Home » MAWblog » International » বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের জন্য ৫টি সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসায়িক মাইগ্রেশন গন্তব্য
International
Written by: এস এম নাহিয়ান
11-01-2024
ব্যবসায়িক মাইগ্রেশন, অব্যবসায়ীদের কাছে শব্দ দুইটি তেমন পরিচিত না হলেও আন্তর্জাতিক ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তাদের কাছে এটি বেশ ভালই পরিচিত। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অধিকাংশ সময়ে এদেশেই বিনিয়োগের কথা আলোচনা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে বাহিরের দেশে বিনিয়োগ করা বা ব্যবসা করার লোকও নেহায়েত কম নেই। কিন্তু ব্যবসায়িক মাইগ্রেশন বিষয়টি খুব একটি সহজ নয়। রয়েছে নানা ধরনের আইনি জটিলতা থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক জটিলতা। আর সে সব কিছু নিয়েই বাংলাদেশীদের জন্য সেরা পাঁচটি ব্যবসায়িক মাইগ্রেশনের গন্তব্য দেশ নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের লেখাটি।
ব্যবসায়িক মাইগ্রেশন বলতে সাধারণত বোঝায় কোনো একটি দেশ থেকে আরেকটি দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণ করা অথবা ভিন্ন দেশে ব্যবসা সরিয়ে দেওয়া। সাধারণ মাইগ্রেশন শব্দের অর্থ হলো অভিবাসন। আর তাই ‘বিজনেস মাইগ্রেশন’ এর সরাসরি বাংলা হয় ‘ব্যবসায়িক অভিবাসন’। যা দিয়ে প্রাথমিক ভাবে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ব্যবসায়িক কার্যকলাপ স্থানান্তর করাকেই মূলত বোঝায়।
তবে এর বাইরেও ব্যবসায়িক অভিবাসন এর আরেকটি অর্থ রয়েছে। অনেক সময়ই দেখা যায় ব্যবসায়িক কাজে পারদর্শী কোনও ব্যক্তি ভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছে। সেক্ষেত্রেও তার ব্যবসায়িক জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা তার সাথেই ভিন্ন দেশের সম্পদে রুপান্তরিত হচ্ছে। একাধিক সংজ্ঞা অনুসারে এটিও এক ধরনের স্বীকৃত ব্যবসায়িক মাইগ্রেশন। তবে আজকের লেখাতে আমরা মূলত একটি ব্যবসার সরাসরি মাইগ্রেশন নিয়েই কথা বলবো।
২০২০ সালে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয় ‘ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্ট ট্রান্সজেকশন (ওভারসিজ ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট) রুলস, ২০২০ (Capital Account Transaction (Overseas Equity Investment) Rules, 2020) আইন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশীদের জন্য বৈধ পথে বাইরের দেশে অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। অর্থাৎ এই আইনের অধীনে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা চাইলে বাইরের দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হবেন। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত উল্লেখিত রয়েছে এই আইনটিতে। তার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য শর্ত হলো।
১। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান তার গত পাঁচ বছরের গড় রপ্তানি আয়ের ২০ শতাংশের অধিক বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবে না।
২। নিট সম্পদের ২৫ শতাংশের বেশি বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবে না।
৩। বিদেশে বিনিয়োগের আবেদনের জন্য প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট রেটিং নূন্যতম ২.০ থাকতে হবে।
৪। রপ্তানিকারকের সংরক্ষিত স্থিতিসহ কোটা থাকতে হবে।
৫। যে ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে চায় সেই ব্যবসাটি বাংলাদেশি বিনিয়োগকারী দ্বারা প্রচলিত ব্যবসার অনুরুপ হতে হবে।
