Home » MAWblog » Sustainable Development » দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভাঃ বাংলাদেশে কি আদৌ সম্ভব?
Sustainable Development
Written by: এস এম নাহিয়ান
27-01-2025
ছোটবেলায় সমাজ বইয়ে আমরা নিশ্চয়ই পড়েছি অনেক আইনসভা হয় দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট। এর সংজ্ঞা মুখস্থ করে হয়তো পরীক্ষায় ভাল নাম্বারও পেয়েছি। কিন্তু আসলে কি অনুধাবন করেছি দ্বিকক্ষ আইনসভা আসলে কি? একটা রাষ্ট্রের জন্য এর দরকারই বা কোথায়?
আগে প্রয়োজন না থাকলেও এখন অনুধাবনের সময় এসেছে। কারণ এই কিছুদিন আগেই, জানুয়ারি ১৫ তারিখে সংবিধান সংস্কার কমিটির পক্ষ থেকে প্রস্তাব গেছে যাতে বাংলাদেশের সংসদকে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট করা হয়। এই প্রস্তাবনা অনুযায়ী বাংলাদেশের সংসদে আসন থাকবে মোট ৫০৫ টি। এর ভেতর ৪০০টি সাধারণ আসন এবং ১০৫টি সংরক্ষিত আসন। হয়তো আগামী নির্বাচনের পরের নির্বাচনেই বাংলাদেশ এ পথে হাটবে। তাহলে চলুন জানা যাক দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা আসলে কিভাবে কাজ করবে।
দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ যেভাবে কাজ করে
দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা বা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, এমন এক ধরনের সংসদ যেখানে সংসদ সদস্যরা দুই ভাগে বিভক্ত থাকেন। এই দুইটি ভাগকে বলা হয় উচ্চ কক্ষ ও নিম্ন কক্ষ। যেকোনো আইন অথবা সিধান্ত প্রথমে নিম্ন কক্ষে আলোচিত হয়। অতঃপর তা উচ্চ কক্ষে প্রেরণ করা হয়। দুইটি কক্ষ থেকেই অনুমোদন মিললে তবেই কোনো আইন পাশ হয়।
এই দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের জনক হলো ইংল্যান্ড। অবশ্য শুধু দ্বিকক্ষ সংসদের কথা বললে ভুল হবে। বাস্তবে সকল সংসদেরই জন্ম ইংল্যান্ডের সংসদকে অনুসরণ করে। এজন্য একে ‘মাদার অফ পার্লামেন্টস’ (Mother of Parialiaments) ও বলা হয়ে থাকে।
এই ইংল্যান্ডের সংসদও কিন্তু দুইটি কক্ষে বা দুইটি ভাগে বিভক্ত। এর নিম্ন কক্ষকে বলা হয় ‘হাউজ অফ কমন্স’ এবং উচ্চকক্ষকে বলা হয় ‘হাউজ অফ লর্ডস’। যদি ব্রিটিশ নিয়ম অনুসারে সংসদের দুইটি কক্ষের কাজ ব্যখ্যা করতে যাই, তাহলে তা হবে অনেকটা এরকম।
নিম্ন কক্ষ
এ কক্ষের সদস্যরা জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন। এই কক্ষের সদস্যদের মধ্যে যেই রাজনৈতিক দলের বেশি প্রার্থী থাকে, সেই দলই সরকার গঠন করে। মানে বাংলাদেশে যেমন ৩০০টি আসনের মধ্যে যারা বেশী আসন পায়, তারাই সরকার গঠন করে, বিষয়টা সেরকমই।
