How to

আপনি কিভাবে ভয়কে জয় করে নিজের স্বপ্ন পূর্ণ করবেন?

Farhan Ishrak Fahim

Written by: Farhan Ishrak Fahim

08-05-2023

আপনি কিভাবে ভয়কে জয় করে নিজের স্বপ্ন পূর্ণ করবেন?

অনেকে তার স্বপ্ন পূর্ণ করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়। তখন, তারা তাদের স্বপ্ন পূরণের ইচ্ছা হারিয়ে ফেলে। তবে, সামান্য প্রেরণা ও উৎসাহ পেয়ে আবার পূর্ণগতিতে তার স্বপ্নের প্রতি এগিয়ে যায়।

আজ আমরা এই ব্লগে আলোচনা করব কিভাবে বিভিন্ন মানুষ প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করে তার স্বপ্ন পূর্ণ করেছেন এবং আমাদের নিজেদের স্বপ্ন পূরণে কি করণীয়।

Motivation কি?

প্রথমে, জানা যাক Motivation কি? Motivation হচ্ছে এমন উদ্দীপনা যা আপনাকে আপনার ক্ষমতার বাইরে গিয়ে কোন কাজ করতে উৎসাহিত করে। যেমন: আপনার পড়ালেখা করতে একদম ভাল লাগে না। আপনার শিক্ষক এমন বক্তব্য দিল যে সেটা শুনে আপনি সারাদিন পড়ালেখা করলেন।

গত ত্রিশ বছরে বিশ্বের কাঠামো সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। আমরা এখন অনেক বেশি উদ্বেগ, দুশ্চিন্তায় বুগি। আত্মহত্যার হার অনেক দেশে এমনকি বাংলাদেশেও অনেক বেড়ে গেছে।

অনেকে কাজের চাপ না নিতে পেরে, অনেকে জীবন মান মেনে না নিতে পেরে আত্মহত্যা করছে। যা খুবই ভয়ানক বিষয়।

এমনকি আমাদের দেশে অনেক সময় বিদেশ থেকে কর্মচারী বা নেতৃত্ব পর্যায়ে অনেককে নিয়োগ করা হয়। তখন, আমরা তার সাথে খাপ খেতে হিমশিম খাই। আমরা Stressed হয়ে যাই।

Motivation আমাদেরকে এসব পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সাহাজ্য করে। আমরা হাপিয়ে না উঠে পরিস্থিতির সাথে খাপ খেয়ে বিভিন্ন প্রতিকূল ঘটনার মোকাবেলা করতে পারি। তাই, জীবনে এমন কেউ থাকা উচিত যার থেকে আমরা সবসময় প্রেরণা পাব।

স্বপ্ন কি?

এখন কথা বলা যাক স্বপ্ন নিয়ে। স্বপ্ন যদি আপনাকে অনুপ্রাণিত না করে তাহলে আপনি সে স্বপ্ন নিয়ে কখনই কাজ করতে পারবেন না। এটি আজীবন স্বপ্নই থেকে যাবে। বাস্তবে রূপ নেবে না।

ডেনজেল ওয়াশিংটনের মতে A dream without goal is only a dream. যদি সপ্নের কোন নির্দিষ্ট কোন লক্ষ্য না থাকে, না থাকে কোন শৃংখলা তাহলে সেটি শুধুই স্বপ্ন থেকে যায়। তাকে বাস্তবে রূপ দেয়া যায় না।

বিজ্ঞানের মতে, আমরা সারাদিন যা করি ঘুমের মধ্যে তার প্রতিফলন ঘটানো হচ্ছে স্বপ্ন। তবে, ধর্মানুযায়ী স্বপ্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কারণ, এক স্বপ্ন সবাই দেখে না। এক এক মানুষ এক এক স্বপ্ন দেখে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি উপহার।

