Print World

How to

হয় শোষিত হন না হয় শ্রম আইন জানুন

Written by: Farhan Ishrak Fahim

18-04-2023

হয় শোষিত হন না হয় শ্রম আইন জানুন

আমরা অনেকেই শ্রম আইন জানি না। আবার, জানলেও সঠিকভাবে জানি না। ফলে, অনেকসময় মালিকসমাজ শ্রমিককে শোষণ করে থাকে। আপনারা এই ব্লগে শ্রম আইন সম্পর্কে জানতে পারবেন।

শ্রম আইন কি?

কর্মস্থলের পরিবেশ উন্নয়ন করার জন্য প্রত্যেক দেশে শ্রম আইন বিধান করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য থাকে কর্মচারীদের অধিকার নিশ্চিত করা এবং একটি সুস্থ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা। সে লক্ষে বাংলাদেশে ২০০৬ সালে বাংলাদেশ শ্রম আইন প্রণয়ন  করা হয় এবং পরবর্তীতে, ২০১৫ সালে শ্রম বিধিমালা প্রণয়ন করা হয় যা নিয়মিত সংশধন করা হয়।

১৯৭১ সালে দেশ সাধীন হওয়ার পর ১৯৯২ সালে ৩৮ সদস্যবিশিষ্ঠ জাতীয় শ্রম আইন কমিশন গঠন করা হয়। এটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হলে ১৯৯৮ সালে কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। পরবর্তীতে, বাংলাদেশ শ্রম আইন ১১ অক্টোবর, ২০০৬ তারিখে পাস করা হয়।

পরবর্তীতে, ২০০৯, ১০, ১৩, ১৮ এবং ২২ সালে শ্রম আইন সংশধন করা হয়। ২০১৫ সালে শ্রম বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়।

শ্রম আইনে নিয়ম-কানুন সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়। বিধিমালায় সেই নিয়ম-কানুন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা হয়।যেমন: আইনে বিভিন্ন কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তূ, সে কমিটিতে কত জন সদস্য থাকবে, কিভাবে পরিচালিত হবে তা উল্লেখ করা হয় নাই। বিধিমালাতে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।

শ্রম আইনের উদ্দেশ্য

শ্রম আইনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করা। এছাড়া,আরও কিছু উদ্দেশ্য আছে। যেমন:

  • মালিক এবং শ্রমিকের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন
  • চাকরি নিরাপত্তা প্রদান
  • মালিক এবং কর্মচারীর ক্ষমতা সামঞ্জস্য আনয়ন
  • কর্মস্থলের পরিবেশ উন্নয়ন
  • মজুরি নিশ্চিত করা
  • কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট করা
  • স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান করা
  • সামাজিক সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা প্রদান
  • কর্মস্থল নিরাপদ করা
  • শিশুশ্রম নিষিদ্ধ এবং নিয়ন্ত্রণ করা
  • ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার অনুমতি প্রদান

চাকরি থেকে অব্যাহতি

একটি প্রতিষ্ঠানে শ্রমিককে বিভিন্ন কারণে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। যেমন:

  • Discharge: শারীরিক-মানসিক কারণে কেউ দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। যদি কেউ দীর্ঘ সময় অসুস্থ থাকে তাহলে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া যায়। এই সময়কাল সর্বোচ্চ ২৪০ দিন হতে পারে। এছাড়া, কেউ কোন দুর্ঘটনায় অঙ্গ হারিয়ে পঙ্গু হলে তাকেও অব্যাহতি দেয়া যায়। তবে, সেক ক্ষেত্রে নিবন্ধিত চিকিৎসকের কাছ থেকে অক্ষমতার প্রত্যায়ন পত্র পেতে হবে।
  • Dismiss: যদি কেউ কর্মস্থলে অসদাচরণ করে তাহলে তাকে শাস্তি স্বরূপ চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা যায়। একে Dismiss বলে। এছাড়া, কেউ কোন ফৌজদারী অপরাধে শাস্তি পেয়ে থাকলে তাকেও Dismiss করা যায়।
  • Retrenchment: অনেক সময় প্রতিষ্ঠানের একাধিক কারখানা থাকে। কোন একটি কোন কারণে বন্ধ হয়ে গেলে অথবা ব্যয় বহনে অক্ষম হলে সেখানকার কর্মীদেরকে ছাটাই করা হয়। একে Retrenchment বলে। কর্মী ছাটাই করার সময় এক মাসের বেতন দিয়ে ছাটাই করা হয়।
  • Layoff: যদি কোন কারণে সাময়িক সময়ের জন্য উত্পাদন বন্ধ হয়ে যায় তখন মালিক চাইলে Layoff করতে পারে। Layoff করলে ৪৫ দিনের মূল বেতন এবং বাড়ি ভাড়া দিতে হয়। যদি, ৪৫ দিনের বেশি হয় তাহলে ১৫ দিন মূল বেতনের এক-চতুর্থাংশ এবং বাড়ি ভাড়া দিতে হয়। তার বেশি হলে ছাটাই করতে পারে। ছাটাই করার তথ্য Labour inspection office এ দিতে হয়। পরে, কর্মী নিয়োগ করলে ছাটাইকৃত কর্মীদের মধ্য হতে নিতে হয়।
  • Terminate: অনেক সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিনা কারণে কর্মীকে অব্যাহতি দিয়ে থাকে। এর পিছনে মূলত অর্থ সংকট মূল কারণ হয়ে থাকে। এছাড়া, অন্য কারণেঅ হতে পারে। অনেক সময় কর্মী নিজেই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দেয়। প্রতিষ্ঠান প্রত্যাহার করলে চার মাসের বেতন দিতে হয়।

