Home » MAWblog » International » কেমন হতে যাচ্ছে ট্রাম্পের শাসনামল?
International
Written by: এস এম নাহিয়ান
02-02-2025
ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের দায়িত্ব নেওয়ার দিন দশেক হয়ে গেছে। গত ৫ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই চলছিলো জল্পনা-কল্পনা। ট্রাম্প কি করবে, কি প্রভাব ফেলবে। গত ২০ তারিখ ক্ষমতা গ্রহণ করেই ট্রাম্প প্রমাণ করে দিলেন তার ক্ষমতা সেসব জল্পনা-কল্পনা থেকেও বেশি। প্রথম ২৪ ঘন্টাতেই তিনি ২৮টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। যা বলতে গেলে নজিরবিহীন। এর ভেতর অভিবাসন সংক্রান্ত ৬টি, জ্বালানী সংক্রান্ত ৩টি, সরকারের কাঠামো সংক্রান্ত ১৪টি, অপরাধ সংক্রান্ত ৪টি এবং অর্থনীতি সংক্রান্ত ১টি আদেশ রয়েছে।
এর প্রভাব যে শুধু আমেরিকাতে পড়ছে তা নয়। বরং এরই মধ্যে চীন, মেক্সিকো, কানাডা, কলাম্বিয়া সহ বিভিন্ন দেশের সাথে সংঘাতের স্ফুলিঙ্গ উঠেছে। এমনকি জাতিসংঘের মহাসচিব অবধি ট্রাম্পকে অনুরোধ করছেন তার সিধান্ত আবার ভেবে দেখার জন্য। সব মিলিয়ে বলা যায়, সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে ‘ট্রাম্প ওয়েভ’।
ট্রাম্পের প্রথম শকটি ছিল সকল প্রকার ইউএসএইড ফান্ডিং বন্ধ করে দেওয়া। বিশ্বের যেই কয়টি দেশে ইউএসএইড এর অধীনে বিভিন্ন প্রজেক্ট চলমান ছিলো, সেগুলো আগামী ৯০ দিন কোনো ফান্ডিং পাবে না; এমনটাই বলেছেন ইউএস সেক্রেটারি অফ স্টেট, মার্কো রুবিয়ো।
ইউএসএইড প্রোগ্রামের অধীনে বর্তমানে ২৫টি দেশে বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট চলমান। এর ভেতর বাংলাদেশও অন্যতম। ২০২৩ সালে এই প্রোগ্রামের পেছনে আমেরিকা প্রায় ৩৮.১ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। কিন্তু ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির কারণে অন্য দেশকে সাহায্যের ব্যাপারে এত উদার থাকছে না আমেরিকা।
এই সিধান্তের কারণে বাংলাদেশের উপরেও কিন্তু ভালই প্রভাব পড়বে। কারণ এশিয়ার ভেতর বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি ফান্ডিং দিয়ে থাকে ইউএসএইড। কৃষিখাত থেকে শুরু করে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, পরিবেশ, এনার্জি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি বিভিন্ন খাতে ইউএসএইডের বড় অবদান আছে। সবচেয়ে বেশি অবদান আছে রোহিঙ্গা খাতে। কারণ রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণের যে খরচ, তার বড় একটি অংশ আসে এই ইউএসএইড থেকে। তাই আগামী তিন মাস এই সাহায্য বন্ধ থাকলে যে, ফলাফল খুব একটা মধুর হবে না, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে।
তবে বাংলাদেশের থেকেও অনেক বেশি বিপদে আছে আরেকটি দেশ। সেটি ইউক্রেন। বলতে গেলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকা ও পুরো ইউরোপ মিলে ইউক্রেনকে লাইফসাপোর্ট দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে। আর সেই লাইফসাপোর্টের সবচেয়ে বড় অংশ ছিলো আমেরিকা।