স্বপ্নের একটি সহজ সংজ্ঞা আছে। সেটি হলো আমি যেটা দেখি সেটা অন্য কেউ দেখবে না। আবার, অন্য কেউ যেটা দেখে সেটা আমি দেখব না। মানুষভেদে স্বপ্ন ভিন্ন হয়। আর Management এর ভাষায় স্বপ্ন হচ্ছে এমন কিছু অর্জন করা যার অস্তিত্ব বর্তমানে নেই কিন্তু ভবিষ্যতে ঘটবে।

স্বপ্নের দৃষ্টান্ত

স্বপ্নের একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত হচ্ছে ওসমানী খেলাফতের সম্রাট মুহাম্মদ আল ফাতিহ। তিনি একবার কনস্টান্টিনোপল বিজয় অভিযানে বের হন। এটি গোল্ডেন হর্ন দিয়ে ঘেরা ছিল। এই গোল্ডেন হর্ন শিকল দিয়ে বাধা ছিল।

পরে, তিনি স্বপ্নে নৌকা পাহাড়ের উপর দিয়ে নিয়ে জাওয়ার ইশারা পান। তখন, তিনি রাতে পাহাড়ের উপর গাছের বাকলের উপর দিয়ে তার নৌবহর পরিবহন করে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এভাবে, গোল্ডেন হর্ন বিজয় করেন।

নিজেকে বিশ্বাস করতে হবে

আপনি যখনই কোন কাজ করবেন সবসময় নিজেকে বিশ্বাস করতে হবে। যদি আপনি নিজেকে বিশ্বাস না করেন তাহলে অন্য কেউ আপনাকে কেন বিশ্বাস করবে? কখনই করবে না। আপনাকে নিজেকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে আপনি পারবেন।

পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যা এক সময় অকল্পনীয় ছিল। তারা নিজেকে বিশ্বাস করেছিল বলে নিয়মিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে পেরেছে এবং সফল হয়েছে। যেমন:

উইলমা রুডলফ পাচ বছর বয়সে পোলীয়তে আক্রান্ত হন। তার বাম পা অবশ হয়ে গিয়েছিল। ডাক্তার বলে দিয়েছিল সে কখনো হাটতে পারবে না। কিন্তু, তার মা সবসময় বিশ্বাস করত যে না তার সন্তান একদিন হাটতে পারবে।

পরবর্তীতে, তিনি তার স্কুলের দৌড় প্রতিযোগিতার সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিলেন। তিনি ২৬ বছর বয়সে ১৯৫৬ এবং ১৯৬০ সালে অলিম্পিকের দুইশ এবং চারশ মিটারের দৌড় প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ পদক বিজয় করেন।

নিকি বুইচিজ এমন এক ব্যক্তি যার জম্ম হয়েছে অপরিণত শিশু হিসেবে। জন্মকালে তার দুই হাত এবং পা ছিল না। শুধুমাত্র, কোমরের নিচে দুই ইঞ্চির দুইটি আঙুল বিশিষ্ঠ একটি পা ছিল যেটা দিয়ে তিনি নড়াচড়া করেন।

তিনি আঠার বছরে প্রায় দের লক্ষ মানুষকে প্রেরণা দিয়েছেন। তিনি কলেজ শেষ করে সাউথ অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যলয় থেকে Accounting এবং Financial analysis বিষয়ে স্নাতক শেষ করেন। তিনি ২০১২ সালে Life without Leems নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তিনি একজন Best selling বইয়ের লেখক। বইয়ের নাম হচ্ছে Life without Limits।

১৯০৩ সালে এক ব্রিটিশ এথলেট ৪.১৬ মিনিটে ১ মাইল দৌড়ে শেষ করেন। তারপর, একটা ধারণা তৈরি হয়ে যায় যে কেউ এই রেকর্ড ভাঙতে পারবে না। কিন্তু, ১৯৫৩ সালে রোজার বেনিস্টার ৩.৫৯ মিনিটে ১ মাইল দৌড়ে এই রেকর্ড ভাঙেন। তারপর, অনেকে তার এই রেকর্ড ভেঙেছে।

