Print World Header Banner 2

Top 10 in Bangladesh

বাংলাদেশের সেরা ১০টি গেম ডেভেলপার কোম্পানি

Written by: এস এম নাহিয়ান

23-12-2024

বাংলাদেশের সেরা ১০টি গেম ডেভেলপার কোম্পানি

গেমস, নামটি শুনলেই অনেকের মধ্যে হয়তো একটা ভাল লাগা কাজ করে। সত্যি বলতে, এ দশকের সবচেয়ে সহজলভ্য বিনোদন মাধ্যমের মধ্যে গেমিংই হয়তো সবচেয়ে এগিয়ে থাকবে। অনেকের ছোট বেলার একটি বিশাল অংশ জুড়ে আছে গেমের দোকানে যেয়ে গেম খেলার স্মৃতি। তখন অনেকের বেলায় গেমের দোকানে যাওয়া ছিল গর্হিত অপরাধ। কেউ বা আবার স্কুল পালিয়ে সারাদিন গেমের দোকানে বসে থাকতো। 


কালের পরিক্রমে দোকানে যেয়ে আর্কেড গেমের যুগ বহু আগেই শেষ। এরপরে এসেছে ডেস্কটপে গেম খেলার যুগ। সে যুগের পর এখন মোবাইল গেমিং এর যুগ। কম্পিউটার, মোবাইল, কনসোল, নিন্টেডো, সব মাধ্যমেই এখন গেম সহজলভ্য। এক সময়ের নিড ফর স্পিড থেকে শুরু করে হালের ভ্যালোরেন্ট, সবই চলছে দেদারসে। 


কিন্তু কখনো কি মনে প্রশ্ন জাগে যে কারা এই গেম গুলো বানায়? বিশ্ব জুড়ে যে এত শত গেমিং কোম্পানি, বাংলাদেশেও কি সেরকম কোনো কোম্পানি আছে? উত্তরটি হলো, আছে। শুধু আছে বললে ভুল হবে, বাংলাদেশের গেমিং ইন্ডাস্ট্রির মার্কেট ভ্যালু ৬০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। 


আর এই গেমিং ইন্ডাস্ট্রির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ গেম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি গুলো। আর আজকের লেখা তেমনই ১০টি দেশীয় গেম ডেভেলপারদের কে নিয়ে। 


১। আত্রিতো এম৭ প্রডাকশনস (Attrito M7 Productions) 

বাংলাদেশে তৈরি সবচেয়ে উঁচু মানের গেমটি সম্ভবত ‘জিরো আওর’ (Zero Hour)। আর এই গেমটি তৈরির পেছনে রয়েছে  আত্রিতো ও এম৭ প্রডাকশনস। এই দুইটি কিন্তু মূলত আলাদা দুইটি কোম্পানি। ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো এই দুইটি কোম্পানি একটি মিটিং এর মাধ্যমে একসাথে হয়। 


আত্রিতোর মূল কাজ ছিল আর্কিটেকচারাল ভিজুয়ালাইজেশন প্রজেক্ট (Architectural Visualization Project)। অন্যদিকে এম৭ এর বিশেষত্ব ছিল ভিডিও গেমসমূহের জন্য বিভিন্ন এলিমেন্ট বা এসেট তৈরি করা। দুটো কোম্পানি যেন একে অপরের জন্যই তৈরি। 


তাদের যৌথ যাত্রার শুরু ২০১৯ সালে। পরবর্তীতে ২০২০ সালে এই দুইটি কোম্পানি মিলে জিরো আওয়ার তৈরির কাজ শুরু করে। সে সময়েই তৈরি হয় ‘আত্রিতো এম৭ প্রডাকশনস’। যাদের রয়েছে বাংলাদেশী গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে সেরা ট্যাক্টিকাল ফার্স্ট পারসন শ্যুটিং গেমটি তৈরি করার অভিজ্ঞতা। 



২। ন্যাপটেক ল্যাবস (Naptech Labs) 

বাংলাদেশের গেম ডেভেলপার ইন্ডাস্ট্রিতে আরেকটি বড় মুখ ন্যাপটেক ল্যাবস। তবে শুধু গেম ডেভেলপিং নয়, প্রয়োজনে আপনার হয়ে অন্য গেমের কাজও করে দেবে তারা। 