কিন্তু ইউএসএইড বন্ধ হওয়ায় ইউক্রেনে চলমান বিভিন্ন এনজিও পুরোপুরি থেমে গিয়েছে। বন্ধ হচ্ছে অসংখ্য চিকিৎসা, সমাজসেবা ও মানবাধিকার সংগঠন। এমনকি এমন গুঞ্জন উঠেছিলো যে ইউক্রেনের সামরিক সাহায্যও বন্ধ করে দেবে আমেরিকা। কিন্তু সেটি এখনও হয় নি।
তবে কতদিন সামরিক সাহায্য চালু থাকবে, সেটিই দেখার বিষয়। কারণ ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের বক্তব্য হলো, সে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। সুতরাং সব মিলিয়ে আমেরিকার সাহায্য ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তো সমস্যায় পড়েছেই, তার ভেতর সবচেয়ে বেশি ভুগছে ইউক্রেন।
আগের বারের মতো এবারও অভিবাসীদের উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করছে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্প এমনকি ইমিগ্রান্ট শব্দটিও বলেন না। বলেন ‘এলিয়েন’। তার দৃষ্টিতে অবৈধ অভিবাসীরা আমেরিকার সবচেয়ে বড় অভিশাপ।
গতবার মেক্সিকোর বর্ডারে বিশাল বেড়া নির্মাণের প্রকল্প শুরু করেছিলেন। এবার ক্ষমতায় বসেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ‘জরুরি অবস্থা’ জারি করেছেন ট্রাম্প। কারণ? অভিবাসী সমস্যা। বুঝতেই পারছেন, ট্রাম্প এই সমস্যাকে কতটা গুরুত্ব দিলে এর জন্য জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়।
শুধু তাই নয়, লাতিন আমেরিকার নাগরিকদের দ্বারা পরিচালিত গ্যাং ও কার্টেলগুলোকে বৈদিশিক জঙ্গী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প । এসবের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে জন্মালে জন্মসূত্রে আমেরিকান হওয়ার যে সুযোগ, তাও বন্ধ করে দিচ্ছেন ট্রাম্প।
এই অভিবাসন নীতির কারণে সারা বিশ্বজুড়ে বেশ বড়সড় প্রভাব পড়তে চাচ্ছে। কারণ পুরো পৃথিবীর সবচেয়ে ব্রিলিয়ান্ট মানুষগুলোর আমেরিকারে পাড়ি জমানোর সবচেয়ে বড় কারণ এর অভিবাসন নীতি। কিন্তু তা যদি অতিরিক্ত কঠিন হয়ে যায়, যদি স্থায়ী জীবনের আশা আর না থাকে, সেক্ষেত্রে অন্য দেশগুলো হয়তো পছন্দের তালিকায় উপরে উঠে আসবে।
ট্রাম্পের গত আমলের মতো এবারের আমলেও বাণিজ্য যুদ্ধ নিয় শঙ্কায় ছিলেন ব্যবসায়ীরা। আর ঠিক হচ্ছেও তাই। ক্ষমতায় এসেই ট্রাম্প বলে দিয়েছেন যে চীনা পণ্যের উপর অন্তত ১০% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করতে চান তিনি।
আর বলা বাহুল্য যে, এমনটি হলে চীনও বসে থাকবে না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর কিছুটা সুযোগ বৃদ্ধি পাবে আমেরিকান মার্কেট ধরার। কিন্তু দিন শেষে কাঁচামাল এবং অন্যান্য প্রযুক্তির জন্য চীনের উপর নির্ভরশীল হতেই হয়। তাই চীনও সেগুলোর দাম বাড়াবে না, তার কিন্তু কোনো গ্যারান্টি নেই।
সব মিলিয়ে বিশ্ব বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির একটি সমূহ সম্ভাবনা আছে। যা খুব একটা ভাল হয়তো হবে না।