অরুনিমা সিনহা এমন এক পর্বতারোহী যার একটি পা নেই। তিনি ২০১৫ -২০১৯ সালের মধ্যে পৃথিবীর সর্বোচ্চ আটটি পর্বতমালা আরোহণ করেন। তিনি এক ট্রেন দুর্ঘটনায় পা হারান। পরে, তিনি এভারেস্টে আরোহণ করেন। তিনি একটি বই লিখেছিলেন সেটা Best selling খ্যাতি লাভ করে। বইটির নাম হচ্ছে Born in the Mountain. ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করেন।

এখন এক বধির সঙ্গীতজ্ঞের কথা বলব। তার নাম হচ্ছে লুডউইগ ভ্যান বেইটোভেন। তিনি জার্মানির এক সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন যিনি কানে শুনতে পারতেন না। তিনি পাঁচ শত  গান পরিচালনা করেছেন। তিনি সে কালের সেরা রোমান্টিক সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন।

নেলসন মেন্ডেলা বর্ণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে আটক হন। তিনি প্রায় ২৭ বছর জেলে ছিলেন। পরে, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি তাকে মুক্ত করে উপরাষ্ট্রপতি পদে নিযুক্ত করেন। পরে, তিনি রাষ্ট্রপতি হন।

তিনি একদিন এক রেস্টুরেন্টে খেতে যান। সেখানে যে তাকে খাবার দেন তিনি তাকে দেখে খুব ঘামতে থাকে। পরে, জানা যায় যে নেলসন মেণ্ডেলা যখন জেলে ছিলেন তখন তিনি পানি চাইলে সে ভদ্রলোক তার মুখে প্রসাব করে দিত। কিন্তু, নেলসন মেন্ডেলা তাকে ক্ষমা করে দেন।

Fidel Castro কিউবার রাষ্ট্রপতি ছিলেন। আমেরিকার বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তাকে ৬৩৮ বার হত্যা করার চেষ্টা করে। কিন্তু, প্রতিবার কোন না কোনভাবে বেঁচে যান।

উপরোক্ত ব্যক্তিগণ যে অর্জন করেছেন তার পিছনে প্রধান কারণ ছিল আত্মবিশ্বাস। এটা না থাকলে হয় ত তারা সফল হতে পারতেন না।

এদের একেকজন আমাদের জন্য প্রেরণার উদাহরণ। যদি তারা করতে পারে তাহলে আমরা যেটা করতে চাই সেটাতে সফল হব।

SWOT Analysis

আমরা নিজেকে উন্নত করতে চাইলে কিছু কাজ করতে হবে। তার একটি হচ্ছে SWOT analysis. এর মাধ্যমে আমরা আমাদের নিম্নোক্ত বিষয় নির্ধারন করতে পারব:

  • Strength: আমার ভিতরে কি কি শক্তি বা দক্ষতা আছে। যেমন: যোগাযোগ দক্ষতা
  • Weakness: আমার ভিতরে কি কি দুর্বলতা আছে। যেমন: সঠিক যোগাযোগ করতে অক্ষম
  • Opportunity: কি কি সুযোগ আছে। আমার মধ্যে যে সম্ভাবনা আছে সেটাকে কিভাবে বিকাশ ঘটানো যাবে। যেমন: অনেকে অনেক কিছু শিখে চাকরি বা ব্যবসায় সফল হতে পারে।
  • Threat: আমরা কি কি সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে পারি। যেমন: কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিভিন্ন দুর্ঘটনা, প্রযুক্তির উদ্ভাবন, শিল্প বিপ্লব ইত্যাদি।

লক্ষ্য নির্ধারন

লক্ষ্য ছাড়া স্বপ্নের কোন মূল্য নেই। পৃথিবীতে এর অসংখ্য উদাহরণ আছে যে অনেকে লক্ষ্য নির্ধারণ করার মাধ্যমে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে। যেমন:

ব্রুসলি ১৯৫৮ সালে ঠিক করেন যে তিনি একজন জনপ্রিয় অভিনেতা হবেন। তিনি একটি কাগজে লিখে এটি তার পকেটে রেখে দেন। তিনি প্রায় এটা দেখতেন এবং সে অনুযায়ী বিভিন্ন ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারন করেন। অবশেষে, তিনি একজন জনপ্রিয় অভিনেতা হন।

আলবার্ট আইনস্টাইন ছিলেন এক মেধাবী বিজ্ঞানী। তিনি সম্ভাবনা সূত্র প্রবর্তন করেন। এর জন্য পরে তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

স্টিভ জবস এপলের সহ প্রতিষ্ঠাতা সত্তেও তাকে তার প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে, তিনি বিভিন্ন Animation film বানান। সেগুলি জনপ্রিয় হওয়ার ফলে তাকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়।

সিলভেস্টর স্তলিন মুখ বাকা হওয়া সত্তেও তিনি অভিনেতা হতে চেয়েছিলেন। তিনি একটি সিনেমা লিখেন। এটি নিয়ে প্রায় ছয় বছর বিভিন্ন পরিচালকের পিছনে সময় ব্যয় করার পর সর্বশেষে সফল হন। পরবর্তীতে, তিনি এক সফল অভিনেতা হিসেবে আবির্ভূত হন।

উপরক্ত ব্যক্তিগণ বিভিন্ন লক্ষ্য নির্ধারন করার মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে। ইনশাল্লাহ, আমরাও লক্ষ্য নির্ধারণ করার মাধ্যমে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।

স্বপ্ন মাপকাঠির মাধ্যমে মেপে দেখা

একটি স্বপ্ন নির্দিষ্ট মাপকাঠির মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে। এটার যেমন একটি নির্দিষ্ট গুণ থাকবে ঠিক এটাকে কোন এক মাপকাঠির মাধ্যমে গণনা করা যেতে হবে। যেমন: আমি এক বছরে দশ লক্ষ অর্থ উপার্জন করতে চাই। তাহলে, এখানে আমার স্বপ্নকে অর্থ দ্বারা মাপা যাচ্ছে।

স্বপ্ন নির্দিষ্ট করার মাধ্যমে এটি আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়। আমরা এটাতে মনোযোগী হতে পারি।

পরিকল্পনা প্রণয়ন

লক্ষ্য পূরণের অন্যতম শর্ত হচ্ছে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। পরিকল্পনা ব্যতীত লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব। পরিকল্পনা দুই ধরনের। যথা:

  • সল্প মেয়াদী পরিকল্পনা
  • দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা

সপ্ন পূর্ণ করার সময় ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারন করতে হবে। সে লক্ষ্য অনুজাই পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সে অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে।

যদি কোন পরিকল্পনা ব্যর্থ হয় তাহলে অন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। তাহলে লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হবে।

প্রথমে, একটি দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা ঠিক করব। তারপর, সেটিকে অর্জন করার জন্য একে ছোট ছোট পরিকল্পনায় বিভক্ত করে সে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাব। তাহলে, পরিশেষে আমার লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।

পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্য সম্পাদন

পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বসে থাকলে চলবে না। সে অনুযায়ী কার্য সম্পাদন করতে হবে। কার্য সম্পাদন প্রক্রিয়াকে তিন ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা:

  • কে করবে?
  • কি করবে?
  • কখন করবে?

পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত রেখে যাওয়া

হিন্দিতে একটি প্রবাদ আছে যে আপনি পৃথিবীকে যা দিবেন সেটা ফেরত পাবেন। অতীতে অনেকে অনেক কাজ করে গেছেন। আজ আমরা তার সুফল পাচ্ছি। যেমন:

জন মেণ্ডেলা হচ্ছেন DNAএর জনক। আজ এটি ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন গবেষণা পরিচালনা করছি, প্রাণীর পরিচয় সনাক্ত করছি।

রাশিয়ান বিজ্ঞানী দিমিত্রী মেদলেফ রসায়নের পর্যায় সারণী প্রবর্তন করেছেন। এর মাধ্যমে ধাতু এবং অধাতুর যোজনী চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আজও এটি বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়ানো হয়।

থমাস আলভা এডিসন প্রায় দশ হাজার বার প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাল্ব আবিষ্কার করেন। এই বাল্ব আবিষ্কার না হলে আজও অন্ধকারে কাজ করতে হত।

অরবিল রাইট এবং উইবার রাইট ১৯০৫ সালে উড়োজাহাজ আবিষ্কার করেন। আজ আমরা বিমানের মাধ্যমে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াই। আজকাল, এটা দিয়ে যুদ্ধও করা হচ্ছে।

কার্ল বেঞ্চ ১৮৮৫ সালে আধুনিক বাতাস বিশিষ্ঠ চাকা আবিষ্কার করেন। আজ এটি গাড়ি, উড়োজাহাজসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা

আমরা যে কাজই করতে চাই আমাদের সবসময় আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে হবে। তা প্রথমবারই করি বা একাধিকবার আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা করতে হলে নিম্নোক্ত কাজ করতে হবে:

  • অন্যের সাথে তুলনা করা যাবে না
  • নিজের সেরাটা দিয়ে কাজ করে যেতে হবে
  • সবসময় ইতিবাচক বন্ধুদের সাথে থাকতে হবে
  • নেতিবাচক বিশ্বাসধারণকারি থেকে দূরে থাকতে হবে
  • সবসময় সুস্থ থাকার চেষ্টা করতে হবে
  • স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে হবে
  • নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে
  • নিয়মিত নিজেকে ইতিবাচক কথা বলতে হবে
  • ভয়কে জয় করতে হবে
  • যে কাজ করতে ভালো লাগে সে কাজ করুন
  • না বলতে শিখুন

আত্মবিশ্বাসী এবং আত্মবিশ্বাসবিহীন মানুষের মধ্যে পার্থক্য

আত্মবিশ্বাসী এবং আত্মবিশ্বাসবিহীন মানুষের মধ্যে পার্থক্য আছে। এই পার্থক্য নিম্নে তুলে ধরা হল:

আত্মবিশ্বাসী

আত্মবিশ্বাসহীন

অন্যের সফলতা উদযাপন করে

অন্যের সফলতা দেখে হিংসায় জ্বলতে থাকে এবং সমালোচনা করে

সে নিজে যা শিখে অন্যকে তা শিখাতে চায়

সব নিজে শিখে নিজের মধ্যে রাখতে চায়

উম্মুক্ত মানসিকতার লোক হয়

সংকুচিত মানসিকতার লোক হয়

আশাবাদী হয়

হতাশাবাদী হয়

ঝুঁকি নিতে আগ্রহী

ঝুকি নিতে চায় না

পরিবর্তনকে সানন্দে গ্রহণ করে

পরিবর্তনকে ভয় পায়

নিজের ভুল নিজে স্বীকার করে শুধড়ানোর চেষ্টা করে

নিজের ভুল লুকিয়ে রাখে ও স্বীকার করে না

প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখে

সর্বজান্তা ভাব নিয়ে থাকে এবং কিছু শিখতে চায় না

সব ভুলের দায়িত্ব নিজে নিবে

ভুলের দায়িত্ব অন্যের কাধে চাপাবে


জীবনে ব্যর্থতা

আমাদের জীবনে ব্যর্থ হওয়ার প্রয়োজন আছে। তাহলে আমরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারব এবং সে ভুল শুধরে জীবনে সফল হতে পারব। যেমন:

  • থমাস আলভা এডিসন বাল্ব আবিষ্কার করতে গিয়ে দশ হাজারবার ব্যর্থ হয়েছেন
  • আরিয়ানা হাপিংটং ৩৬ জন প্রকাশকের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন
  • বিল গেটস প্রতিষ্ঠান চালু করার পর প্রথম পর্যায়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন
  • ওয়াল ডিজনীকে তার প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল
  • মাইকেল জর্ডানকে তার বিদ্যালয়ের বাস্কেটবল দল থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল

উপরোক্ত ব্যক্তিগণ পরবর্তীতে তাদের জীবনে সফল হয়েছিলেন। আমরা এমন মানুষের জীবনী পড়ব যারা ব্যর্থ হয়েছিলেন। তাহলে তাদের ভুল থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারব এবং সে ভুল এড়িয়ে জীবনে সফল হতে পারব।

সমালোচনা সানন্দে গ্রহণ করা

সবসময় সমালোচনা গ্রহণ করতে হবে। কখনই সবাই নতুন কোন কিছু গ্রহণ করবে না। বরং, সমালোচনা করবে। সে সমালোচনায় ধৈর্য ধারণ করে নিজের কাজে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলে, সফল হতে পারবেন।

মাইকেল ফেলপস ২০০৪ সালে অলিম্পিকে সাতারে চারটি স্বর্ণপদক লাভ করেছিলেন। তখন তিনি ঘোষণা দেন যে তিনি ২০০৮ সালে আটটি স্বর্ণপদক জিতবেন। এটা শুনে অনেকে তার সমালোচনা করেন। কিন্তু, তিনি ঠিকই আটটি স্বর্ণপদক জিতেছিলেন।

ত্যাগ করা

যদি জীবনে সফল হতে চান তাহলে তার জন্য ত্যাগ করতে হবে। তা সময়, অর্থ অথবা অন্য যে কোন কিছু হতে পারে।

1960 সালে মুঘল ই আজম ব্যবসা সফল সিনেমা মুক্তি লাভ করেছিল। এ সিনেমা করতে গিয়ে নায়ককে প্রায় ২০ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল। যাতে সিনেমা অনেক বেশি বাস্তব মনে হয়। ফলে, সিনেমাটি একটি ব্যবসা সফল সিনেমায় রূপ নেয়।

লেগে থাকা

পৃথিবীতে সবচেয়ে সহজ কাজ হচ্ছে অজুহাত দেয়া এবং কাজ ছেড়ে দেয়া। আর, কঠিন হচ্ছে যত কষ্ট হউক কাজে লেগে থাকা। তাহলে, জীবনে সফল হওয়া যায়।

অতএব, কাজে অজুহাত দেয়া যাবে না।  সবসময় লেগে থাকতে হবে। তার পাশাপাশি, কাজের মধ্যে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ভুল সনাক্ত করে সেগুলি শুধরে নিতে হবে।


আশা করি, আমাদের আজকের ব্লগ আপনাদের ভাল লেগেছে। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। পরবর্তী ব্লগ সরাসরি আপনার ইমেইল ঠিকানাতে পেতে আমাদের Newsletter subscribe করুন। এর পাশাপাশি mawbiz.com.bd এর ব্লগ সেকশনে নজর রাখতে পারেন।

 

Zahirul Islam Khan কে আন্তরিক ধন্যবাদ!


Previous Post

Next Post

Related Posts

কসমেটিক্স ব্যবসা করতে হলে কি করতে হবে?

27-05-2024

How to

কসমেটিক্স ব্যবসা করতে হলে কি করতে হবে?

নিজের বাহ্যিক অঙ্গের যত্ন নিতে এবং নিজেকে স্মার্ট...

Read More
ইন্টারভিউতে সফলতার জন্য ১০টি টিপস

29-01-2024

How to

ইন্টারভিউতে সফলতার জন্য ১০টি টিপস

কর্মজীবনে সবচেয়ে জরুরী যেই কয়েকটি বিষয়, তার মধ্যে...

Read More

Trending

About MAWblog

MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.

We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.

Sign Up for Our Weekly Fresh Newsletter