এইটিএমএল ৫ (HTML 5) গেম পাবলিশিং এর দিক থেকে প্রথম দিকেই রয়েছে ন্যাপটেক ল্যাবস। তবে এর পাশাপাশি ইউনিটি ২ডি, ইউনিটি ৩ডি, অ্যান্ড্রয়েড গেম ডেভেলপমেন্ট এও পারদর্শী তারা। গেম ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি ‘গেমিফিকেশন’ (Gamification) সার্ভিসও দিয়ে থাকে তারা। তাদের সার্ভিস গুলোর মাঝে মূল কিছু সার্ভিস হলোঃ 



১। হোয়াইট-লেবেল গেমস (White-label Games): আপনার ব্র্যান্ডের জন্য সম্পূর্ণ কাস্টমাইজ করে রেডি-মেড গেম তৈরি করে দেবে ন্যাপটেক ল্যাবস। 


২। গেম রিস্কিন (Game Reskin): ইতোমধ্যে ডেভেলপ করা গেমের স্কিন পরিবর্তন করা। অর্থাৎ গেমের ভিজুয়ালস (Visuals), থিম (Theme) ও ক্যারাক্টারের (Character) পরিবর্তন আনা। সহজ ভাষায় বলতে গেলে গেমটিকে গ্রাফিকালি মডিফাই করাটা তাদের কাজের অন্তর্ভুক্ত। 


৩। গেম লোকালিজেশন (Game Localization): এর মাধ্যমে গেমকে কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চল বা সংস্কৃতির মানুষের জন্য উপযোগী করে তোলে তারা। 


এর বাইরেও ব্র্যান্ডেড গেম (Branded Game), কাস্টম গেম (Custom Game), হোয়াইট লেবেল প্ল্যাটফর্ম (White-label Platform) এর মতো আরও বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস দিয়ে থাকে ন্যাপটেক ল্যাবস।  


৩। রাইজআপ ল্যাবস (Riseup Labs) 

রাইজআপ ল্যাবসের শুরুটা গেম ডেভেলমেন্টের মাধ্যমে শুরু হলেও বর্তমানে এটি বাংলাদেশের সেরা সফটওয়্যার ডেভেলপার গুলোর একটি। তবে সময়ের সাথে সাথে তাদের গেম ডেভেলপমেন্ট এর ধারাটিও তারা ধরে রেখেছে। তাই তাদের গেম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি বললেও কার্যত ভুল হবে না। 


রাইজআপ ল্যাবস এর প্রথম গেমটির নাম ছিল ‘ট্যাপ ট্যাপ অ্যান্টস’। পরবর্তীতে তারা খোদ ইউনিসেফ এর জন্য তৈরি করে ‘মিনা গেমস’। আর সেই মিনাকে আমরা কে না চিনি? ২০২৩ সালে ‘মিনা গেম ২’ ও নিয়ে আসে রাইজআপ ল্যাবস। 



তবে মিনা গেম ছাড়াও বিবিসি এর জন্য ফান বাস্কেট (Fun Basket), রবি-আজিয়াটা গ্রুপের জন্য ট্রেজার ওয়ার (Treasure War) তৈরি করেছে রাইজআপ ল্যাবস। এর বাইরে হাইওয়ে চেস (Highway Chase), রুফটপ ফ্রেঞ্জি (Rooftop Frenzy), ব্রেইন বস (Brain Boss), ওয়্যারহাউজ (Warehouse), বাবল অ্যাটাক (Bubble Attack) ইত্যাদি নানা টাইটেলের গেম রয়েছে তাদের। 


তবে বর্তমানে পুরোদস্তর সফটওয়্যার ডেভেলপার কোম্পানি হিসেবে কাজ করায় গেম ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি রয়েছে আরও অনেক সার্ভিস। এমনকি গেমিং ইন্ডাস্ট্রির জন্যও এনভায়রনমেন্ট ডিজাইন (Environment Design), ক্যারাক্টার ডিজাইন (Character Design) সহ আরও বেশ কিছু সার্ভিস দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। 


খুব সাম্প্রতিক সময়ে বেশ জনপ্রিয় একটি গেম ‘অ্যানিমা ফ্লাক্স’ (Anima Flux) এর ব্ল্যাক বক্স টেস্টিং এর কাজ করেছে রাইজআপ ল্যাব। 


৪। মাইন্ডফিশারস গেম (Mindfishers Game) 

হিরোস অফ ৭১, (Heroes of 71) বাংলাদেশে তৈরি অ্যান্ড্রয়েড গেমস গুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় গেম সম্ভবত ছিল এটি। মূলত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গেম হওয়াতেই এত ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল হিরোস অফ ৭১। 


