International

মধ্য প্রাচ্যে ইরানের গুরুত্বঃ যে সকল অর্থনৈতিক ও সামরিক বাধা পেরোতে হয়েছে ইরানকে

Written by: এস এম নাহিয়ান

16-10-2024

মধ্য প্রাচ্যে ইরানের গুরুত্বঃ যে সকল অর্থনৈতিক ও সামরিক বাধা পেরোতে হয়েছে ইরানকে


গত এক বছর ধরে গাজাতে চলা ইজরায়েলের নৃশংস আক্রমণ যেন বিশ্ববাসীর চোখ কিছুটা হলেও উন্মুক্ত করেছে। উঠে এসেছে মধ্য প্রাচ্যের সমস্যার গভীরতা। আর এর মাঝেই চলছে ঘাত প্রতিঘাত। গাজার পাশাপাশি এখন রক্তাক্ত লেবানন। এমতাবস্থায় মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়েছে ইরান। কিন্তু আক্রমণ চালানোর এই যে সক্ষমতা, তা অর্জন করতে ইরানকে গুণতে হয়েছে বড় মাশুল। পশ্চিমা দেশগুলোর মতো মসৃণ উপায়ে সামরিক শক্তি বৃদ্ধির বিলাসিতা ছিল না ইরানের। পদে পদে পোহাতে হয়েছে কূটনৈতিক চাপ ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবরোধ। আর আজকের লেখা ইরানের সেই সক্ষমতা অর্জনের পথকে নিয়েই। মধ্য প্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্য রক্ষায় কেন ইরানের অবস্থান এত গুরুত্বপূর্ণ, আর ইরানকে ঠেকাতে কি কি করেছে ইজরায়েল ও মিত্র রাষ্ট্রগুলো, তার একটি সামগ্রিক প্রতিফলন আজকের লেখাটি।  

মধ্য প্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্যে রক্ষায় ইরানের গুরুত্ব 

মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলোর মধ্যে পশ্চিমা দেশেগুলোর প্রভাব মুক্ত একমাত্র দেশ এখন ইরান। তবে সরাসরি প্রভাব থেকে মুক্ত হলেও পরোক্ষ প্রভাব ঠিকই আছে। কিন্তু আশে পাশের দেশ গুলোর তুলনায় ইরানের অবস্থান ইজরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্রদের অনেকটাই চাপের মুখে রাখে। সহজ ভাষায়, মধ্য প্রাচ্যে ইজরায়েলের জন্য সবচেয়ে বড় আশংকা এখন ইরান। 

এছাড়াও ভূরাজনীতিতে সবচেয়ে বড় যেই বিষয়টি খেলা করে সেটি হলো অস্ত্র ব্যাবসা। অবাক মনে হলেও সত্য যে, মধ্য প্রাচ্যে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে আমেরিকার অস্ত্র ব্যাবসা পেছনে অন্যতম নিয়ামক ইরান। এশিয়ান মুসলিমদের মাঝে ইরানের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন থাকলেও, মধ্য প্রাচ্যের সুন্নি দেশ গুলোতে চিত্রটা ভিন্ন। এখানে দ্বন্দটা মূলত শিয়া ও সুন্নি মতবাদের। বিশেষ করে সৌদি আরবের কথা যদি ধরা হয়, তাদের কাছে ইরান মধ্য প্রাচ্যের অন্যতম আশংকার নাম। সৌদি আরবের সাথে সংঘাত রত হুথি বিদ্রোহীদেরও সমর্থন প্রদান করে ইরান। আর ইরানী  আগ্রাসনের ভয় মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলোর ট্রিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার অন্যতম কারণ।

অথচ হওয়ার কথা ছিল উলটো। ষাট ও সত্তরের দশকেও ইজরায়েলই ছিল মুসলিম দেশ গুলোর সম্মিলিত শত্রু। কিন্তু বর্তমানে নানা ভাবেই একাধিক মুসলিম দেশের সাথে ইজরায়েলের পরোক্ষ সম্পর্ক স্থাপন হয়েছে। যাতে ভূমিকা রেখেছে আমেরিকান লবিং ও নিরলস কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। অর্থাৎ সহজ ভাষায়, মধ্য প্রাচ্যে ইরান ইজরায়েলের বিরুদ্ধ শক্তি হিসেবে কাজ করলেও সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গুলোর ইরানের প্রতি সমর্থন নেই বললেই চলে। 