নিম্নকক্ষের সদস্যরা সাধারণত রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ করেন, নতুন আইন প্রণয়ন করেন, অথবা পুরোনো আইন সংস্কার করেন। এই নিম্নকক্ষে সরকারি মন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী, সকলেই উপস্থিত থাকেন। এছাড়াও যেকোনো অর্থনৈতিক বিষয়ে নিম্নকক্ষের কথাই শেষ কথা। অর্থাৎ অর্থনৈতিক বিলসমূহ, যেমন নতুন ট্যাক্স প্রণয়ন করার কাজগুলো করে থাকে নিম্ন কক্ষ। এ বিষয়ে উচ্চ কক্ষের বাঁধা দেওয়ার এখতিয়ার নেই।
উচ্চ কক্ষ
উচ্চ কক্ষকে বলা হয় দ্বিতীয় সংসদ। মূলত এটি একটি স্বতন্ত্র অংশ যা সরকারি দল সহ প্রধান বিরোধী দল এবং অন্যান্য জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিত্ব করে। ব্রিটিশ সংবিধান অনুসারে এ কক্ষের সদস্যরা সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত নন। বরং ব্রিটিশ নিয়মে উচ্চ কক্ষের সদস্যদের ‘পিয়ারেজ’ এর ভিত্তিতে নিযুক্ত করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ সমাজের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ হয়ে থাকেন হাউজ অফ লর্ডস এর সদস্য। । নিম্ন কক্ষ থেকে পাস হওয়া যেকোনো আইন অবশ্যই উচ্চ কক্ষের কাছে আসতে হয়। এরপর উচ্চকক্ষের সদস্যদের ঐক্যমত বা ভোটাভুটির ভিত্তিতে আইনটি চূড়ান্ত ভাবে পাস হয়।
চিত্রঃ ব্রিটিস হাউজ অফ লর্ডস
কিন্তু ব্রিটিশ পদ্ধতির বাইরেও আরও বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চকক্ষকে বলা হয় সিনেট। আর সিনেটের সদস্যরা সবাই সরাসরি ভোটে নির্বাচিত। অর্থাৎ এটি প্রত্যক্ষ পদ্ধতি।
অন্যদিকে ভারতের উচ্চকক্ষ পরিচিত ‘রাজ্য সভা’ নামে। এই রাজ্য সভার সদস্যরা আবার নিম্নকক্ষের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত। অর্থাৎ ভারতে চলছে পরোক্ষ পদ্ধতি।
আবার আরেকটি পদ্ধতি হলো মোট ভোটের শতকরা হারের উপর নির্ভর করে সদস্য নির্বাচন করা। অর্থাৎ কোনো দল যদি জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটের ৩০% পেয়ে থাকে, তবে উচ্চ কক্ষে তাদের ৩০% প্রতিনিধি থাকবে। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট শাসনব্যবস্থায় উচ্চ কক্ষ ও নিম্ন কক্ষের কাজ মোটামুটি সকল দেশেই এক। কিন্তু উচ্চ কক্ষের সদস্যরা কিভাবে নির্বাচিত হবেন, তাতেই হয়ে থাকে প্রধান তফাত।
কোন কোন দেশে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা রয়েছে
সম্প্রতি বাংলাদেশ দ্বিকক্ষ ব্যবস্থার দিকে যেতে চাচ্ছে বলে, অনেকেই ভাবছেন বিশ্বে আসলে কয়টি দেশে এমন ব্যবস্থা আছে। অবাক মনে হলেও, বিশ্বের প্রায় ৪০% আইনসভা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট। বাকি ৬০% এককক্ষ।
চিত্রঃ পৃথিবীতে আইনসভার ধরন
এই মানচিত্রটিরঃ
নীল অংশে দ্বিকক্ষ আইনসভা রয়েছে
কমলা অংশে এককক্ষ আইনসভা রয়েছে
টিয়া অংশে এককক্ষ আইনসভা ও উপদেশক প্রতিষ্ঠান রয়েছে
কালো অংশে আইনসভা নেই
ধূসর অংশ তথ্যবিহীন
অর্থাৎ বুঝতে পারছেন যে, এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা মূলত এশিয়া, মধ্য প্রাচ্যের কিছু দেশ এবং আফ্রিকার এক-দুইটি দেশে জনপ্রিয়।
কেন দরকার?