শ্রমিকের ধরণ

প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে নানা ধাপে নানা পর্যায়ে কর্মী নিয়োগ করা হয়। যেমন:

  • শিক্ষানুবিস: অনেক সময় অনেকে হয় ত মাত্র লেখাপড়া শেষ করে বের হয়েছে কিন্তু কোন অভিজ্ঞতা নেই। তখন, তারা শিক্ষানবিশ হিসেবে নিযুক্ত হতে পারে। তারা তিন বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। তবে, প্রতিষ্ঠান যে কোন সময় তাদেরকে নোটিশ দিয়ে ছাটাই করতে পারে।
  • বদলি শ্রমিক: অনেক সময় স্থায়ী শ্রমিক বিভিন্ন কারণে অনুপস্থিত থাকে। তখন তার বদলে সাময়িক সময়ের জন্য অন্য শ্রমিক নিযুক্ত করা হয়। তাকে বদলি শ্রমিক বলে। সাধারনত, এধরনের শ্রমিক দুই-এক দিনে সর্বোচ্চ পনের দিনের জন্য থাকে।
  • Casual worker: অনেক সময় এমন কিছু কর্মী নেয়া হয় যাদেরকে প্রজেক্টভেদে সাময়িক সময়ের জন্য নেয়া হয় এবং কোন চুক্তি করা হয় না যে সে কতদিন থাকবে। তাদেরকে Casual worker বলে। যেমন: Freelance লেখক।
  • Temporary worker: Temporary worker ও সাময়িক সময়ের জন্য নিয়োগ করা হয়। তবে, এক্ষেত্রে সময় কাল কিছুটা বেশি হয় এবং চুক্তি করা হয়। যেমন: কোন প্রজেক্ট ছয় মাস চলবে। তখন সে প্রজেক্টের জন্য সাময়িক সময়ের জন্য চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করা হয়।
  • Provision: কোন কর্মীকে স্থায়ী নিয়োগ করার আগে পরীক্ষামূলকভাবে চুক্তির ভিত্তিতে কিছুদিন রাখা হয়। যদি তার কাজ সন্তোষজনক হয় তাহলে তাকে স্থায়ী নিয়োগ করা হয়। নতুবা, অব্যাহতি দেয়া হয়। যদি কেরানি পদ হয় তাহলে Provision কাল ছয় মাস হয়। অন্যান্য পদে এটি সর্বনিম্ন তিন মাস হয়ে থাকে। তবে, প্রতিষ্ঠান চাইলে সর্বোচ্চ এক বার আরও তিন মাসের জন্য Provision পদে রাখা হয়।
  • Seasonal worker: কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলো বছরের কিছু মাস চলে। বাকির সময় বন্ধ থাকে। সেসব প্রতিষ্ঠানে যে কর্মী নিয়োগ করা হয় তাকে Seasonal worker বলে।

শ্রমিকের অসদাচরণ

এখন আসি অসদাচরণ নিয়ে আলোচনায়। একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী নানাভাবে অসদাচরণ করতে পারে। শ্রম আইনে এ বিষয়ে ২৩ ধারায় বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন:

  • উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কোন যুক্তিসংগত আদেশ ইচ্ছাকৃত না মানা
  • চুরি করা
  • সম্পত্তি আত্মসাৎ করা
  • প্রতারণা অথবা অন্য অসততার আশ্রয় নেয়া
  • ঘুষ গ্রহণ করা
  • অভ্যাসগত অনুপস্থিতি অথবা বিনা ছুটিতে দশ দিনের অধিক অনুপস্থিত থাকা
  • অভ্যাসগত বিলম্বে উপস্থিত হওয়া
  • প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোন আইন-কানুন এবং নিয়ম অভ্যাসগত লংঘন করা
  • প্রতিষ্ঠানে ঊশৃংখল বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা মূলক কার্যক্রম, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, মালামাল  ইচ্ছামূলক ক্ষতিসাধন
  • কাজে অভ্যাসগত গাফিলতি
  • প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত চাকরি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার অভ্যাসগত লংঘন
  • মালিকের Official record রদবদল, জালকরণ, অন্যায়ভাবে পরিবর্তন, ক্ষতিসাধন করা ইত্যাদি

কর্মচারী অসদাচরণ করলে তাকে সৌকজ করতে হয়। তিনি যথাযথ কারণ উল্লেখ করতে ব্যর্থ হলে অথবা তার অপরাধ প্রমাণিত হলে শাস্তি প্রদান করা যায়। অপরাধ ভেদে শাস্তি ভিন্ন হতে পারে। যেমন: কেউ কোন ফৌজদারী অপরাধে অপরাধী হিসেবে প্রমাণিত হলে তাকে বরখাস্ত করা যায়

  • বরখাস্তকৃত শ্রমিক WPPF পায় না
  • Gratuity ভাতা পায় না
  • চুরি এবং দাঙ্গা-হাঙ্গামার কারণে বরখাস্ত করলে কোন ক্ষতিপূরণ বা অন্য কোন সেবা ভাতা পায় না
  • ক্ষেত্র বিশেষে এক বছর পদোন্নতি অথবা মজুরি বৃদ্ধি পাবে না
  • মালিক চাইলে সর্বোচ্চ মূল বেতনের এক-দশমাংশ জরিমানা করতে পারে
  • তবে, প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করে থাকলে ১২৭ ধারার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ নিতে পারবে
  • বিনা পারিশ্রমিকে সাত দিনের জন্য সাময়িক বরখাস্ত
  • ভৎসনা করতে পারবে

সর্বশেষে, বলতে চাই যে কোন শ্রমিককে এক অপরাধের জন্য একাধিক শাস্তি দেয়া যাবে না। যদি জরিমানা নেয়ার পরিকল্পনা থাকে তাহলে শ্রম আইনের ১২৭ ধারায় সৌকজ করতে হবে। আর যদি সর্বচ্চ তিন দিনের বেতন কর্তন অথবা বরখাস্ত করার পরিকল্পনা থাকে তাহলে শ্রম আইনের ২৩ ধারায় সৌকজ করতে হবে।

সৌকজ করার নিয়ম

অপরাধ সাপেক্ষে show cause করার কিছু নিয়ম আছে। শ্রম আইনের ২৪ ধারায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এ নিয়মাবলী না মেনে show cause করা যাবে না। নিয়মাবলী নিম্নরূপ:

  • লিখিত অভিযোগ করতে হবে
  • অপরাধীকে লিখিত অভিযোগের একটি কপি দিতে হবে
  • অভিযোগের জবাব দেয়ার জন্য অন্তত সাত দিন সময় দিতে হবে
  • শুনানির সুযোগ দিতে হবে
  • শুনানিতে অপরাধী সাক্ষী হাজির করতে পারবে
  • প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে পারবে
  • মালিক পক্ষ এবং শ্রমিক পক্ষের সমসংখক প্রতিনিধির সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে
  • সৌকজ করার ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে
  • কমিটিতে সর্বোচ্চ ছয় জন সদস্য থাকবে এবং সর্বনিম্ন দুই জন সদস্য থাকবে
  • শ্রমিকের কাছে প্রতিনিধি চাওয়ার পর না পেলে মালিক এক তরফা তদন্ত পরিচালনা করতে পারবে
  • তদন্তের নোটিশ দিতে হবে
  • উভয় পক্ষের তদন্তে সহায়তাকারি প্রতিনিধি থাকবে
  • তদন্ত চলাকালীন অপরাধী শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্ত করা যাবে
  • সাময়িক বরখাস্তকালে শ্রমিককে মূল বেতনের অর্ধেক এবং বাড়ি ভাড়া দিতে হবে
  • নির্দোষ প্রমাণিত হলে মূল বেতনের বাকি অর্ধেক দিতে হবে
  • সাক্ষীকে যে কোন পক্ষ এবং সে পক্ষের সহায়তাকারী জেরা করতে পারবে
  • উর্দ্ধতন নথিপত্র, অপরাধের গুরুত্ব এবং অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে শাস্তি প্রদান করতে হবে
  • বরখাস্ত করতে হলে মালিক অথবা ব্যবস্থাপক দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে

কর্মী অপসারণ

মালিক চাইলে ২৬ ধারায় যে কোন সময় কর্মী অপসারণ করতে পারে। সেক্ষেত্রে স্থায়ী মাসিক বেতনের ক্ষেত্রে ১২০ দিনের এবং অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৬০ দিনের আগে নোটিশ দিবেন। কেউ চাইলে উক্ত দিনের বেতন দিয়ে তত্ক্ষণাক অপসারণ করতে পারবেন।

অপরদিকে, অস্থায়ী শ্রমিকের ক্ষেত্রে মাসিক বেতনপ্রাপ্ত শ্রমিককে ৩০ দিনের এবং অন্য শ্রমিককে ১৪ দিন আগে নোটিশ অথবা উক্ত দিনের বেতন দিয়ে প্রত্যাহার করতে পারবেন। যদি স্থায়ী শ্রমিক প্রত্যাহার করেন তাহলে তার যত বছর কাজ করেছেন তত বছরের হিসেবে এক মাসের মজুরি অথবা Gratuity যা বেশি হয় সে ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে। এটি মূল বেতনের বাইরে অতিরিক্ত প্রদান করবে।

শ্রমিক নিজে অব্যাহতি নিয়ে থাকলে করণীয়

শ্রম আইনে যেমন মালিক কিভাবে শ্রমিক প্রত্যাহার করবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে ঠিক তেমনি ২৭ ধারায় শ্রমিক কিভাবে ইস্তফা নিবে সেটাও বলা হয়েছে। মনে রাখতে হবে যে কেউ ইস্তফা নিয়ে থাকলে তাকে কাজ করার জন্য বাধ্য করা যাবে না। নিম্নরূপ পন্থায় নোটিশ দিয়ে একজন কর্মী ইস্তফা নিতে পারবে:

  • স্থায়ী বেতনভুক্ত কর্মচারী ৬০ দিন পূর্বে নোটিশ দিবে
  • অস্থায়ী বেতনভুক্ত কর্মচারী ৩০ দিন পূর্বে নোটিশ দিবে
  • অন্যান্য কর্মচারী ১৪ দিন পূর্বে নোটিশ দিবে
  • তবে, কেউ যদি নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ ইস্তফা নেয় তাহলে তাকে মালিককে উক্ত দিনের মজুরি মালিককে দিতে হবে।
  • যদি স্থায়ী কর্মকর্তা ইস্তফা নেয় তাহলে নিম্নরূপ নিয়মে তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যেমন:
  • যদি ৫ বছরের অধিক এবং ১০ বছরের কম চাকরি করে তাহলে প্রতি বছরের হিসেবে ১৪ দিন হারে মজুরি পাবে
  • ১০ বছর বা তার অধিক হলে ৩০ দিন হারে মজুরি পাবে
  • Gratuity ক্ষতিপূরণের বেশি হলে তা পাবে


এবার আসি অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আলোচনাতে। যদি শ্রমিক মনে করে যে তার প্রতি অবিচার হয়েছে তাহলে সে অভিযোগ করতে পারবে। তিনি ছাটাই, বরখাস্ত অথবা অন্য কোন কারণে অভিযোগ থাকলে মালিকের কাছে লিখিত জানাবেন। মালিক সে বিষয়ে  ত্রিশ দিনের মধ্যে তদন্ত করে শ্রমিককে তাদের সিদ্ধান্ত লিখিত জানাবেন।

যদি মালিক ত্রিশ দিনের মধ্যে কিছু না জানায় অথবা তাদের সিদ্ধান্ত শ্রমিকের কাছে সন্তোষজনক না হলে পরবর্তী ত্রিশ দিনের মধ্যে সম আদালতে অভিযোগ করতে পারবে। শ্রম আদালত নোটিশ প্রদান করে উভয়ের যুক্তি শুনবেন। তারপর, বিচারক যুক্তিযুক্ত রায় দিবে। শ্রম আদালতের রায় সন্তোষজনক না হলে উভয় পক্ষ আপিল করতে পারবে।

শ্রম আদালতে নিম্নোক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ করা যাবে। যেমন:

  • ট্রেড ইউনিয়নের সাথে যুক্ত কোন সদস্যকে উদ্দেশ্যপ্রণদিত প্রত্যাহার
  • আপস-মীমাংসার মাধ্যমে মজুরি সহ অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধ
  • মালিকের কাছে অভিযোগ করার পর সন্তোষজনক সমাধান পেতে ব্যর্থ হলে
  • মজুরি কর্তন এবং প্রদান সংক্রান্ত অসন্তোষ
  • দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির বিবাদ

