Home » MAWblog » Top 10 in Bangladesh » বাংলাদেশের সেরা ১০টি সফটওয়্যার ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান
Top 10 in Bangladesh
Written by: এস এম নাহিয়ান
19-12-2024
বাংলাদেশের সবচেয়ে দ্রুতগামী সেক্টরগুলোর মধ্যে একটি হলো আইটি সেক্টর। শুধু দেশে নয় বরং বিদেশেও স্থান করে নিচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান গুলো। এমনকি তৈরি পোষাক শিল্পের পাশাপাশি আইটি খাতকেও সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত বলে মনে করেন অনেকেই। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রথম নয় মাসেই এই খাত থেকে রপ্তানি আয় ছিল ৪০৭ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
আর তাই আজকের লেখাটি বাংলাদেশের সেরা ১০টি সফটওয়্যার ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে। যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হয়ে থাকে সফটওয়্যার সার্ভিস, বিবেচনার প্রথম দিকে রাখতে পারে এই তালিকার যেকোনো কোম্পানিকে।
ব্রেইন স্টেশন ২৩ (Brain Station 23)
বাংলাদেশের সেরা সফটওয়্যার কোম্পানি গুলোর একটি তালিকা করলে ব্রেইন স্টেশন ২৩ এর নাম তালিকার একদম প্রথম দিকেই থাকবে। রাইসুল কবিরের হাত ধরে ২০০৬ সালে পথ চলা শুরু কোম্পানিটির। মিস্টার কবিরের মুখ থেকে শোনা যায় তার অদ্ভূত যাত্রার গল্প। বুয়েটের ইলেক্ট্রিকাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (Electrical and Electronic Engineering) এর ছাত্র থাকা অবস্থাতেই শুরু করেন প্রথম কোম্পানি। নাম তার ছিল ‘প্যারাডিগম নেওমিডিয়া’।
কিন্তু বেড়ে ওঠার তেমন একটা সুযোগ না থাকায় সে কোম্পানি ছাড়েন কবির। অতঃপর ২০০৫ সালে ‘ল্যাটিটিউড ২৩’ কোম্পানির হয়ে কাজ করতে গিয়ে বিদেশী গ্রাহকদের মাঝে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেন। সে থেকেই শুরু ‘ব্রেইন স্টেশন ২৩ এর’। তার পর পেরিয়ে গেছে প্রায় দুই যুগ, আজও পেছনে ঘুরে তাকাতে হয় নি ব্রেইন স্টেশনকে।
আন্তর্জাতিক উপস্থিতি
বাংলাদেশের খুব কম সফটওয়্যার ডেভেলপার কোম্পানিই অফিস কার্যক্রমের ক্ষেত্রে দেশের গন্ডি পেরোতে পেরেছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ব্রেইন স্টেশন ২৩। বর্তমানে ঢাকার বাইরেও যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়াতে অফিস রয়েছে তাদের।
কাজের ধরনের ক্ষেত্রে অন্য সকল সফটওয়্যার কোম্পনির মতো একাধিক সার্ভিস দিলেও, মূলত অফিস ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের হাত ধরে শুরু হয়েছিলো ব্রেইন স্টেশন ২৩। বর্তমানে তারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট (Web Development), মোবাইল অ্যাপ (Mobile App), ভিআর সলিউশন (VR Solution), ব্যাংকিং সলিউশন (Banking Solution), সাইবার সিকিউরিটি (Cyber Secuirty), ই-কমার্স সলিউশন (E-commerce Solution) ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে কাজ করছে।
একাধিক ক্ষেত্রের মতো একাধিক খাতেও ব্রেইন স্টেশন ২৩ এর গ্রাহক রয়েছে। তবে সেগুলোর মধ্যে ফিনটেক, ই-কমার্স, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, টেলিকম, অটোমোটিভ, রিয়েল-এস্টেট অন্যতম। সব মিলিয়ে আপনি যদি চান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যরত বাংলাদেশি একটি সফটওয়্যার ডেভেলপার কোম্পানির উপর নির্ভর করতে, তবে ব্রেইন স্টেশন ২৩ আপনার জন্য একটি ভাল পছন্দ।
ভিভাসফট (VIvaSoft)
ভিভাসফটের যাত্রা শুরু ২০১৬ সালে। মাত্র ৬ জন নিয়ে শুরু হওয়া প্রতিষ্ঠানটি এখন বেশ সুনামের সাথেই স্থান করে নিয়েছে সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে। শফিউল হাসান তারেক এবং শাফকাত আসিফ, ভিভাসফটের পেছনে এই দুইজন মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশি। সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে তখন তাদের অভিজ্ঞতা ১২ বছরের বেশি, এ সময় সিধান্ত নেন নতুন কোম্পানি চালু করার। তারই ফলাফল আজকের ভিভাসফট। বর্তমানে ভিভাসফটের ঢাকার কার্যালয় বাদেও রাজশাহীতেও অফিস বিদ্যমান।