এখন প্রশ্ন হলো, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থায় যেয়ে সুবিধাটা কি? এই প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই নির্ভর করে বাংলাদেশ কোন পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের সদস্যদের নির্বাচন করতে যাচ্ছে তার উপর।
উচ্চকক্ষ
গত ১৫ জানুয়ারির প্রস্তাবে সংবিধান সংস্কার কমিটির পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব’ ব্যবস্থার। এ প্রস্তাবে উচ্চকক্ষের সদস্য সংখ্যা মোট ১০৫ জন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
এর ভেতর সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করতে স্বয়ং রাষ্ট্রপতি ০৫জন সদস্যকে সরাসরি নিয়োগ দেবেন। বাকি ১০০ জন হবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দ্বারা নিযুক্ত। এক্ষেত্রে প্রতিটি দল জাতীয় নির্বাচনে মোট যত শতাংশ ভোট পেয়েছে, ওই শতাংশ সদস্যকে নিযুক্ত করতে পারবে।
উচ্চকক্ষের স্পিকার সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে। অন্যদিকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হবেন সরকার দলীয় বাদে অন্য উচ্চকক্ষের সদস্যদের মধ্যে থেকে।
চিত্রঃ বাংলাদেশের বর্তমান নির্বাচনী এলাকার মানচিত্র
বর্তমান প্রস্তাবনা অনুযায়ী নিম্নকক্ষের মোট সংসদ সদস্য থাকবেন ৪০০ জন। এর মধ্যে ৩০০ জন আঞ্চলিক সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে। বাকি ১০০ জন নারী সদস্য সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত হবেন। এছাড়াও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হলো সংসদ সদস্য হওয়ার নূন্যতম বয়স ২১ বছরে নামিয়ে আনা।
এর বাইরে রয়েছে আরও কিছু পরিবর্তন। যেমন, দুইজন ডেপুটি স্পিকারের ভেতর অন্তত একজন বিরোধী দলের মনোনীত করতে হবে। সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী, সংসদনেতা ও রাজনৈতিক দলের প্রধান, এই তিনটির যেকোনো একটি পদ গ্রহণ করতে পারবেন। অর্থাৎ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ধারা থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং দলের চেয়ারপারসন হবেন আলাদা ব্যক্তি। এর মাধ্যমে কোনো এক ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ চিরতরে খর্ব হবে।
এছাড়াও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে আরও সংস্কারের কথা বলছে সংস্কার কমিশন। অর্থবিল ব্যাতীত বাকি সব বিলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার স্বাধীনতা সংসদ সদস্যদের দেওয়া হবে। অর্থাৎ নিম্ন কক্ষের একজন সদস্য চাইলে তার নিজের দলের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধেও অবস্থান করতে পারবে। এছাড়াও আইনসভার স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতিও নির্ধারণ করতে হবে বিরোধীদল থেকে।
মোটামুটি এ সকল পরিবর্তনের লক্ষ্য একটাই, ভবিষ্যতে যেন স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ যথাসম্ভব কমে আসে। কারণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বারে বারে দেখা গেছে যে পুরো দেশের রাজনীতি হয়ে যায় ব্যক্তিকেন্দ্রিক। আর এই ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতির ভুক্তভোগী হয় সমগ্র প্রশাসন ও সারা দেশের মানুষ।
চিত্রঃ ড. আলী রিয়াজ
যদি দ্বিকক্ষ আইনসভা বাংলাদেশে চালু হয় তাহলে এই ক্ষমতার কেন্দ্রীভূত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমবে। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেই বিষয়, সেটি হলো, বাংলাদেশের ইতিহাসে সকলের অংশগ্রহণে কখনোই কোনো রাজনৈতিক দল বৈধ ভাবে ৪০% এর বেশি ভোট পায় নি। এ বক্তব্য সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রধান ড. আলী রিয়াজের।
এক্ষেত্রে শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠ দল দিয়ে সরকার গঠন করলে দেশের বাকি জনগোষ্ঠীর মতামত উপেক্ষা করা হয়। এই গণতান্ত্রিক দুর্বলতাকে কমিয়ে আনতে পারে দ্বিকক্ষ আইনসভা। কারণ উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচিত হবে মোট প্রাপ্ত ভোটের উপর নির্ভর করে। ফলে চাইলেই সরকারপক্ষ কোনো আইন অযৌক্তিক ভাবে পাশ করতে পারবে না। একই সাথে সকলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।
এছাড়া আইন কয়েক পক্ষ দ্বারা রিভিউ হওয়াতে আইনের ফাঁকফোকরও কমে আসবে। সব মিলিয়ে এসবের প্রেক্ষিতে, একটা চেক অ্যান্ড ব্যালান্স আনতেই বাংলাদেশে দ্বিকক্ষ আইনসভার প্রচলন হতে যাচ্ছে।
সমস্যা কোথায়?
