Home » MAWblog » Top 10 in Bangladesh » রমজানে স্পেশাল (ইফতার) ১০ টি স্ট্রিট ফুড
Top 10 in Bangladesh
Written by: সুরাইয়া জামান
18-03-2024
চলছে রমজান মাস। ধর্মীয় দিক থেকে অনেক বেশি ফজিলতপূর্ণ এবং মর্যাদাপূর্ণ হওয়ায় ইসলাম ধর্মালম্বীদের কাছে রমজান মাসের গুরুত্ব অন্যান্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি। দীর্ঘ একমাস ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা ফজরের আগে সেহরী করে সারাদিন রোজা রাখে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। বিভিন্ন বয়েসী রোজাদারগণ সারাদিন রোজা রেখে সন্ধ্যায় এক জায়গায় সমবেত হন ইফতারের উদ্দেশ্যে। বাচ্চা থেকে বুড়ো, সারাদিনের ক্লান্তি ছাপিয়ে সবার এক অনন্য উচ্ছ্বাস যেন উছলে পড়ে এই ইফতার আয়োজনে। আয়োজন ছোট হোক কিংবা বড়, মহিমান্বিত এই রমজান মাসের আসল সৌন্দর্য এবং স্বার্থকতা নিরূপণ হয় ইফতারের মাধ্যমে। ইফতারে সবাই সাধারণত নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী খাবার খেতে পছন্দ করেন। স্বাস্থ্য সচেতন রোজাদার ব্যক্তিরা ইফতারের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং যথাযথ পুষ্টিসম্পন্ন খাবার বেছে নেন। তবে বেশিরভাগ বাঙালী মুসল্লীই ছোলা মুড়ির পাশাপাশি গরম তেলেভাজা কিংবা ঝাল কিছু খেতেই বেশি পছন্দ করেন। ইফতার আয়োজনকে আরো সমৃদ্ধ করতে পারে এমন কিছু রমজান স্পেশাল স্ট্রিটফুড নিয়ে আজকের এই লেখা।
বাংলাদেশের বিখ্যাত ১০টি খাবার সম্পর্কে পড়তে পারেন এখানে- বাংলাদেশের বিখ্যাত ১০টি খাবার
শরবত
ইফতারের প্রাথমিক এবং অত্যন্ত আনুষাঙ্গিক একটি আইটেম হচ্ছে শরবত। সারাদিন রোজা রেখে তৃষ্ণার্ত রোজাদারগণ ঘোল, মাঠা অথবা বিভিন্ন ফলের জুস ইফতারে শরবত হিসেবে পান করে থাকেন। তবে খুবই সহজলভ্য হওয়ায় লেবুর তৈরি লেমনেড অথবা শরবত ইফতারে ঠান্ডা পানীয় হিসেবে বেশ প্রচলিত এবং জনপ্রিয়। রমজান মাস জুড়ে পথে কিংবা রাস্তার মোড়ে ভ্রাম্যমান শরবতের দোকান দেখা যায়। পথচারী রোজাদারগণ বাড়ি ফেরার তাড়া নিয়েই আজানের ডাকে সাড়া দিয়ে পথে ইফতার সেরে নিতে পারেন। অনেকে টাটকা ফলের জুস ইফতারে খেতে পছন্দ করেন। কোমল পানীয় এর পরিবর্তে সাবুদানার শরবত, ঘোল, মাঠা কিংবা লেবুর শরবত যথেষ্ঠ পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ হওয়ায় স্বাস্থ্যসচেতন রোজাদারগণ এ ধরনের শরবতই বেশি পান করে থাকেন।
হালিম
ইফতার আয়োজনকে আরো আকর্ষনীয় এবং সমৃদ্ধ করতে এতে যোগ করা যেতে পারে হাই-ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার হালিম। গরু, খাসি কিংবা মুরগীর মাংস দিয়ে নানান পদের ডালের সংমিশ্রণে তৈরী হালিম খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং মুখরোচক। ধর্ম-নির্বিশেষে হালিমের স্বাদ সবারই প্রিয় হওয়ায় সারাবছর এর চাহিদা থাকলেও রমজান মাস জুড়ে রাস্তার পাশের রেস্তোরা থেকে শুরু করে দামী রেস্টুরেন্ট, সব জায়গায় এর চাহিদা থাকে তুঙ্গে। পুরান ঢাকা সহ আশেপাশের কিছু জেলায় হালিম এতোটাই জনপ্রিয় যে, এটা ছাড়া ইফতারকে অসম্পূর্ণ মনে করা হয়। স্ট্রিটফুড হিসেবে ইফতারে মুখরোচক হালিমের স্থান তাই অনেকটাই উপরে।
কাবাব
