Home » MAWblog » International » কোমল পানীয়র বাণিজ্যের ইতিহাসঃ সিরাপ থেকে রিফ্রেশমেন্ট ড্রিংক
International
Written by: সুরাইয়া জামান
30-04-2024
কোমল পানীয় বা সফট ড্রিংকস পছন্দ করে না, বা পান করে না এমন মানুষ আজকের দিনে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। প্রচন্ড গরমে স্বস্তি পেতে কিংবা কোনো অনুষ্ঠান বাড়িতে আথিতেয়তার অন্যতম আনুষাঙ্গিক হচ্ছে কোমল পানীয়। এছাড়াও বন্ধুদের জমজমাটি চায়ের আড্ডা এই কোমল পানীয় ছাড়া যেন অসম্পূর্ণ। কোমল পানীয় এর ভেতরে কোকাকোলা ছাড়াও অন্যান্য ব্র্যান্ড যেমন পেপসি, সেভেন আপ, স্প্রাইট ইত্যাদি সমভাবে জনপ্রিয়। এই যে যেকোনো অবস্থায় গলা ভেজাতে পছন্দের কোমল পানীয়টি আমরা কিনে নিচ্ছি, আমরা কি জানি এই কোমল পানীয়ের ব্যবসা আসলে শুরু হলো কিভাবে? চলুন আজ জানার চেষ্টা করি, কিভাবে এই কোমল পানীয়ের ব্যবসার উৎপত্তি।
বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হচ্ছে বম্বে সুইটস। বম্বে সুইটস এর ব্যবসা শুরুর আদ্যোপান্ত জানতে পড়ুন- একটি মিষ্টির দোকান থেকে মার্কেট লিডার হয়ে উঠার গল্প
কোমল পানীয় কি?
আমরা সকলেই জানি, কোমল পানীয় বা সফট ড্রিংকস হচ্ছে এক ধরনের তরল পানীয়। এগুলো সাধারণত এক ধরনের কার্বনেটেড বেভারেজ অর্থাৎ আমরা যা পান করি তা কার্বনসমৃদ্ধ পানির দ্রবীভূত রূপ। বিভিন্ন ফ্রেভারের কোমল পানীয় তৈরিতে এতে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের মিষ্টিযুক্ত ফ্লেভার যুক্ত করা হয়। এলকোহল যুক্ত হার্ড ড্রিংকস এর থেকে আলাদা করতেই এলকোহলমুক্ত এই ধরনের পানীয়ের নাম কোমল পানীয় বা সফট ড্রিংকস।
কোমল পানীয়ের প্রারম্ভিক বা ইতিহাস
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে মধ্যযুগের সময়ে শরবতের মতো বিভিন্ন ধরনের ফলের স্বাদযুক্ত পানীয় এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল। ফলের রসে সোডা মিশিয়ে এই ধরনের পানীয় তৈরি করা হতো। মিষ্টি স্বাদ আনার জন্য এতে যুক্ত করা হতো মধু কিংবা চিনি। অর্থাৎ সেই সময়ের সাপেক্ষে, ফলের স্বাদযুক্ত এই ধরনের পানীয়ের মাধ্যমেই কোমল পানীয়ের উৎপত্তি। কিভাবে? তবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা যাক।
সোডাযুক্ত ফলের রসের মিষ্টি পানীয় প্রথমে মধ্যপ্রাচ্যেই পানের প্রচলন ছিলো। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে প্রচলিত এই ধারা আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর পরবর্তীতে তা মধ্যযুগীয় ইউরোপে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে।
১৮ শতকের শেষের দিকে ‘সোডা ওয়াটার’ শব্দটি উদ্ভূত হয়েছিলো এবং এই শব্দ থেকেই মূলত ‘কোমল পানীয়’ শব্দটির জন্ম।
অন্যদিকে ‘কার্বনেটেড ওয়াটার’ প্রথম আবিষ্কৃত হয় জোসেফ প্রিস্টলি এর হাত ধরে ১৭৬৭ সালে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে এই প্রত্যেকটি ধারনা একীভূত করে তৈরি হয় আজকের কোমল পানীয়।
কোমল পানীয়ের ব্যবসা শুরুর ইতিহাস
১৭ শতকে মধ্যপ্রাচ্যের পর ইউরোপের দেশুগুলোতে প্রথম কোমল পানীয়ের বাজারজাতকরণ লক্ষ্য করা যায়। এক ধরনের লেমনেড তৈরি করে তাইই মূলত বাজারজাত করা হতো সেই সময়ে। বিক্রেতারা এই লেবুর শরবত পিঠে একটি বড় পাত্রে করে বহন করতেন এবং ঘুরে ঘুরে প্যারিসবাসীদের তৃষ্ণা নিবারণ করতেন। তৃষ্ণা মেটানোর এই চাহিদা থেকেই এই ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকে।
১৮০৯ সালে আমেরিকায় প্রথম সোডা ওয়াটার খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়। সোডা ওয়াটারে থাকা পানি এবং সোডিয়াম বাইকার্বনেট এসিডের সাথে বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রথম গ্যাস বাবল তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে এই টেকনিক কোমল পানীয় উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। এভাবেই এই ব্যবসা এগিয়ে যেতে থাকে সময়ের সাথে।
১৮৮৬ সালে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় কোমল পানীয় কোকাকোলার যাত্রা শুরু হওয়ার মাধ্যমে কোমল পানীয়ের ব্যবসায় নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটে। এরই পরিক্রমায় ১৮৯৮ সালে পেপসি কোলা আবিষ্কৃত হয়। শুরুর দিকে হজমে সহায়ক হিসেবে পরিচিত পেলেও পরবর্তীতে রিফ্রেশমেন্ট ড্রিংক কিংবা কোমল পানীয় হিসেবেই খ্যাতি অর্জন করেছে এই কোম্পানীগুলো।
পরিশিষ্ট
কোমল পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি মন্দ, সেই তর্ক বেশ পুরনো। প্রচন্ড গরমে তৃষ্ণার্তকে একটু প্রশান্তির ছোঁয়া দিতে কোমল পানীয়ের চাহিদা সবসময়ই থাকে তুঙ্গে। তবে ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় আজকের এই তৃপ্তিদায়ক কোমল পানীয়ের মূল হচ্ছে প্রাকৃতিক ফলের তাজা জুস বা শরবত। সময়ের সাথে কৃত্রিমতা যোগ করতে করতে আজকের কোমল পানীয় এবং তাজা ফলের জুসের মধ্যে বিস্তর ফারাক তৈরি হয়েছে। স্বাস্থ্যগুণ বিচার করলে কৃত্রিম রিফ্রেশমেন্ট পানীয়গুলো হাজার মাইল পেছনে। তবে পণ্যের গ্রহনযোগ্যতাই ব্যবসার মূলধন- এই সূত্রে এগিয়ে যাওয়া কোমল পানীয়ের ব্যবসাগুলো আজ পৃথিবীতে রাজত্ব করছে।
তথ্যসূত্রঃ
Thoughtco
Encyclopedia
06-11-2024
International
মার্ক জাকারবার্গ, যিনি প্রযুক্তি জগতে ফেসবুক প্রতিষ্ঠা...
Read More05-11-2024
International
বাংলাদেশের ই-কমার্স এবং অনলাইন মার্কেটিংয়ের জগতে নতুন...
Read More04-11-2024
International
বাংলাদেশ ও ভারত—দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.