যেভাবে বহু বছর যাবত ইরানকে দমানোর চেষ্টা করছে ইজরায়েল 

মধ্য প্রাচ্যে ইরানের প্রভাবের পেছনে তাদের সামরিক সক্ষমতা একটি বড় ভূমিকা রাখে। আর এ কারণেই ইজরায়েল ও তার মিত্র রাষ্ট্র গুলো অগণিত বার চেষ্টা করেছে ইরানের সামরিক সক্ষমতা ব্যহত করতে। আর এ সকল প্রচেষ্টার কেন্দ্র হলো ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা।

মধ্য প্রাচ্যে ইজরায়েল একমাত্র রাষ্ট্র যারা পারমাণবিক শক্তিধর। ইজরায়েল কখনোই তা সরাসরি স্বীকার করে নি। তবে একাধিক আন্তর্জাতিক সূত্র মতে, এমনকি পশ্চিমা সূত্র অনুসারেও ইজরায়েলের একাধিক পারমাণবিক অস্ত্র আছে। ফলে দিন শেষে সবচেয়ে বড় অস্ত্রটা ইজরায়েলের হাতে। কিন্তু ইরান যদি পারমাণবিক শক্তিধর হয়ে যায়, তাহলে মধ্য প্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্য অনেকটাই বদলে যাবে। তাই ইজরায়েলের মতে এটি তাদের অস্তিস্ত্বের প্রশ্ন। আর ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ যে কতটা প্রভাব সৃষ্টি করবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। 

পারমাণবিক অস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র, অথবা পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রে সরাসরি আক্রমণ খুবই ঝুকিপূর্ণ প্রক্রিয়া। তবে এই ঝুকিপূর্ণ কাজটিই ইজরায়েল আগে একাধিকবার করেছে। ১৯৮১ সালে ইরাক ও ২০০৭ সালে সিরিয়ান পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্র তৈরি হওয়ার আগেই হামলা চালায় ইজরায়েল। কিন্তু ইরানের ক্ষেত্রে সেটির সাহস এখনও দেখায় নি ইজরায়েল। তবে এর বাইরে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতাই তারা সৃষ্টি করেছে। 

১। গুপ্তহত্যা 

ইরানের পারমাণবিক শক্তি অর্জন প্রক্রিয়াতে সবচেয়ে বেশি ঝুকিতে থাকেন সে দেশের পরমাণু বিজ্ঞানীর। ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের অন্যতম পারদর্শিততা হলো গুপ্তহত্যা। আর তার সবচেয়ে নির্মম শিকার হন ইরানী পরমাণু বৈজ্ঞানিকেরা। 

এর মাঝে সমসাময়িক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত হত্যাকান্ডটি ঘটে ২০২০ এর ২৭ নভেম্বর। ইরানের অন্যতম পরমাণু বিজ্ঞানী ও পদার্থবিজ্ঞানী ‘মহসিন ফাকরিজাদাহ’ কে তার গাড়িতে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হয়েছিলো একটি রিমোট কন্ট্রোল মেশিনগান। মেশিনগানটি এত নিখুঁত ভাবে তাকে হত্যা করা যে একই গাড়িতে তার পাশে বসে থাকা স্ত্রীরও কিছু হয় নি। 

এর আগে ২০১২, ২০১১, ২০১০ ও ২০০৭ সালে আরও ৬ জন বড় মাপের পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করা হয়। শুধু ২০১০ সালেই নিহত হন ৩ জন। ইরানী সরকারের মতে এর প্রতিটির পেছনেই ছিল মোসাদ। এ সকল হত্যাকান্ডের সংগঠিত হয় নানা উপায়ে। কাউকে হত্যা করা হয় রেডিয়েশনের সাহায্যে, কাউকে গাড়িতে বোমার সাহায্যে, কাউকে বা সরাসরি গুলি করে। এই সকল হত্যাকান্ডের কারণে ইরানী বিজ্ঞানীদের সবসময়ই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। এসকল হত্যাকান্ড না ঘটলে হয়তো অনেক আগেই ইরান পরমাণু শক্তির অধিকারী হতে পারতো। 

২। বিমান হামলা

ইজরায়েল এখন অবধি ইরানের পরমাণু কেন্দ্র গুলোতে সরাসরি বড় মাপের আক্রমণ চালায় নি। তবে এর কারণ ইরানি পরমাণু গবেষণা নেটওয়ার্ক অত্যন্ত বিস্তৃত্ব। অর্থাৎ শুধু একটি স্থানে আক্রমণের মাধ্যমে পুরো কার্যক্রম ধংস্ব করা সম্ভব নয়। এছাড়াও অনেক গবেষণাগার প্রাকৃতিক ভাবে ভীষণ সুরক্ষিত স্থানেও অবস্থিত। এর বাইরে রাশিয়ান এস-৩০০ সহ আরও বেশ কিছু আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানের রয়েছে। যদিও তা ফাঁকি দেওয়ার সামর্থ্য ইজরায়েলী বিমান বাহিনীর রয়েছে, কিন্তু তা খুব সহজ নয়। 