নাম শুনলেই জিভে জল আসে এমন মুখরোচক খাবারের মধ্যে গরম ঝাল ঝাল কাবাব বিশেষভাবে সমাদৃত। রমজান মাস জুড়ে স্ট্রিটফুডের যে আইটেমগুলো ছোলা, বেগুনীর পাশাপাশি বেশ জায়গা দখল করে থাকে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের কাবাব আইটেম। যারা সারাদিন রোজা রেখে ইফতারে গরম এবং ঝাল কিছু খেতে পছন্দ করেন, তারা বেছে নিতেন পারেন কাবাবের কিছু আইটেম। চাইনিজ কাবাব, চিকেন কাবাব, শামি কাবাব, শাহী কাবাব, মাটন শিক কাবাব, সুতি কাবাব, দম কাবাব, জালি কাবাব ইত্যাদি বাহারি নামের এবং স্বাদের কাবাব পাওয়া যায় স্ট্রিটফুডের দোকানগুলোতে। এছাড়াও নিরামিষ আইটেমের মধ্যে কাঁচকলার কাবাব, আলুর কাবাব, ছোলার কাবাব বেশ জনপ্রিয়।
পাকোড়া
পবিত্র রমজানে সারাদিন রোজা রেখে ইফতারে অনেকেই পাকোড়া খেতে বেশ পছন্দ করেন। বিভিন্ন ধরনের পাকোড়ার মধ্যে সবজি পাকোড়া, চাইনিজ পাকোড়া, সাবুদানার পাকোড়া, চিকেন পাকোড়া, মাশরুম পাকোড়া, রসুনের পাকোড়া ইত্যাদি ভিন্ন স্বাদের পাকোড়া যেন রোজাদারের মুখে হাসি ফোটায়। রমজানে ভ্রাম্যমাণ দোকান গুলোতে কিংবা ভ্যানগাড়ীতে খুচরো ব্যবসায়ীরা ছোলা, বেগুনীর পাশাপাশি এসব মুখরোচক পাকোড়া বিক্রি করে থাকেন। রেস্টুরেন্টগুলোতে অফার করা ইফতার প্লেটারেও পরিবেশন করা হয় মজাদার এসব পাকোড়া। খরচ বাঁচাতে বাড়িতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে অল্প উপকরণে বানিয়ে নেওয়া যায় এসব মজাদার ক্রিস্পি আইটেম।
জিলাপী
মুচমুচে ঝাল পাকোড়ার পাশে স্বাদে ভিন্নতা আনতে ইফতারে যোগ করা হয় মিষ্টিজাতীয় কিছু। তবে মিষ্টিপ্রিয় মানুষেরা নানা রকম মিষ্টির মধ্যে সবার আগে বেছে নেন জিলাপী। সারাদিনের তপ্ত গরমে গলা শুকিয়ে যখন কাঠ হয়ে থাকে, তখন ইফতারে গরম মুচমুচে রসালো জিলাপী এনে দিতে পারে স্বর্গীয় তৃপ্তি! শাহী জিলাপী, বোম্বে জিলাপী, জাফরান জিলাপী, রেশমী জিলাপী, মাষকলাইয়ের জিলাপী ইত্যাদি ভিন্ন স্বাদের জিলাপী পাওয়া যায় কাছের ফাস্টফুডের দোকানগুলোতেই। ভোজনরসিক এবং মিষ্টিপ্রিয় বাঙালীর হাত ধরে জিলাপী হয়ে উঠেছে ইফতারের অন্যতম এক আনুষাঙ্গিক।
ছোলা মুড়ি মাখানো
আফগান কাবুলিওয়ালাদের হাত ধরে এই বঙ্গদেশে ইফতার আয়োজনে জায়গা করে নিয়েছে ছোলা মুড়ি। দীর্ঘ কয়েকশো বছর ধরে ছোলা মুড়ি মাখানো ছাড়া যেন ইফতার অসম্পূর্ণ। ছোলা মুড়ির সাথে পেঁয়াজু, বেগুনী, বুন্দিয়া, শসা কুচি এমনকি জিলাপী ভেঙে মাখিয়ে খাওয়ার ধরনটি চলছে ১৫০ থেকে ২০০ বছর ধরে। এতো বছর ধরে চলমান এই প্রথা বাঙালী জীবনে ইফতারের মূল আয়োজন বলা চলে। কলেজ, ভার্সিটির খোলা মাঠে কিংবা চত্বরে বন্ধুদের গোল ইফতার আয়োজনে বিস্তর জায়গা জুড়ে থাকে ছোলা মুড়ি মাখানোর উৎসব। রাস্তার পাশের রেস্তোরাগুলোতে রমজানের শুরুর দিন থেকে ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনী, বুন্দিয়ার সাজানো পসরা দেখা যায়। দুপুরের পর থেকে ইফতারের সময় পর্যন্ত প্রচুর ভীড় করে এসব কেনেন ক্রেতাগণ।
রোস্ট
বিয়েবাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন আয়োজনে পোলাও, বিরিয়ানীর সাথে রোস্ট হচ্ছে আনুষাঙ্গিক একটি পদ। তবে বর্তমান সময়ে রমজান মাস জুড়ে ইফতারে নানা আইটেমের পাশাপাশি ভিন্ন ধরনের রোস্ট রাখার প্রচলন শুরু হয়েছে। আস্ত মুরগীর রোস্ট, কোয়েলের রোস্ট, কবুতর রোস্ট, খাসির আস্ত পা রোস্ট ইত্যাদি আইটেম যোগে ইফতার আয়োজন হতে পারে আরো স্পেশাল। স্ট্রিটফুড হিসেবে জিভে জল আনা এই রোস্টের আইটেমগুলো দেখতেও বেশ আকর্ষনীয় এবং সুস্বাদু। ইফতারে নতুনত্ব আনতে এবং অন্য মাত্রা যোগ করতে রোস্ট খুবই চমৎকার এবং নন্দনীয় একটি আইটেম।