হিরোস অফ ৭১ এর নির্মাতা ছিল পোর্টব্লিস (Portbliss)। কিন্তু ২০১৬ সালে পোর্টব্লিস এবং গেমওভার স্টুডিও (Gameover Studio) একত্রিত হয়ে তৈরি হয় মাইন্ডফিশারস গেম। পরবর্তীতে মাইন্ডফিশারস গেম এর ব্যানারেই ২০১৭ সালের বিজয় দিবসে মুক্তি পায় ‘মুক্তি ক্যাম্প’। 



হিরোস অফ ৭১ এর মতো মুক্তি ক্যাম্পও ছিল বিশাল জয়। দুইটি গেমই ৫০ লাখের বেশি বার ভাউনলোড হয়েছে। তবে এ সাফল্যের পেছনে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও মিডিয়া থেকে বিশাল কাভারেজ সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। মুক্তিক্যাম্প গেমটি তৈরিতে প্রায় ২ লক্ষ ৩৫ হাজার ডলার বিদেশী ফান্ডিং পেয়েছিলো কোম্পানিটি। যদিও পরবর্তীতে তা লাভজনক কোনো প্রজেক্ট হয় নি। 


তবে সমসাময়িক সময়ে মাইন্ডফিশারস গেমস নিয়ে তেমন কোনো খবর পাওয়া যায় নি। 


৫। উল্কা গেমস (Ulka Games) 

উল্কা গেমস একটি বাংলাদেশী কোম্পানি হলেও এর মূল প্রতিষ্ঠান মুনফ্রগ ল্যাবস (Moonfrog Labs) আদতে একটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান। তবে উল্কা গেমস বর্তমানে ঢাকার মহাখালী ডিওএইচএস থেকে পরিচালিত হচ্ছে। অর্থাৎ এটি রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী ও পরিচালনার দিক থেকে একটি বাংলাদেশী কোম্পানি। উল্কা গেমস এর সিইও জামিলুর রহমানও একজন বাংলাদেশি।


বাংলাদেশের শিশু-কিশোর-যুবকদের কাছে অনেক ধরনের গেম পরিচিত হলেও, এ দেশের বড় একটি অংশ এখনও গেম বলতে লুডো অথবা তাস বোঝে। আর এই উল্কা গেমস ও মুনফ্রগ ল্যাব মূলত সেই বাজারটি নিয়েই কাজ করে থাকে। তাদের তৈরি এমন কিছু গেমস রয়েছে যা বাংলাদেশের নিম্ন শ্রেণী থেকে উচ্চ শ্রেণী, সকল স্তরের মানুষের ফোনে দেখা যায়। 



তেমই দুইটি গেমস হলো লুডো ক্লাব ও তিন পাত্তি গোল্ড। এর বাইরে রয়েছে আড্ডা, ক্যারম গোল্ড, ২৯ গোল্ড, হাজারির মতো গেমস। তবে এসব অ্যান্ড্রয়েড গেমস এর বাইরেও বেশ কিছু ওয়েব গেম রয়েছে এই কোম্পানিটির। সেগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নাইফ, ফাটাও, লাফাও, টাইনি ক্রিকেট, বল জাম্প ইত্যাদি। 


অর্থাৎ খুব বেশি জটিল গেম তৈরির দিকে না গিয়ে সহজ কিন্তু মজাদার গেম তৈরি করে এই প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও জামিলুর রশীদের বক্তব্য অনুসারে উল্কা গেমস এই উপমহাদেশের সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে গেম তৈরি করতেই বেশি মনযোগী। 


৬। ব্যাটারি লো ইন্টারঅ্যাকটিভ (Battery Low Interactive)

আজ থেকে প্রায় ৯ বছর আগে ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু ব্যাটারি লো ইন্টারঅ্যাকটিভ এর।  বর্তমানে গেমস এর পাশাপাশি অ্যাপ, ওয়েবসাইট, সিমুলেশন, ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়েও কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। তবে এর দুইটি বিশেষত্ব হলো অগমেন্টেড রিয়েলিটি (Augmented Reality) ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality)। 


ছোট ছোট অনেক গেম তৈরি করেছে কোম্পানিটি। তাদের গ্রাহকদের তালিকায় রয়েছে ইউএনডিপি, ইউনিসেফ এর মতো প্রতিষ্ঠান। সবচেয়ে সাম্প্রতিক তিনটি গেমই এই গ্রাহকদের জন্য তৈরি করা। এর ভেতর ‘চেঞ্জ এজেন্ট’ (Change Agent) তৈরি করা হয়েছে ইউনিসেফ এর জন্য। অন্যদিকে ‘বেনো’ (Beno), ও ‘বিটিমো’ (Bitimo) তৈরি করা হয়েছে ইউএনডিপির জন্য। গেম ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি গেমিফিকেশন সার্ভিসও দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। 