কিন্তু দ্বিকক্ষ আইনসভার সুবিধা যেমন আছে, সমস্যাও রয়েছে। প্রথমত এ প্রক্রিয়াতে আইন প্রণয়ন অনেকটাই ধীর গতির হয়ে পড়ে। এছাড়া উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের ভেতরে সংঘর্ষও দেখা দেওয়ার সুযোগ থাকে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, অনেক সময় বৈষম্য নিরসন করতে গিয়ে স্বল্প জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা সংখ্যাগরিষ্ঠদের জিম্মি করে ফেলে।
এসবের বাইরেও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা একটি অত্যন্ত খরুচে প্রক্রিয়া। এর ফলে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া যেমন জটিল হবে, তেমনই এর খরচ বাড়বে। এছাড়াও বাংলাদেশের মতো বুর্জোয়া দেশে প্রশাসনিক খরচ আকাশ ছোঁয়া। সরকারি আমলাদের স্বদিচ্ছা ছাড়া প্রশাসনিক খরচ কমানোর আশা তাই দুরাশা।
শেষকথা
পরিশেষে এইটুকু বলা যায়, দ্বিকক্ষ আইনসভা এদেশের স্বেচ্ছাচারিতা ও একনায়কতন্ত্রের যে রাজনীতি, তাতে রাশ টেনে ধরবে। কিন্তু রাশটা ঠিক কতটা শক্তিশালী হবে সেটিই এখন প্রশ্ন। এছাড়াও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা এমন একটি জিনিস যা চাইলেই প্রবর্তন করা সম্ভব না। কারণ এর জন্য প্রয়োজন সংবিধান সংস্কার। এবং বর্তমান সরকারের হাতে সংবিধান সংস্কারের কোনো ম্যান্ডেট নেই। তাই নির্বাচিত সরকার আসার আগে সংবিধান সংস্কার এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা প্রণয়ন, কোনোটাই আসলে সম্ভব নয়।
তথ্যসূত্রঃ
১। কালবেলা
২। বাংলানিউজ ২৪
৩। চ্যানেল ২৪
৪। টিবিএস
৫। ঢাকা ট্রিবিউন
৬। ডেইলি স্টার
৭। ইউকে পার্লামেন্ট
08-01-2025
Sustainable Development
রঙ বেরঙের পোস্টার, উচ্চ স্বরে মাইকের আওয়াজ, পথে ঘাটে বিকট...
Read More12-11-2024
Sustainable Development
বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বহু দশক ধরে বিকশিত...
Read More27-10-2024
Sustainable Development
ভারত নাকি চীন, বাংলাদেশের জন্য এ যেন এক চিরন্তন টানা...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
International...
03-10-2024
Miscellaneous...
30-09-2024
Miscellaneous...
20-08-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.