নান/রুটি জাতীয় খাবার
কাবাব, হালিম কিংবা রোস্টের পাশাপাশি ইফতার আয়োজনে যুক্ত হতে পারে নান, তন্দুরী, পরোটা, লুচি অথবা রুটি। স্ট্রিটফুড হিসেবে রাস্তার পাশের দোকানে কিংবা ফুডকোর্টে বিভিন্ন তেলেভাজার সাথে জায়গা করে নিতে দেখা যায় এইজাতীয় আইটেমগুলোকে। অনেকেই হালিম অথবা কাবাবের সাথে নান, পরোটা খেতে পছন্দ করেন। নান আইটেমের মধ্যে সবজি নান, দুধ নান, বাটার নান, ঝাল নান ইত্যাদি সমারোহ দেখা যায়। পরোটার মধ্যেও দেখা যায় ভিন্নতা। আলুর পরোটা, হিং পরোটা, কিমা পরোটা ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
লাচ্ছি
ইফতারে শরবতের পাশাপাশি লাচ্ছি হতে পারে খুবই পছন্দসই স্বাস্থ্যকর একটি পানীয়। বিভিন্ন ফ্লেভারের লাচ্ছির মধ্যে শাহী লাচ্ছি, বাদাম লাচ্ছি, দই লাচ্ছির স্বাদ এবং গুণগত মান অতুলনীয়। রমজানের শুরুর দিন থেকেই বিভিন্ন মার্কেটে ভ্যানে কিংবা দোকানে ব্যবসায়ীদের লাচ্ছি বানাতে দেখা যায়। সারাদিনের তপ্ত শরীরকে একটুখানি শান্তির পরশ দেবার পাশাপাশি শরীরের প্রয়োজনীয় মিনারেলস এর ঘাটতি পূরণে শরবতের পাশাপাশি বেছে নিতে পারেন লাচ্ছি। স্ট্রিটফুড এড়াতে চাইলে বাড়িতেই খুব অল্প উপকরনে মিষ্টি কিংবা টক দই এবং ঠান্ডা তরল দুধ, চিনির মিশ্রণে বানিয়ে নিতে পারেন রমজান স্পেশাল লাচ্ছি।
বিরিয়ানী
বিরিয়ানী পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। লোভনীয় এবং সুস্বাদু বিরিয়ানী যদি যোগ হয় ইফতার আয়োজনে তাহলে তো আর কথাই নেই! নিজের রসনা তৃপ্ত করতে কেউ কেউ দিনশেষে ইফতারে বেছে নেন বিরিয়ানী আইটেম। ভারতসহ পুরো উপমহাদেশেই ইফতারে বিরিয়ানী খাওয়ার বিশেষ চল রয়েছে। বিরিয়ানীর মধ্যে চিকেন বিরিয়ানী, বিফ বিরিয়ানী, মাটন বিরিয়ানী, হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানী ইত্যাদি বিশেষভাবে পরিচিত এর অসাধারণ স্বাদের জন্য। স্থানীয় খাবারের দোকানগুলোতে রমজান মাস জুড়ে বিভিন্ন ধরনের বিরিয়ানীর আইটেম পাওয়া যায়। অন্যান্য পদের পাশাপাশি ইফতারে বিরিয়ানী থাকাটা এক ভিন্ন আমেজ যোগ করে বলে বিভিন্ন বয়েসী রোজাদারগণ বেশ পুলকিত বোধ করেন।
পরিশিষ্ট
ইসলামে অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজানের গুরুত্ব সর্বাধিক। গুরুত্বপূর্ণ এই মাসে ইবাদত বন্দেগীর পাশাপাশি নিজের সুস্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়াও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সারাদিন রোজা থেকে ইফতারে আপনি কি খাচ্ছেন এবং তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা প্রয়োজনীয়, সেদিকে খেয়াল রাখা একান্তই কাম্য। এই লিস্টের মুখরোচক খাবারগুলোর স্বাদ মাসে এক বা দুইদিন নেওয়াই যায়।
তথ্যসূত্রঃ
25-03-2024
Top 10 in Bangladesh
পবিত্র রমজানে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের...
Read More05-03-2024
Top 10 in Bangladesh
শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময় থেকে শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোই...
Read More01-02-2024
Top 10 in Bangladesh
আশির দশকে বাংলাদেশের প্রকাশনা জগতে বড় বিস্ফোরণ ঘটার...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.