এই প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে গেলে দেখা যাবে এক মজার দৃশ্য। টিমের বিভিন্ন মেম্বাররা নিজেদের নাম দিয়েছেন মার্ভেল সিরিজের বিভিন্ন সুপার হিরোর নামে। তাদের টিমে যেমন রয়েছে ব্ল্যাক উইডো, তেমনই রয়েছে হাল্ক, ক্যাপ্টেম আমেরিকা ও ক্যাপ্টেন মার্ভেল। এর বাইরেও আরও নানা ধরনের কমিক ক্যারেক্টারের নাম পাওয়া যায় ওয়েবসাইটটিতে। এ থেকেই বোঝা যায় হালকা পরিবেশে কাজ করতে অভ্যস্থ এ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। 


৭। আজমি স্টুডিও (Azmi Studio) 

২০১৮ সালে শুরু হওয়া এ প্রতিষ্ঠানটির কর্মী সংখ্যা মাত্র ১৮ জন। তবে সংখ্যায় নয়, তারা যে গুণগত মানে জোর দেয় সেটি তাদের কাজের পোর্টফলিও দেখলেই বোঝা যায়। তালিকার আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মতো গেম ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি আরও অনেক ধরনের সার্ভিস দিয়ে থাকে আজমি স্টুডিও। তবে মোবাইল গেম, কম্পিউটার গেমের পাশাপাশি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও অগমেন্টেড রিয়েলিটি গেমও তৈরি করে থাকে। 


মূলত এই দিকটি দিয়ে আজমি স্টুডিও কিছুটা অন্যন্যই বলা চলে। কারণ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি গেম নিয়ে কাজ করার মতো খুব বেশি প্রতিষ্ঠান নেই। গেম তৈরির জন্য তারা মূলত ইউনিটি (Unity), এআর কোর (ARCore), এআরকিট (ARKit), ব্লেন্ডার (Blendar), ওপেন ভিআর (Open VR), স্টিম ভিআর (Steam VR) ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি। আর গেম ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি আইওটি (IoT), প্লানার (Planar), কিয়োস্ক (Kisok) অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর মতো জটিল সার্ভিসও রয়েছে আজমি স্টুডিও এর। 


৮। ব্রেন স্টেশন ২৩ (Brain Station 23)  

ব্রেন স্টেশন ২৩ এর নাম বাংলাদেশের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে সবাই জানে। তালিকার অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গুলো সবাই হয় পুরোদস্তর গেম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, অথবা তাদের যাত্রাটা শুরু হয়েছিলো গেম ডেভেলপমেন্ট দিয়ে। কিন্তু স্টুডিও ২৩ এর ক্ষেত্রে তা নয়। তবে অনেকেই জানে না যে, ব্রেন স্টেশন ২৩ এর নিজস্ব একটি গেম স্টুডিও রয়েছে। যার নাম, ‘স্টুডিও ২৩’। 


তবুও ব্রেন স্টেশন ২৩ কে এই তালিকায় না রাখলেই নয়। স্টুডিওটির বর্তমান প্রধান পরিচালক তানিমুল হক খান। তাদের তৈরি করা গেমসমূহের মধ্যে তিনটি গেম বেশ উল্লেখযোগ্য। সেগুলো হলো ‘সাইলেন্ট স্ক্রিম’ (Silent Scream), ‘সাইলেন্ট স্ক্রিম ২’ (Silent Scream 2), এবং ‘কন্ট্রোল ওভাররাইড’ (Control Override)।  



ব্রেন স্টেশন ২৩ মূলত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি হলেও এক্ষেত্রে স্টুডিও ২৩ এর কিছুটা সুবিধা রয়েছে। কারণ মাত্র শুরু করা একটি কোম্পানির প্রযুক্তিগত অনেক ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকে ।যা ব্রেন স্টেশন ২৩ এর মতো একটি স্থিতিশীল কোম্পানির নেই বললেই চলে। 



৯। বাগবাইট স্টুডিও (Bugbite Studio) 

দেবাশিষ সরকার ও মহিবুল হক, এই দুইজনের প্রচেষ্টায় মাত্র গড়ে উঠতে শুরু করেছে বাগবাইট স্টুডিও। নতুন এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত অগমেন্টেড রিয়েলিটি, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এক্সপার্ট। তার পাশাপাশি গেম এবং ভিএফএক্স প্রযুক্তিও তাদের বিশেষ্বত্ব। 


