

অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দেয়ার কিছু প্রক্রিয়া আছে। আপনার ধরণ অনুযায়ী ওয়েবসাইটে নির্বাচন করে জমা দিতে হবে। যেমন:

• Normal VAT return: সাধারনত, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে জমা দিলে এটা নির্বাচন করতে হবে।
• Late Return: সময়সীমার মধ্যে দিতে না পারলে আবেদন করে সময় বাড়িয়ে নিয়ে এটা নির্বাচন করে জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে, এক মাস বাড়তি সময় পাবেন।
• Amended Return: রিটার্ন জমা দেয়ার সময় কোন ভুল করলে পরবর্তীতে এটা নির্বাচন করে জমা দিবেন।
• Alternative Return: যদি অফিস থেকে জানান হয় যে কোনকিছু ভুল হয়েছে ও সংশোধন করতে হবে তাহলে এটি নির্বাচন করে পুনরায় জমা দিবেন।

এখানেই শেষ নয়। এবিষয়ে সামনে আরও ব্লগ আসছে। আশা করি, আমাদের আজকের ব্লগ আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের পরবর্তী ব্লগ পেতে Newsletter subscribe করুন। এর পাশাপাশি আমাদের ওয়েবসাইট mawbiz.com.bd এর ব্লগ সেকশনে নজর রাখতে পারেন।

Md. Mohiman ACMA কে আন্তরিক ধন্যবাদ!