নারীর প্রসূতিকালে করণীয়

একজন নারীর জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে সন্তান প্রসব। এজন্য তারা একটি নিদিষ্ট সময়ের জন্য ছুটি এবং অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকে। একে Maternity leave or allowance বলে।

তবে, কিছু শর্ত আছে যার ভিত্তিতে একজন নারী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকে। যেমন:

  • সন্তান প্রসবের পূর্বে ছয় মাস কাজ করতে হবে
  • দুই বা ততোধিক জীবিত সন্তান থাকলে এই সুবিধা পাবে না
  • যদি একজন সন্তান থাকে বা সন্তান না থাকে তাহলে পাবে


মাতৃত্বকালীন ছুটি পেতে হলে সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য আট সপ্তাহ আগে নিবন্ধিত ডাক্তারের প্রত্যায়ন পত্র জমা দিতে হবে। সে কাগজ তিন কার্যদিবসের মধ্যে যাচাই বাছাই করে ছুটি এবং ভাতা প্রদান করতে হবে। সাধারনত, একজন নারী ১৬ সপ্তাহের ছুটি পেয়ে থাকে। সন্তান প্রসবের তিন মাসের মধ্যে কোন প্রমাণ জমা না দিলে এই সুবিধা পাবেন না।

একজন প্রসুতি নারী অনেক সময় অতিরিক্ত চার মাসের ছুটি পেয়ে থাকে অথবা সে নিজে নেয়। এই চার মাসের বেতন সে পায়। তার পাশাপাশি অতিরিক্ত ১৬ সপ্তাহের জন্য অতিরিক্ত ভাতা পেয়ে থাকে।

অতিরিক্ত ১৬ সপ্তাহের ভাতা নির্ধারণ করার একটি নিয়ম আছে। সেটি হচ্ছে প্রসুতি শেষ মাসে যত টাকা বেতন পায় তাকে ২৬ দিয়ে বাগ করলে যে পরিমাণ অর্থ আসে তাকে এক দিনের মজুরি ধরা হয়। সে হিসাব করে ১৬ সপ্তাহের অতিরিক্ত ভাতা দেয়া হয়।

২০২২ সালে শ্রম আইনে নতুন বিধান যুক্ত করা হয়। এটি হচ্ছে গর্ভপাত আইন। কার দুর্ভাগ্যক্রমে গর্ভপাত ঘটলে তাকে চার সপ্তাহের ছুটি দিতে হয়।

শ্রমিকদের কল্যাণ

শ্রম আইনে শ্রমিকদের কল্যাণে কিছু আইন আছে। যেমন:

  • ১৫০ জন শ্রমিকের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম এর একটি আলমারি থাকতে হবে
  • ৩০০ বা ততোধিক শ্রমিক থাকলে ডিসপেনসারির একটি কক্ষ থাকবে এবং নির্ধারিত ডাক্তার ও নার্স এর দায়িত্বে থাকবে
  • ৩০০০ বা ততোধিক শ্রমিকের জন্য যে ডিসপেনসারী থাকবে তার দায়িত্বে দুই জন নিবন্ধিত ডাক্তার এবং নার্স বা সহায়তাকারী থাকবে
  • ৫০০০ বা ততোধিক শ্রমিকের জন্য একটি স্থায়ী চিকিত্সাকেন্দ্র থাকবে
  • ৫০০ শ্রমিক থাকলে একজন কল্যাণ কর্মকর্তা থাকবে
  • ২৫ জন শ্রমিক থাকলে খাবার কক্ষ থাকতে হবে
  • ১০০ জন শ্রমিক থাকলে একটি ক্যান্টিন থাকতে হবে  এবং এটি পরিচালনার জন্য একটি কমিটি থাকবে
  • ৪০ বা ততোধিক মহিলা শ্রমিক থাকলে ছয় বছরের কম শিশুদের জন্য একটি শিশু ঘর থাকতে হবে

নিরাপত্তা কমিটি

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি কমিটি থাকে। সে কমিটির আকার নিম্নে উল্লেখ করা হল:

  • ৫০ জন বা ততোধিক শ্রমিক থাকলে একটি নিরাপত্তা কমিটি থাকতে হবে
  • কমিটিতে ছয় জনের কম বা বার জনের বেশি সদস্য থাকবে না
  • মালিক এবং শ্রমিকদের সমান সংখ্যক প্রতিনিধি থাকবে
  • কমিটিতে একজন সভাপতি, একজন সহসভাপতি এবং একজন সদস্য সচিব থাকবেন
  • কারখানায় একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা থাকলে তিনি সদস্য সচিব হবেন
  • কমিটির মেয়াদ হবে দুই বছর