কিন্তু তবুও হামলা চালানোর হুমকি দিতে পিছপা হয় না ইজরায়েল। বিশেষ করে গত পহেলা অক্টোবর ইরানী হামলার পরে ইজরায়েল যে ইরানী পরমাণু কার্যক্রমে হামলার কথা বিবেচনা করছে, সে বিষয়টিও সামনে চলে এসেছে। এছাড়া সরাসরি পরমাণু কেন্দ্রে হামলা না চালালেও তার কাছাকাছি হামলা চালানোর রেকর্ড ইজরায়েলের রয়েছে। 

তবে এমন সরাসরি পদক্ষেপের চেয়েও বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ। আর সেখানে ইজরায়েলের চেয়ে ইজরায়েলের মিত্রদের প্রভাবটাই বেশি।  

আমেরিকা ও অন্যান্য রাষ্ট্রের ভূমিকা

ইজরায়েলের পরে ইরানের সামরিক সক্ষমতা হ্রাস করতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা আমেরিকাই রেখেছে। অবশ্য আমেরিকার এই প্রচেষ্টা মূলত ইজরায়েলী তথা ইহুদী প্রভাবেরই ফল।
 

আমেরিকা, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এ সকল বিশ্ব শক্তির সাথে ইরানের টানাপোড়ন মূলত কূটনৈতিক অঙ্গণেই সীমাবদ্ধ। অদূর অতীতে, ইরানের পরমাণু শক্তি সংক্রান্ত সবচেয়ে বড় চুক্তিটি ছিল জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যান অফ একশন (Joint Comprehensive Plan of Action-JCPOA)। 

জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যান অফ একশন

জেসিপিওএ মূলত ওবামা প্রশাসনের কূটবুদ্ধীর ফসল। এই চুক্তি অনুযায়ী ইরান পরমাণু শক্তি অর্জনের পথ থেকে সরে আসবে। এক্ষেত্রে ইরানের যা যা করণীয় ছিলঃ

১। ওয়েপন গ্রেড ইউরেনিয়ামের এনরিচমেন্ট প্রক্রিয়া বন্ধ করা। 
২। অর্জনকৃত ওয়েপন গ্রেড ইউরেনিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে ফেলা। 
৩। নিয়মিত ভাবে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা কর্তৃক ইরানের পরমাণু স্থাপনা গুলো পরিদর্শনের ব্যবস্থা করানো। 

দীর্ঘ আলোচনার পর ইরান এই চুক্তিতে রাজি হয়। ফলস্বরুপ ইরানের উপর কার্যকর থাকা অসংখ্য অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্ত ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে বের হয়ে যান। এরপর আবারো শুরু হয় একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। 

বস্তুত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সাহায্যে ইরানকে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করাটাই ইজরায়েল ও তার মিত্র দেশ গুলোর অন্যতম কৌশল। 

ইরানের উপর আরোপিত অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা

ইরানের উপর অর্থনৈতিক, সামরিক সহ নানা ধরনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা বিদ্যমান। এমনকি ২০২২ সাল পর্যন্ত ইরানই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে নিষেধাজ্ঞা যুক্ত রাষ্ট্র। পরে অবশ্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়া প্রথম স্থান অধিকার করে নেয়। যুগে যুগে ইরানের উপর যে সকল নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছেঃ

যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা 

সাল ১৯৭৯ 

১৯৭৯ সালে আমেরিকান এম্বাসি আক্রমণ ও এম্বাসির কর্মকর্তাদের বন্দী করার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ৮.১ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ আটকে ফেলে। পরে আলজার্জিস চুক্তির মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়। 

সাল ১৯৮৪ 

ইরান-ইরাক যুদ্ধের কারণে ইরানের কাছে যেকোনো ধরনের অস্ত্র বিক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র 

সাল ১৯৯৫

ইরানের পরমাণু কার্যক্রম শুরু এবং হামাস, হেজবুল্লাহকে সমর্থনের জন্য প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের নির্দেশে জারি হয় এক্সিকিউটিভ অর্ডার ১২৯৫৯। এর ফলে ইরানের এনার্জি সেক্টরে সকল ধরনের বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। 

সাল ১৯৯৬

১৯৯৬ সালের ৫ আগস্ট পাশ হয় ‘ইরান অ্যান্ড লিবিয়া স্যাংশন এক্ট’। পরে ২০০৬ সালে লিবিয়া্র উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও ইরানের উপর তা বলবৎ থাকে। ২০১৩ সালে নিষেধাজ্ঞার ধরন আরও কঠিন হয়। 