তাদের ঝুলিতে রয়েছে ডিএইচএল, নেসলে, এসসিবি এর মতো বহুজাতিক কোম্পানির জন্য কুইজ, র‍্যাফেল ড্র ভিত্তিক গেম বানানোর অভিজ্ঞতা। এছাড়াও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ঐতিহাসিক অপারেশন ‘কিলো ফ্লাইট’ (Kilo Flight) এর উপর একই নামে একটি অগমেন্টেড রিয়েলিটি ভিত্তিক গেম রয়েছে তাদের। 



অর্থাৎ একটি গেম বানানোর জন্য যে সকল প্রযুক্তি প্রয়োজন তার সবই তাদের আছে। কিন্তু বর্তমানে তারা থ্রিডি কমার্স (3D Commerce), ইন্টারঅ্যাকটিভ এক্সপেরিয়েন্স (Interactive Experience), মোশন গ্রাফিক্স ইত্যাদি নিয়েই বেশি কাজ করছে। আশা করা যায় নতুন এই প্রতিষ্ঠানটি দ্রুতই সেরাদের কাতারে চলে আসবে। 


১০। প্লেএন্স (Playense) 

২০১৬ সালে যাত্রা শুর করে প্লেএন্স। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদুর রহমান। এটি মূলত একটি মোবাইল গেমস ডেভেলপার কোম্পানি যারা স্পোর্টস ঘরানার গেমসই তৈরি করে। যার ভেতর রয়েছে ক্রিকেট, ফুটবল, টেবিল টেনিস ইত্যাদি। 


এই কোম্পানিটির পোর্টফলিও তে রয়েছে ‘ক্রিকেট বোলিং’ (Cricket Bowling), ‘লুডো ক্রেস্ট’ (Ludo Crest), ‘ডাংক স্ট্রোক থ্রিডি’ (Dunk Stroke 3D) ইত্যাদি গেমস। অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোন, দুই প্ল্যাটফর্মেই এই গেম গুলো খেলা যায়। প্রায় ৯ বছর ধরে বাংলাদেশের গেমিং মার্কেটে টিকে থাকা বেশ বড় অর্জন বলা চলে। তবে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট ও অন্যান্য মাধ্যম থেকে তাদের সম্পর্কে খুব কম তথ্যই পাওয়া গেছে। 


শেষকথা 

বর্তমান সময়ে মূলত স্টুডিও গুলোর জন্য শুধু বাংলাদেশি গেমিং মার্কেটের উপর নির্ভর করে টিকে থাকা কষ্টকর। এর পেছনে যেমন রয়েছে বাংলাদেশীদের আর্থসামাজিক অবস্থা, তেমনই রয়েছে গেম কিনে না খেলার মানসিকতা। কিন্তু তারপরেও যে সকল গেম ডেভেলপার বাংলাদেশের গেম ডেভেলপমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিকে উন্নত করার চেষ্টা করছেন, তাদের সাধুবাদ না জানালেই নয়। 


তবে এ কারণে অনেক গেম ডেভেলপার কোম্পানিই গেম ডেভেলপমেন্ট এর পাশাপাশি অন্যান্য সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসও দিয়ে থাকেন। তবে সব মিলিয়ে বাংলাদেশের গেম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিগুলোর যে উন্নতি হচ্ছে, তা সঃন্দেহের উর্ধ্বে। 


তথ্যসূত্র

১। বিজনেস ইন্সপেকশন 

২। দি ডেইলি স্টার 

৩। শর্টলিস্ট 

৪। গুডফার্মস

৫। টিবিএস 

৬। দি ডেইলি স্টার (২) 
৭। প্রথম আলো

Previous Post

Next Post

Related Posts

বাংলাদেশের সেরা ১০টি সফটওয়্যার ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান

19-12-2024

Top 10 in Bangladesh

বাংলাদেশের সেরা ১০টি সফটওয়্যার ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান

বাংলাদেশের সবচেয়ে দ্রুতগামী সেক্টরগুলোর মধ্যে একটি...

Read More
শীতে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের সেরা ১০টি জায়গা

09-12-2024

Top 10 in Bangladesh

শীতে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের সেরা ১০টি জায়গা

শীতকাল বাংলাদেশের ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণের...

Read More
ঈদের কেনাকাটায় দেশের সেরা ১০ ব্র্যান্ড

25-03-2024

Top 10 in Bangladesh

ঈদের কেনাকাটায় দেশের সেরা ১০ ব্র্যান্ড

পবিত্র রমজানে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের...

Read More

Trending

About MAWblog

MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.

We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.

Sign Up for Our Weekly Fresh Newsletter