কাজের ধরন
সকল ধরনের কাজের ব্যাপারে পটু হলেও, দুটি বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা আছে ভিভাসফটের। একটি হলো ‘এন্ড-টু-এন্ড’ কাস্টম সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট’ (End-to-end Custom Software Development)। আরেকটি হলো ‘টিম অগমেন্টেশন’ (Team Augmentation)। দ্বিতীয়টির ব্যাপারে কিছুটা বলা যাক।
ভিভাসফটের অন্যতম দিক হলো আউটসোর্সিং সার্ভিস নিশ্চিত করা। আপনার কোম্পানির বর্তমান স্টাফদের দিয়ে যদি আপনি একটি বড় মাপের প্রজেক্ট সম্পন্ন করতে না পারেন, তাহলে ভিভাসফট হতে পারে আপনার সঙ্গী। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট প্রজেক্টের জন্য কাজে লাগাতে পারেন সম্পূর্ণ একটি টিম। এছাড়াও বিদেশে অফিস চালু করার মতো জটিল কাজেও সহায়তে করে থাকে এই প্রতিষ্ঠানটি। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকিং খাত, ই-কমার্স, টেলিকমিউনিকেশন, রিয়েল এস্টেট, স্বাস্থ্য খাতের একাধিক প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়েছে।
সেফালো (Cefalo)
তৃতীয় যেই প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে কথা বলবো, সেটির নাম সেফালো। অন্য দুইটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ভিত্তিক হলেও সেফালো নরওয়ে ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। তবে নরওয়ে ভিত্তিক হলেও বাংলাদেশেই রয়েছে তাদের আরেকটি অফিস। মূলত বাংলাদেশী দক্ষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্যে নরওয়ে মার্কেটে সেবা দেওয়াটাই তাদের প্রধান বিজনেস স্ট্রাটেজি।
সেফালো মূলত অফশোর ডেভেলপমেন্ট (Offshore Development) মডেলে কাজ করে থাকে। একে ‘সেফালো মডেল’ হিসেবেও ডেকে থাকে তারা। এই মডেলের অধীনে নরওয়েজিয়ান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যারের চাহিদা মিটিয়ে থাকে বাংলাদেশী দক্ষ ইঞ্জিনিয়াররা। মূলত ফ্রিল্যান্সিং মডেলটিকেই কিছুটা প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিয়ে কাজ করে সেফালো। এখানে শুধু প্রজেক্ট ভিত্তিক কাজ না করে গ্রাহক প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী একটি টিমই যোগাড় করে দেয় সেফালো।
এ মডেলের অধীনে নরওয়েজিয়ান ইঞ্জিনিয়ারদের থেকে প্রায় অর্ধেক খরচে যেকোনো কাজ করে দিতে পারে সেফালো টিম। তবে স্বাভাবিক ভাবেই বাংলাদেশ থেকে শুধুমাত্র দক্ষ ডেভেলপারদেরই গ্রহণ করা হয় কোম্পানিটিতে। অনেক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের কাছেই বর্তমান ইন্ডাস্ট্রিতে সেফালো একটি আদর্শ স্থান।
বিজেআইটি (BJIT)
জাপানের বিশাল আইটি মার্কেটে যদি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান কোনটি তা জিজ্ঞেসা করা হয়, সেক্ষেত্রে উত্তর নিঃসন্দেহে বিজেআইটি। চালু হওয়ার তিন বছরের মাথাতেই জাপানে শাখা খোলে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু শুরুর পথটা ছিল বন্ধুর। কারণ তখনও জাপানী আইটি মার্কেটে বাংলাদেশী কোনও প্রতিষ্ঠান স্থান করে নিতে পারে নি।
সংক্ষিপ্ত পরিচয়
আন্তর্জাতিক মহলে শক্তিশালী উপস্থিতির কথা চিন্তা করলে বিজেআইটি অবশ্যই প্রথম দিকে থাকবে। ঢাকা ছাড়াও জাপানের টোকিও, যুক্তরাষ্টের ইলিনয় (Illinois), সুইডেনের অ্যাঙ্গেলহোম (Ängelholm), ফিনল্যান্ডের এস্পো (Espoo), নেদারল্যান্ডস এর ড্রন্টেন (Dronten), সিঙ্গাপুরের ডাউনটাউন কোর (Downtown Core), থাইল্যান্ডের ব্যাংককে (Bangkok) অফিস রয়েছে।