৬। ভিনদেশে অর্জিত অর্থ, রয়্যালিটি, মুনাফা, লভ্যাংশ, সুদ, শেয়ার ইত্যাদি বাংলাদেশে পাঠাতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এমন কোনো দেশে বিনিয়োগ করা যাবে না।
৭। যেসব দেশের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে, সেসব দেশে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
তবে অন্য সকল আইনের ন্যায় এই আইনটিও অনেক বিস্তারিত। তাই ভিনদেশে বিনিয়োগ অথবা ভিনদেশে ব্যবসা স্থানান্তর করার সিধান্ত নিলে অবশ্যই এই আইন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া ভাল।
ব্যবসায়িক মাইগ্রেশনের প্রবণতা উদ্যোক্তাদের মধ্যে নতুন কিছু নয়। গত ৩০ বছর যাবত নানা কারণে এ দেশের অসংখ্য মানুষ দেশ ছেড়েছেন। একই সাথে অনেক ব্যবসায়াও বিদেশে স্থানান্তরিত হচ্ছে। এমনকি এটি শুধু বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিদ্যমান বিষয়টি তেমনও নয়। বরং অনেক উন্নত দেশের ব্যবসায়ীরাও নিজের দেশ থেকে অন্য দেশে ব্যবসা স্থানান্তর করছেন। এর প্রধান কারণ হিসেবে বলা যায় ব্যবসায়িক বৈশ্বায়ন। পৃথিবী যতই একটি গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হচ্ছে, ঠিক ততই মানুষ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে। যা শুধু ব্যবসা নয় বরং চাকরি, বিনিয়োগ থেকে সব কিছুর ক্ষেত্রেই সত্যি। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কথাগুলো আরও সত্যি। কারণ বিভিন্ন আইনী জটিলতার কারণে এ দেশের প্রাইভেট সেক্টরে বিদেশী বিনিয়োগ পাওয়াটা অনেক জটিল। নানা ধরনের প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রতার কারণেও অনেক উদ্যোক্তা দেশ থেকে ব্যবসা সরিয়ে ফেলছেন। তারই প্রেক্ষিতে আজকের এই লেখায় তুলে ধরা হয়েছে এমন ৫টি দেশ যেখানে বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা ব্যবসা মাইগ্রেট করতে পারবেন সহজে।
বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক মাইগ্রেশনের পছন্দের তালিকায় অন্যতম একটি দেশ হলো যুক্তরাজ্য। তবে এ পছন্দের পেছনে যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়িক সুবিধার চেয়েও বড় একটি কারণ রয়েছে। সেটি হলো যুক্তরাজ্যে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশীর বসবাস। এ অঞ্চল থেকে ১৯৪০ এর দশক থেকেই বাঙালী তথা সিলেটিরা যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায়। জাহাজের চাকরি, ঘরোয়া চাকরি সহ নানা ভাবে সিলেটের অনেক বাসিন্দা যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাস শুরু করে। তাদের সূত্র ধরেই বর্তমান যুক্তরাজ্যে এখন বাঙালীদের সংখ্যা প্রচুর। আর ঠিক সেজন্যই অনেক বাঙালী এখন চায় তাদের ব্যবসাটিকে লন্ডনভিত্তিক করে ফেলতে। এক্ষেত্রে তিন ধরনের ব্যবসায়িক মাইগ্রেশন করা সম্ভব।
এই ধরনের ব্যবসায়িক মাইগ্রেশনে সরাসরি যুক্তরাজ্যে একটি কোম্পানি খোলা হয়। কোম্পানিটি হতে পারে লিমিটেড কোম্পানি, লিমিটেড লায়াবিলিটি কোম্পানি, সোল ট্রেডার অথবা পার্টনারশিপ কোম্পানি। এগুলো মূলত ব্যবসায়ের নানা ধরন যেগুলো সবই ট্রেডিং এন্টিটি হিসেবে পরিচিত। ব্যবসায়িক মাইগ্রেশনের ক্ষেত্রে এখন এই পন্থাটিই সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের কোনো ডিরেক্টর বা শেয়ারহোল্ডার ছাড়াও কোম্পানি খোলা সম্ভব। বর্তমানে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক অনেক ফার্ম এমন কোম্পানি খোলার ব্যাপারে সহায়তা দিয়ে থাকে।
এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যে সরাসরি কোনো কোম্পানি খোলা হয় না। বরং বাংলাদেশী কোম্পানিরই একটি শাখা যুক্তরাজ্যে খোলা হয়। এ ধরনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় গ্লোবাল মবিলিটি ভিসা এর। এছাড়াও এ ধরনের ব্যবসা রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে মূল কোম্পানির সাথে যুক্তরাজ্য শাখার সম্পর্কের নোটারি করা দলিল দাখিল করতে হয়। এছাড়াও এই ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো লিমিটেড কোম্পানি না বলে সকল প্রকার ব্যবসায়িক ঝুঁকি সমগ্র কোম্পানির উপরেই বর্তায়। সাধারণত এ ধরনের প্রতিষ্ঠান সাময়িক সময়ে জন্য খোলা হয়। দীর্ঘ সময়ের জন্য হলে অধিকাংশ উদ্যোক্তারা ট্রেডিং এন্টিটি খোলার ব্যাপারে মনোনিবেশ করেন।
সর্বশেষ মাধ্যমটি হলো ট্রেড ডিরেক্ট। এর সাহায্যে বাংলাদেশী একজন উদ্যোক্তা যুক্তরাজ্যে কোনো ধরনের কোম্পানি খোলা ছাড়াই ব্যবসা করতে পারবে। এমনকি এসব ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের করপোরেট ট্যাক্স আইনও প্রয়োগ করা হয় না। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী কিংবা বড় বিনিয়োগের জন্য এ পদ্ধতি যথাযথ নয়।
মূলত এই তিন মাধ্যমেই একজন বাংলাদেশী যুক্তরাজ্যতে তার ব্যবসা মাইগ্রেট করতে পারে।
বাংলাদেশীদের ব্যবসায়িক মাইগ্রেশনের জন্য পছন্দের দ্বিতীয় তালিকায় রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়া দেশটিতে পড়ালেখা বা চাকরি সূত্রে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ কম থাকলেও বিনিয়োগের মাধ্যমে অনেক সুযোগ রয়েছে। অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ান সরকার বরাবরই ব্যবসায়িক অভিবাসনকে স্বাগত জানায়। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ান সরকার সকল ব্যবসায়িক মাইগ্রেশন ও বিনিয়োগকে চারটি স্ট্রিম (Stream) এ ভাগ করেছে।
সাবক্লাস ১৮৮ এর অধীনে বিভিন্ন দেশের উদ্যোক্তাদের অস্ট্রেলিয়াতে যেয়ে ব্যবসা ও বসবাস করার সুযোগ রয়েছে। এই স্ট্রিমের মাধ্যমে আবেদন করে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ এমনকি নাগরিকত্ব পাওয়ারও সুযোগ রয়েছে। তবে এই স্ট্রিমে আবেদন করতে হলে পর্যাপ্ত পয়েন্ট এবং অস্ট্রেলিয়ান সরকার থেকে নমিনেশন প্রয়োজন। তবে এক্ষেত্রে নানা ধরনের শর্ত রয়েছে। যেমন আবেদনকারীর ব্যবসায়িক টার্নওভার বছরে নূন্যতম ৭ লক্ষ ৫০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার সমমূল্যের হতে হবে। ব্যবসার সম্পদ নূন্যতম ১.২৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার হতে হবে এবং বয়স ৫৫ এর নিচে হতে হবে।
সাবক্লাস ১৮৮বি এর অধীনে বিনিয়োগকারীরা এই স্ট্রিমে আবেদন করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে নূন্যতম ২.৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার বিনিয়োগ করতে হয়। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ান স্টেটের নমিনেশন পাওয়া ছাড়াও রয়েছে আরও নানা নিয়ম কানুন।
মূলত অস্ট্রেলিয়ান ইনভেস্টর স্ট্রিমেরই আরেকটি রুপ এই সিগনিফিকেন্ট স্ট্রিম। এক্ষেত্রে নমিনেশনের পাশাপাশি নূন্যতম ৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ৫০ লক্ষ অস্ট্রেলিয়ান ডলার বিনিয়োগ করতে হয়।
সাবক্লাস ১৮৮ই, এর অধীনে উদ্যক্তাদের সরাসরি অস্ট্রেলিয়াতে ব্যবসা চালু করার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রেও অনেক শর্ত রয়েছে। যেমন প্রতিটি উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক মূল ধরনের প্রমাণ দেখাতে হয়। তার পাশাপাশি প্রয়োজন আইইএলটিএস ৬ (IELTS ৬) স্কোর ও ৫৫ এর নিচে বয়স। এছাড়াও যদি কোনো বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে কেউ ব্যবসা করতে ইচ্ছুক হয় তাহলে ওই ব্যবসাতে অন্তত ৩০% মালিকানা তার থাকা বাধ্যতামুলক।