ক্যান্টিন

আমরা আগেই বলেছি যে ১০০ জন বা ততোধিক শ্রমিক থাকলে ক্যান্টিন থাকতে হয়। সে ক্যান্টিন পরিচালনা করার জন্য কমিটি থাকে। তার গঠন নিম্নরূপ:

  • একজন কল্যাণ কর্মকর্তা ক্যান্টিন তত্বাবধায়ন করবেন
  • কমিটির শ্রমিক সদস্য এবং মালিক পক্ষের সদস্য দুই জনের কম এবং পাঁচ জনের বেশি হবে না

কর্মঘণ্টা

প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের একটি কর্মঘণ্টা থাকে। অনেকে এর বাইরেও শ্রমিককে কাজ করতে বাধ্য করে। শ্রম আইনে বিস্তারিত বলা হয়েছে যে সাধারণ কর্মঘণ্টা কতক্ষন হবে:

  • সাধারণ শিফট এবং একাধিক শিফটে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে সাধারণ কর্মঘন্টা আহার এবং বিশ্রাম ব্যতীত আট ঘণ্টা হবে
  • পাচ ঘণ্টার অধিক হলে আধ ঘণ্টা এবং ছয় ঘণ্টার বেশি হলে এক ঘণ্টার বিরতি দিতে হবে
  • বিশ্রাম বিরতি মূল কর্মঘন্টার সাথে যুক্ত হবে না
  • শ্রমিক চাইলে সাপ্তাহিক ছুটির সাথে উৎসব ছুটি ভোগ করতে পারবে
  • এরূপ ঘটলে অধিককাল ভাতা পাবেন না
  • দশ দিনের অধিক সাপ্তাহিক ছুটি না দিয়ে কাজ করানো যাবে না
  • সাপ্তাহিক ছুটি না দিলে পরবর্তী তিন কার্য দিবসের মধ্যে সে ছুটি দিতে হবে
  • কর্মঘণ্টা আহার এবং বিশ্রাম ব্যতীত দশ ঘণ্টার অধিক কাজ করানো যাবে না
  • দিনে ২ ঘণ্টার বেশি অতিরিক্ত কাজ করানো যাবে না
  • সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে না
  • বছরে ৫৬ ঘণ্টার বেশি অতিরিক্ত কাজ করানো যাবে না
  • নারী কর্মীকে রাত দশটা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত কাজ করানো যাবে না
  • কর্মী আধ ঘণ্টার পর আসলে উক্ত শ্রমিককে নিয়োগকর্তা সেদিন নিয়োগ করতে অস্বীকার করতে পারবে
  • নৈমিত্তিক ছুটি বছরে ১০ দিন থাকবে
  • অসুস্থগত ছুটি বছরে ১৪ দিন থাকবে
  • শ্রমিক চাইলে নৈমিত্তিক এবং অসুস্থ গত ছুটির পূর্বে অথবা পরে সাপ্তাহিক এবং উৎসব ছুটি যুক্ত করতে পারবে

বার্ষিক ছুটি

বার্ষিক ছুটি গননা করতে হলে শুধুমাত্র কর্মদিবশে কতদিন ছুটি নিয়েছে সে হিসেবে হিসেব করতে হবে

একজন শ্রমিক এক বছরে কতদিন কাজ করেছে তাকে ১৮ দিয়ে ভাগ করে বার্ষিক ছুটি নির্ধারন করা যায়

মজুরিসহ একজন শ্রমিক বছরে ৪০ দিন বার্ষিক ছুটি ভোগ করতে পারে

অধিককাল ভাতা মূল মজুরির অর্ধেক হয়ে থাকে

উত্সব ভাতা

অনেক প্রতিষ্ঠানে উৎসব ভাতা দেয়া হয়। এর কিছু নিয়মকানুন আছে। যেমন:

  • কর্মীকে অন্ততপক্ষে এক বছর কাজ করতে হবে
  • উৎসব ভাতা মূল মজুরির অধিক হবে না

মজুরি প্রদান

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে মজুরি দেয়া হয়। এর কিছু নিয়মকানুন আছে। যেমন:

  • মাসিক বেতন পরবর্তী মাসের সাত কর্মদিবসের মধ্যে দিতে হবে
  • দৈনিক বা সাপ্তাহিক মজুরি ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিক পরবর্তী দিনের অথবা সপ্তাহের সাত কর্ম দিবসের মধ্যে মজুরি পাবে
  • কেউ অবসর গ্রহণ করলে বা তাকে ছাঁটাই করলে তার সকল  পাওনা ত্রিশ কর্মদিবসের মধ্যে দিতে হবে
  • শ্রম আইনে বিস্তারিত বলা হয়েছে যে কখন মজুরি কর্তন করা যাবে। এর বাইরে কারো মজুরি কর্তন করা যাবে না। যেমন:
  • ২৩ ধারা অনুযায়ী অসদাচরণ করলে সর্বোচ্চ তিন দিনের মজুরি কর্তন করতে পারবে
  • ছুটি ব্যতীত সম্পূর্ণ দিন অনুপস্থিত থাকলে মজুরি কর্তন করা যাবে
  • যদি একটি নির্দিষ্ট সময় অনুপস্তিত থাকে তাহলে সে সময়ের মজুরি কর্তন করে বাকি সময়ের জন্য কাজ করার অনুমতি প্রদান
  • কোন কর্মীর হেফাজতে মালিকের মালামাল ক্ষতিসাধন করলে অথবা যে হিসাব দিতে দায়ী সে হিসাব দিতে ব্যর্থ হলে তার মজুরি কর্তন করা যাবে
  • ন্যায়বিচার ব্যতীত মজুরি কর্তন করা যাবে না
  • শিশু শ্রমিকের বেতন কোনোক্রমে কর্তন করা যাবে না
  • কিস্তিতে অথবা দন্ড আরোপের ৬০ দিন পর জরিমানা নেয়া যাবে না

ট্রেড ইউনিয়ন

অনেক প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকগণ নিজেদের অধিকার রক্ষা করার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করে থাকে। এটি গঠন এবং পরিচালনা করার কিছু নিয়ম আইনে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন:

  • নিরাপত্তা কর্মী, অগ্নিনির্বাপক কর্মী এবং গোপনীয়তা রক্ষায় সহায়তাকারী ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হতে পারবে না
  • একটি প্রতিষ্ঠানের ২০% শ্রমিক একত্রিত হয়ে এই ইউনিয়ন গঠন করতে পারবে
  • তারা মালিককে না  জানিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করবে
  • মন্ত্রণালয় ৫৫ দিনের মধ্যে যাচাই বাছাই করে অনুমতি প্রদান করবে
  • একটি প্রতিষ্ঠানে সর্বচ্চ তিনটি ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করা যায়
  • মোট শ্রমিকের ২০% শ্রমিক নারী হলে নির্বাহী কমিটির ১০% সদস্য নারী হতে হবে
  • নির্বাহী কমিটির সর্বনিম্ন সদস্য ৫ জন এবং সর্বোচ্চ ৩৫ জন হয়ে থাকে
  • নির্বাহী কমিটি তিন মাসে একবার এবং সাধারণ সদস্য বছরে এক বার সভার আয়োজন করবে
  • প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে বা প্রতিষ্ঠানের এলাকার ২০০ মিটারের মধ্যে ট্রেড ইউনিয়নের অফিস রাখা যাবে না
  • রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প সেক্টরের ট্রেড ইউনিয়নের নির্বাহী কমিটির ১০% সদস্য প্রতিষ্ঠানে বাইরে থেকে নেয়া যাবে
  • ট্রেড ইউনিয়নের সম্পাদক, সহসম্পাদকসহ কোন কর্মকর্তাকে তার অনুমতি ব্যতিরেকে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বদলি করা যাবে না
  • পাচটি ট্রেড ইউনিয়ন একত্রিত হয়ে একটি ট্রেড ফেডারেশন গঠন করতে পারবে
  • বিষ্টি ট্রেড ইউনিয়ন একত্রিত হয়ে জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন গঠন করতে পারবে
  • দশটি জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন একত্রিত হয়ে জাতীয়ভিত্তিক কনফেডারেশন গঠন করতে পারবে

ট্রেড ইউনিয়নের ক্ষমতা

ট্রেড ইউনিয়নের সদস্যের প্রতি মালিক নিম্নোক্ত অসদাচরণ করতে পারবেন না। তাহলে, এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। যেমন:

  • ট্রেড ইউনিয়ন পরিচালনায় বাধা দেয়া যাবে না
  • ইউনিয়নের সদস্য হলে বা না হলে চাকরিতে নিয়োগে বাধা প্রদান, পদন্নতিতে বৈষম্য, বরখাস্ত বা ভীতি প্রদশন করা যাবে না
  • নির্বাচনে বাধা বা প্রভাব বিস্তার করা যাবে না
  • বৈধ ধর্মঘট চলাকালে শ্রমিক নিয়োগ করতে পারবে না
  • সালিশের  অনুমতি সাপেক্ষে সীমিত সংখক অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ করতে পারবে
  • কমিটির সুপারিশ ইচ্ছাকৃত পালনে ব্যর্থ হতে পারবে না
  • বেআইনি Lockout করতে পারবে না