তবে শুধু চীন নয়, কলাম্বিয়ান পণ্যের উপরেও ২৫% শুল্ক আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। আরেকটু হলে সে আদেশ বাস্তবায়নও হয়ে যেতো। কিন্তু এ বাণিজ্য যুদ্ধের শুরুটা কিন্তু আবার হয়েছে অভিবাসন সমস্যা থেকে। ট্রাম্প প্রশাসন দুই প্লেন ভর্তি করে অবৈধ অভিবাসীদের কলাম্বিয়া পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিলো। তাদের দাবি এতে রাজিও ছিল কলাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট।
কিন্তু আমেরিকার বিমান দুটো কলাম্বিয়ার আকাশে পৌছালে তাদের ল্যান্ড করতে দেওয়া হয় নি। এ নিয়ে কলাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি কখনোই কলাম্বিয়ানদের দুই হাতে হাতকড়া পড়া অবস্থায় এভাবে দেশে ফেরাতে পারি নি’। কিন্তু এর ফলে ভয়ানক চটেছে ট্রাম্প। ফলস্বরুপ প্রায় তাৎক্ষণিক ভাবে সকল কলাম্বিয়ান পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক বসানোর নির্দেশ আসে। এর জবাবে কলাম্বিয়ার প্রেসিডেন্টও সকল আমেরিকান পণ্যের উপরে একই পরিমাণ শুল্ক আরোপের নির্দেশ দেয়।
যদিও শেষ অবধি সমঝোতার মাধ্যমে এই সমস্যা মেটানো গেছে। কিন্তু আরেকটু হলেই কলাম্বিয়ার সাথেও বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছিলো আমেরিকা।
এসব তো গেলো ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরের কথা। কিন্তু ক্ষমতায় আসার আগেই ট্রাম্পের হুমকি, ভীত নড়িয়ে দিয়েছে খোদ কানাডার। যেখানে কানাডা বরাবরই আমেরিকার অন্যতম বন্ধু রাষ্ট্র। কিন্তু এই বন্ধুত্বের খোলসে কানাডা বরাবরই বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমেরিকার কাছ থেকে অতিরিক্ত সুবিধা আদায় করছে। এমনটাই মনে করেন ট্রাম্প।
তাই ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগেই গত নভেম্বরে কানাডাকে এক প্রকার আক্রমণ করে বসেন। এমনকি অফিসিয়াল একাউন্ট থেকে কানাডাকে আমেরিকার অন্তর্ভুক্ত করে ম্যাপও প্রকাশ করেন। তার বক্তব্য অনুসারে, কানাডা যা তৈরি করে, তা আমেরিকাও তৈরি করে। তাই শুধু শুধু তাদের কাছ থেকে পণ্য কেনার দরকার নেই আমেরিকার। বরং ২৫% শুল্ক বসালে আমেরিকার লাভ।
ট্রাম্পের এসব বক্তব্যের কারণে কানাডার রাজনীতিতে আসে বিশাল পট পরিবর্তন। দীর্ঘদিন যাবত অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ক্রমেই দুর্বল হচ্ছিলেন জাস্ট্রিন ট্রুডো। ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল শলতের আগুন। এই বক্তব্যের কিছুদিন পরেই ট্রুডোর উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিনা ফ্রিল্যান্ড পদত্যাগ করেন। কারণ তার কাছে মনে হচ্ছিলো ট্র্যুডো ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের চাপ ভালভাবে সামলাতে পারছিলেন না। এরপর ট্র্যুডোর নিজের দল থেকেই তার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করা হয়।
শেষমেষ গত ৬ই জানুয়ারি লিবারেল দলের নেতা, ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করার সিধান্ত জানান ট্র্যুডো। নতুন নেতা খুঁজে বের করার আগ অবধি আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে কানাডার সংসদ। অর্থাৎ শেষকথা হলো, ট্রাম্পের ক্ষমতার আসার আগের বক্তব্যই এত শক্তিশালী ছিল যে, তা কানাডার রাজনৈতিক পট পরিবর্তন এনে দিয়েছে।