যুক্তরাজ্যের পরে অভিবাসন করার জন্য বাংলাদেশীদে কাছে কানাডাই পছন্দের শীর্ষে। কানাডার স্থায়ী বসবাস নীতি এতদিন বেশ নমনীয় থাকায় অনেক বাংলাদেশীই কানাডাতে স্থায়ী বসবাস তৈরি করেছেন। আর তাই স্বভাবতই ব্যবসায়িক মাইগ্রেশনের জন্যও কানাডা হয়ে উঠেছে অন্যতম সুবিধাজনক এক গন্তব্য। কানাডা ব্যবসায়িক মাইগ্রেশন করতে হলে অস্ট্রেলিয়ার ন্যায়ই বিভিন্ন স্ট্রিমের অধীনে আবেদন করতে হয়। নিচে সবচেয়ে প্রচলিত স্ট্রিমগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
কানাডাতে ব্যবসায়িক অভিবাসনের প্রধান মাধ্যম এই ফেডারেল বিজনেস ইমিগ্রেশন প্রোগ্রাম। মূলত এই প্রোগ্রামটি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে কানাডার ফেডারেল সরকার। এর অধীনে রয়েছে অন্ট্রোপ্রনার স্ট্রিম। সেই স্ট্রিমের অধীনে বিভিন্ন রাজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশীরা বিনিয়োগের আবেদন করতে পারে। তবে এখানে বিনিয়োগ বলতে শুধু কানাডিয়ান কোনো ব্যবসাতে বিনিয়োগ বোঝায় না। এক্ষেত্রে একজন বাংলাদেশী চাইলে নতুন একটি ব্যবসা শুরু করতে পারবে অথবা কোনো কানাডিয়ান ব্যবসাকে কিনেও নিতে পারবে। মূলত এই সকল কিছুকেই একত্রে বিনিয়োগ নামে অভিহিত করা হয়। তবে এই প্রোগ্রামের অধীনে সব রাজ্যে আবেদন করা গেলেও কুইবেক রাজ্যে আবেদন করা যায় না।
এই প্রোগ্রামটি মূলত কুইবেক রাজ্যের জন্য বিশেষ ভাবে নির্মিত। এর বিশেষ কিছু শর্ত রয়েছে। যেমনঃ
১। আবেদনকারীর নূন্যতম ২০ লক্ষ কানাডিয়ান ডলারের সমপরিমাণ সম্পদ থাকতে হবে।
২। অন্তত দুই বছরের ম্যানেজমেন্ট অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৩। একটি মধ্যস্ততাকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করতে হবে।
৪। কুইবেকে বসবাসের লক্ষ্য থাকতে হবে।
৫। অন্তত পাঁচ বছরের জন্য ১২ লক্ষ কানাডিয়ান ডলারের বিনিয়োগ করতে হবে।
ফেডারেল প্রোগ্রাম গুলোর বাইরেও প্রতিটি রাজ্য নিজস্ব নমিনি প্রোগ্রাম চালু রেখেছে। সে সকল প্রোগ্রামের সুযোগ-সুবিধা থেকে শুরু করে শর্তাবলী সব কিছুই ভিন্ন ভিন্ন। তবে সে সকল প্রোগ্রামের মাধ্যমেও অনেকে কানাডায় ব্যবসায়িক মাইগ্রেশন করে।
সিঙ্গাপুর দেশটির আয়তন মাত্র ৭০৪ বর্গ কিলোমিটার হলেও বিশ্বের অন্যতম সফল দেশ এই সিঙ্গাপুর। মূলত ট্রান্সশিপমেন্ট তথা বন্দর ব্যবসার মাধ্যমে আজ তাদের এত উন্নতি। নানা ধরনের ব্যবসায়িক সুবিধার কারণে তার বিভিন্ন দেশের মানুষই সিঙ্গাপুরে নিজেদের ব্যবসা স্থানান্তর করতে চায়। তাদের জন্য রয়েছে সিঙ্গাপুরের গ্লোবাল ইনভেস্টর প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্যও আবেদন করা যায়। এই প্রোগ্রামের অধীনে তিনটি অপশন রয়েছে।
১। অন্তত তিন বছরের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা।
২। সিঙ্গাপুরের কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নূন্যতম ১ কোটি সিঙ্গাপুরিয়ান ডলারের বিনিয়োগ।
৩। অন্তত ৩০ জন কর্মী নিয়োগ যার ভেতর অন্তত ১৫ জন সিঙ্গাপুরিয়ান।
১। বার্ষিক ২০০ মিলিয়ন সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার সমমূল্যের নিজস্ব কোম্পানি।
২। সিঙ্গাপুরিয়ান কোম্পানিতে ২৫ মিলিয়ন সিঙ্গাপুরিয়ান ডলারের বিনিয়োগ।
১। প্রাইভেট কোম্পানি হলে আবেদনকারীর ঐ কোম্পানিতে অন্তত ৩০% মালিকানা থাকতে হবে।
২। সিঙ্গেল ফ্যামিলি অফিস এর ক্ষেত্রে মূল্যমান নূন্যতম ২০০ মিলিয়ন ডলার সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার হতে হবে।
এসব শর্তের বাইরেও প্রতিটি অপশনে আরও অসংখ্য শর্ত রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে কিছু অনুমোদিত ব্যবসায়িক খাত। সে সকল খাতের বাইরে এই প্রোগ্রামটি প্রযোজ্য না। তার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য খাত হলোঃ
১। অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং
২। অল্টারনেটিভ এনার্জি
৩। অটোমেটিভ
৪। কেমিক্যাল
৫। এনার্জি
৬। হেলথকেয়ার
৭। লজিস্টিচকস
৮। মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং
৯। মিডিয়া
১০। মেডিকেল টেকনোলজি
১১। শিপিং
১২। স্পোর্টস ইত্যাদি।
মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশগুলোতে বাংলাদেশীদের আনাগোণা সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত অন্যতম। অন্য অনেক দেশের মতই বিশাল আকারের বিনিয়োগ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসের ভিসা পাওয়া যায়। এছাড়াও সেখানে অনেক বাঙালী ব্যবসায়ী থাকায় বাংলাদেশীদের ভরসার স্থলটিও বেশি। বিশেষত দুবাই রাজ্যে প্রচুর সংখ্যক বাঙালীর বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর ঠিক সেজন্যই বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসায়িক মাইগ্রেশনের গন্তব্য হিসেবে দুবাইকে বেছে নেন। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্যবসা স্থানান্তর বা বিনিয়োগ করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট ভিসার অধীনে করতে হয়। যেমনঃ
১। গোল্ডেন ভিসা সাধারণত বড় মাপের বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা, গবেষক ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গকে দেওয়া হয়ে থাকে।
২। এই ভিসার মেয়াদ ৫-১০ বছর।
৩। এই ভিসার অধীনে একজন বিনিয়োগকারীকে নূন্যতম ২০ লক্ষ দিরহাম বিনিয়োগ করতে হয়।
৪। এই ভিসা পেলে যেকোনো ধরনের স্পন্সর বা চাকরিদাতা ছাড়াই একজন ব্যক্তি সংযুক্ত আরব আমিরাতে স্বাভাবিক ভাবে বসবাসের অধীকার লাভ করে।
১। বিনিয়োগকারীদের কথা মাথায় রেখে বিশেষ ভাবে বানানো।
২। সাধারণ মেয়াদ ৩ বছর।
৩। মেডিকেল টেস্টে পাশ করতে হয়।
৪। নূন্যতম ১০ লক্ষ দিরহাম সমমূল্যের বিনিয়োগ করতে হবে।
১। যারা আরব আমিরাতে নতুন ব্যবসা চালু করতে চায় তাদের জন্য এই ভিসা আদর্শ।
২। সাধারণত ২ বছর মেয়াদী হয়ে থাকে।
৩। পর্যাপ্ত মূলধনের প্রমাণ দাখিল করতে হয়। এছাড়াও ব্যক্তিগত খরচ চালানোর সামর্থ রয়েছে এমন প্রমাণ ও দাখিল করতে হয়।
৪। ব্যবসায়ের বিস্তারিত পরিকল্পনা দাখিল করতে হয়। এক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বীকৃত কোনো বিজনেস ইনকিউবেটর থেকে পরিকল্পনাটিকে স্বীকৃত হতে হয়।
মূলত এই তিন ধরনের ভিসার মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্যবসায়িক মাইগ্রেশন করা সম্ভব।
বর্তমান যুগ বৈশ্বিক যুগ। এই যুগে মানুষ যেমন এক দেশে আটকে নেই, তেমনই ব্যবসাও যে আটকে থাকবে না তা বলাই বাহুল্য। তবে ভাল কোনো দেশে বিজনেস মাইগ্রেশন করতে হলে প্রয়োজন প্রচুর অর্থের। বাংলাদেশের আইন অনুসারে আবার সে বিনিয়োগের পরিমাণ যেহেতু মোট সম্পদের ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। তাই খুব অল্প প্রতিষ্ঠানই বিপুল আকারে বাইরের দেশে বিনিয়োগ করতে পারে। একই সাথে রয়েছে টাকা পাচারের বিশাল ঝুঁকি। সব মিলিয়ে বর্তমান প্রেক্ষিতে আইনগত ভাবে ভিনদেশে বিনিয়োগ কিছুটা কঠিন হলেও, আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যতে এ সকল আইনী জটিলতার সমাধান হবে।
06-11-2024
International
মার্ক জাকারবার্গ, যিনি প্রযুক্তি জগতে ফেসবুক প্রতিষ্ঠা...
Read More05-11-2024
International
বাংলাদেশের ই-কমার্স এবং অনলাইন মার্কেটিংয়ের জগতে নতুন...
Read More04-11-2024
International
বাংলাদেশ ও ভারত—দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.