ট্রেড ইউনিয়নের সীমারেখা

ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য মানে সে যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে না। কেউ আইনের উর্দ্ধে নয়। শ্রমিকের নিম্নোক্ত কাজ অসদাচরণ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে:

  • মালিকের বিনা অনুমতিতে কর্মঘন্টার সময় ট্রেড ইউনিয়নের কোন কাজ করতে পারবে না
  • ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার বা না হওয়ার জন্য ভীতি  প্রদশন করতে পারবে না
  • চাঁদা প্রদানে বা না প্রদানে বাধ্য করা যাবে না
  • বেআইনী ধর্মঘট করতে পারবে না
  • ইচ্ছাকৃত ধীরে কাজ করবে না
  • সম্পত্তির ধ্বংসসাধন করতে পারবে না

যৌথ দর কষাকষি প্রতিনিধি

ট্রেড ইউনিয়ন তার ক্ষমতা প্রয়োগ করার জন্য যৌথ দর কষাকষি প্রতিনিধি নির্বাচন করে থাকে। এর গঠন নিম্নরূপ:

  • নির্বাচনের মাধ্যমে যৌথ দর কষাকষি প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়
  • কোন প্রতিষ্ঠানে একটি ট্রেড ইউনিয়ন থাকলে তারাই দর কষাকষি করবে
  • বদলি এবং সাময়িক শ্রমিক ব্যতীত যে শ্রমিক অন্তত তিন মাসে কাজে নিয়োজিত আছেন তিনি ভোটার হতে পারবেন
  • যৌথ দর কষাকষি প্রতিনিধির মেয়াদ হবে দুই বছর
  • নির্বাচনে কোন ইউনিয়ন ১০%এর কম ভোট পেলে তার নিবন্ধন বাতিল হবে

২০২২ সালের সংশধনী

২০২২ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর শ্রম আইন সংশোধন করা হয়। এতে ১০১টি সংশোধনী যুক্ত করা হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু সংশোধনী নিম্নে উল্লেখ করা হল:

  • ঠিকাদার নিযুক্ত শ্রমিকদের মূল মজুরির ৫০% নিশ্চিত করতে হয়
  • স্থায়ী জনবল ঠিকাদারের মাধ্যমে নিযুক্ত করা যাবে না
  • পরিচয় পত্র, নিয়োগ পত্র বাংলায় প্রদান করতে হবে
  • ডিজিটাল পদ্ধতিতে রেজিস্টার সংরক্ষণ করলে প্রয়োজন অনুসারে মহাপরিচালক এবং মহাপরিদর্শককে প্রদান করতে হবে
  • কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া থেকে তদন্ত কাল গননা হবে
  • তদন্ত চলাকালে শ্রমিক প্রতিনিধির নাম উল্লেখ না করলে মালিক পক্ষ যৌথ দর কষাকষি বিভাগের কাছে প্রতিনিধি মনয়নের জন্য অনুরোধ করতে পারবে
  • মহাপরিদর্শক কর্তৃক ঘোষিত কমিটিকে প্রতি বছর অন্তত একবার কর্মস্থলের ঝুঁকি নিরূপণ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার উপ মহাপরিদর্শককে জানাবেন
  • রাতের শিফটে স্বাস্থ্যকর্মী থাকতে হবে
  • যেখানে পাঁচ হাজারের অধিক শ্রমিক আছে সেখানে নারী কর্মীকে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দিতে হবে
  • উত্সব ছুটির দিন কাজ কড়ালে দুই দিনের মূল মজুরি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং এক দিন ছুটি দিতে হবে
  • Increment নূন্যতম মূল বেতনের ৫% দিতে হবে

আশা করি, শ্রম আইন নিয়ে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন। আমাদের পরবর্তী ব্লগ আপনার ইমেইল ঠিকানাতে পেতে Newsletter subscribe করুন।


Rashedul Hasnat কে আন্তরিক ধন্যবাদ!

Previous Post

Next Post

Related Posts

কসমেটিক্স ব্যবসা করতে হলে কি করতে হবে?

27-05-2024

How to

কসমেটিক্স ব্যবসা করতে হলে কি করতে হবে?

নিজের বাহ্যিক অঙ্গের যত্ন নিতে এবং নিজেকে স্মার্ট...

Read More
ইন্টারভিউতে সফলতার জন্য ১০টি টিপস

29-01-2024

How to

ইন্টারভিউতে সফলতার জন্য ১০টি টিপস

কর্মজীবনে সবচেয়ে জরুরী যেই কয়েকটি বিষয়, তার মধ্যে...

Read More

Trending

About MAWblog

MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.

We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.

Sign Up for Our Weekly Fresh Newsletter