প্রথমবারের মতো এবারও ট্রাম্প এসেই আমেরিকাকে ‘প্যারিস ক্লাইমেট এগ্রিমেন্ট’ থেকে সরিয়ে নিয়েছে। এটি মূলত জাতিসংঘের ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ কনফারেন্সে ১৯৬টি দেশের উপস্থিতিতে করা একটি চুক্তি। এই প্যারিস চুক্তিকে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্রধান চুক্তি হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু ট্রাম্পের বক্তব্য হচ্ছে এর মাধ্যমে আমেরিকার অর্থনীতি ঝুঁকির মুখে পড়বে। জলবায়ুকে বাঁচাতে যেই ধরনের পদক্ষেপ আমেরিকার নেওয়া প্রয়োজন, তা নিতে সম্পূর্ণ অস্বীকৃতি জানিয়েছে ট্রাম্প।
শুধু প্যারিস চুক্তি না, বরং ’ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন’ থেকেও সরে এসেছে আমেরিকা। ট্রাম্পের বক্তব্য খুবই সহজ। আমেরিকা প্রতি বছর বিশ্বস্বাস্থ্যের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে আসছে। যেখানে আমেরিকার জনসংখ্যা মাত্র ৩৫ কোটি সেখানে চীনের জনসংখ্যা ১৪০ কোটির বেশি। কিন্তু চীন প্রতি বছর মাত্র ৩৯ মিলিয়ন ডলার দিয়ে থাকে। ট্রাম্পের দৃষ্টিতে এটা বৈষম্য। ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জন্য আমেরিকার বিশাল ফান্ডিং বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাম্প। একই সাথে সেখানে কর্মরত সকল আমেরিকান সরকারি কর্মচারীকে ফেরত নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প। তার এই সিধান্ত পুরো বিশ্বে, বিশেষত নিম্ন আয়ের দেশগুলোর স্বাস্থ্যখাতে বেশ প্রভাব ফেলবে।
সবশেষে একটা কথাই বলা যায়। ট্রাম্পের শাসন কেমন হবে সেটার উত্তর ট্রাম্প নিজেই দিয়ে দিয়েছে। তার পলিসি হলো ‘আমেরিকা ফার্স্ট’। অর্থাৎ তার প্রধান লক্ষ্য হবে আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা। আপাতদৃষ্টিতে সেটাই যুক্তিযুক্ত। কিন্তু এক্ষেত্রে বলতেই হয়, আমেরিকা নিজের স্বার্থ রক্ষায় সমস্ত সাহায্য বন্ধ করে দিলেও, বিশ্বমোড়ল হিসেবে তারা যেই সুবিধা পায়, তা কিন্তু বন্ধ করতে চাবে না। অর্থাৎ তাদের সুবিধা গুলো তারা ঠিকই আদায় করে নেবে। কিন্তু বৈশ্বিক পর্যায়ে আমেরিকার সাহায্যের হার একদমই কমিয়ে দেবে ট্রাম্প। এছাড়াও সার্বিক ভাবে ট্রাম্পের শাসনামল হবে অনেক বেশি দৃড় ও আক্রমণাত্নক, তা বলাই বাহুল্য।
তথ্যসূত্র
১। বিবিসি (১)
২। বিবিসি (২)
৩। বিবিসি (৩)
৪। কেসিএল
৫। আলজাজিরা
৬। সিএনএন (১)
৭। সিএনএন (২)
৮। সিএনএন (৩)
৯। ডেভেক্স
১০। চ্যাথাম হাউজ
১১। ইউএসএ টু’ডে
১২। গার্ডিয়ান
১৩। ইউএসএইড
১৪। সিবিসি
১৫। স্টেট নিউজ
12-02-2025
International
সিআইএ, নামটা শোনেননি এমন কেউ হয়তো নেই। পৃথিবীর সেরা...
Read More21-01-2025
International
আইজাক নিউটনকে আধুনিক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়।...
Read More22-12-2024
International
বিগত এক দশকে, ক্রিপ্টোকারেন্সি বিশ্বের অর্থনৈতিক এবং...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
International...
03-10-2024
International...
24-11-2024
Miscellaneous...
30-09-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.