সাল ২০১৮

ডোনাল্ড ট্রাম্প JCPOA থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিধান্ত  নেয়। এর পরপরই ইরানের ব্যলিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রামের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। 

সাল ২০২০ 

ইরানের একাধিক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় আমেরকা। একই বছরের অক্টোবরে ইরানের ১৮টি ব্যাংকের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। 


জাতিসংঘ কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা

জাতিসংঘ কর্তৃক ইরানের উপর অগণিত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যার বেশিরভাগই ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সাথে সম্পর্কিত। 

২০০৬ সালেই জাতিসংঘ দাবি করে যাতে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের কাজ বন্ধ করে দেয়। অতঃপর ২০০৮, ২০১০ সালেও একাধিক নিষেধাজ্ঞা আসে। এর মধ্যে অন্যতম একটি ছিল ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরির পথে বাধা প্রদান। পরবর্তীতে ২০১১, ২০১২, ২০১৫ তে আরও নিষেধাজ্ঞা দেয় জাতিসংঘ। 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন 

ইউরোপীয় ইউনিয়নও ইরানের সাথে সকল ধরনের বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সম্পর্কের উপর নিষেধাজ্ঞা বসিয়েছে। এনার্জি সেক্টর, প্রযুক্ত সেক্টর, ও ইন্সুরেন্স সেক্টরেও রয়েছে বিপুল নিষেধাজ্ঞা। এমনকি ইরানী ব্যাংক গুলোকেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সুইফট (SWIFT) নেটওয়ার্ক থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

এর বাহিরে যুক্তরাজ্য ও একাধিকবার নিষেধাজ্ঞার কথা বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে। বর্তমানে ইরানের যে সকল সেক্টর আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞাধীন সেগুলো হলোঃ মিসাইল / আর্মস ইন্ডাস্ট্রি, নিউক্লিয়ার ইন্ডাস্ট্রি, এনার্জি/পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রি, ব্যাংকিং, শিপিং ইন্ডাস্ট্রি, ইন্সুরেন্স, সকল আমদানি-রপ্তানি। এছাড়াও ইরানের ইসলামিক রেভুলেশনরি গার্ড কর্পস ও নিষেধাজ্ঞার অধীনে। 

শেষকথা 

সব মিলিয়ে বলা যায়, ইরানের আজকের অবস্থানে আসার পথ মোটেও মসৃণ ছিল না। যদিও দূরপাল্লায় আক্রমণের জন্য ইরানের যথেষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। কিন্তু আধুনিক সঞ্জামাদি, বিশেষ করে বিমানবাহিনীর দিক থেকে ইরান অনেকটাই পিছিয়ে। বর্তমানে ইরানের ড্রোন শিল্প ও ব্যালিস্টিক মিসাইল শিল্প তাদেরকে শক্ত অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছে। কিন্তু দিন শেষে অর্থনৈতিক অবরোধের কারণে ইরানকে ধুঁকতে হয়েছে অনেক। 

আমেরিকা সহ ইজরায়েলের অন্যান্য মিত্র রাষ্ট্রগুলোর মূল লক্ষ্যই ছিল এটি। কারণ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা একটি রাষ্ট্রের জীবন যাত্রার মানের উপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। যা সৃষ্টি করে জনরোষের। সেই জনরোষই কারণ হতে পারে সরকার পতনের। তবে এখন অবধি ইরানের সরকার নিয়ন্ত্রণ বজায় তো রাখছেই, একই সাথে আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারেও সফল হয়েছে। তবে ইরানের বিষয়টি থেকে আবারও প্রমাণিত হয় যে, অর্থনৈতিক অবরোধ কতটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে একটি দেশের জন্য। 

Previous Post

Next Post

Related Posts

ট্রাম্পের জয়ঃ বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি নাকি আশংকা?

24-11-2024

International

ট্রাম্পের জয়ঃ বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি নাকি আশংকা?

আধুনিক পৃথিবীতে যে নির্বাচনটি বিশ্বের উপর সবচেয়ে বেশি...

Read More
বাংলাদেশ-আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) সম্পর্কঃ অর্থনীতি...

21-11-2024

International

বাংলাদেশ-আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) সম্পর্কঃ অর্থনীতি...

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) বিশ্বের অন্যতম প্রধান...

Read More
মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলার নেতৃত্ব এবং তার...

14-11-2024

International

মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলার নেতৃত্ব এবং তার...

সত্য নাদেলা মাইক্রোসফটের সিইও হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের...

Read More

Trending

About MAWblog

MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.

We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.

Sign Up for Our Weekly Fresh Newsletter