কাজের ক্ষেত্রে জাপানের অনেক গুলোর বড় বড় সেক্টরে বিজেআইটির বেশ ভাল প্রভাব রয়েছে। পকেটওয়াক (Pocketwalk) এর মতো বিখ্যাত ডিভাইসের সফটওয়্যার তৈরির কাজ পুরোটা বিজেআইটি এর হাত ধরেই হয়েছে।
এছাড়াও তাদের ঝুলিতে রয়েছে জাপানের রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ তৈরি, ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রির জন্য নেভিগেশন অ্যাপ তৈরি, ঘরের স্মার্ট ডিভাইস সামলানোর জন্য অ্যাপ তৈরি সহ, চ্যাটবট (Chatbot), বিজনেস অ্যাসিস্টেন্ট (Business Assistant), পিডিএফ ক্রিয়েটর (PDF Creator) ইত্যাদি নানা কিছু তৈরির অভিজ্ঞতা।
এনোসিস সলিউশন্স (Enosis Solutions)
তালিকার বেশিরভাগ সফটওয়্যার ডেভেলপার কোম্পানির মতো এনোসিস সলিউশন্স এর যাত্রা শুরু ২০০০ এর দশকে। প্রায় দুই দশক পরে এসে অন্যতম নির্ভরযোগ্য নাম এনোসিস। বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান হলেও এর গ্রাহকদের একটি বড় অংশ আমেরিকা ও কানাডাতে।
সংক্ষিপ্ত পরিচয়
সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এর পাশাপাশি সফটওয়্যার টেস্টিং সার্ভিসও দিয়ে থাকে এনোসিস। সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এর ক্ষেত্রে কাস্টম সফটওয়্যার তৈরিতেও দক্ষ তারা। এর বাইরে ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ও মোবাইল অ্যাপও তৈরি করে থাকে।
তাদের গ্রাহকদের তালিকাটাও বেশ লম্বা। যাতে আছে প্ল্যানেট ডিডিএস (Planet DDS), আইকিউথ্রি (IQ3), ম্যাট্রিক্স (Matrix), সিইআই (CEI), জিএমজি (GMG), ইনফোনেট (Infonet) ইত্যাদি।
টাইগার আইটি (Tiger IT)
বাংলাদেশের সরকারি খাতের কাজে টাইগার আইটির নামটা বারবারই শোনা যায়। এ প্রতিষ্ঠানটি মূলত সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজ করে জাতীয় পর্যায়ে সেবা দিয়ে থাকে।
সংক্ষিপ্ত পরিচয়
কাজের ধরন
জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান, ভোটার রেজিস্ট্রেশন, ই-পাসপোর্ট তৈরি, ড্রাইভার লাইসেন্স তৈরি, গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি নানা সরকারি প্রক্রিয়ার সফটওয়্যার কারিগর টাইগার আইটি। অর্থাৎ আপনি যদি এই সরকারি সেবা গুলো নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি পরোক্ষ ভাবে টাইগার আইটির সেবা নিয়েছেন।
তবে বাংলাদেশ সরকারের হয়ে এ সকল কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে বিশ্বব্যাংকের স্যাংশনের মুখেও পড়তে হয়েছে টাইগার আইটিকে। ২০১৯ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা টাইগার আইটিকে দুর্নীতির অভিযোগে স্যাংশন দেয় ওয়ার্ল্ড ব্যাংক।
কাজ সফটওয়্যার (Kaz Software)
জনাব ওয়াহিদ চৌধুরীর হাতে তৈরি হয় কাজ সফটওয়্যার। তার ভাষ্যমতে, স্টার্টআপ সফটওয়্যার কোম্পানি গুলোতে আগ্রহ, উদ্দীপনার বেশ অভাব থাকে। তিনি মূলত এই সমস্যাটিকে সমাধান করতেই তৈরি করেন কাজ সফটওয়্যার। যেখানে কাজের পাশাপাশি কাজের সংস্কৃতি অর্থাৎ অফিস কালচারটাকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক উপস্থিতি ও কাজের ধরন
ঢাকা অফিসের পাশাপাশি সুইজারল্যান্ডেও রয়েছে কাজ সফটওয়্যারের অফিস। এছাড়া কাজের দিক থেকে তারা মোটামুটি সকল ধরনের সফটওয়্যার সেবাই দিয়ে থাকে। তার ভেতর উল্লেখযোগ্য হলো কাস্টম সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, রিসার্চ এবং কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স (Research & Quality Assurance)।
তাদের কাজের ভেতরে যেমন রয়েছে স্বয়ংক্রিয় সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করার জন্য অ্যাপ। তেমনই রয়েছে বই পড়ার অ্যাপ, স্টক এক্সচচেঞ্জ মনিটরিং (Stock Exchange Monitoring), প্রজেক্ট ট্র্যাকিং (Project Tracking) অ্যাপ। এমনকই আইওটি (IoT) ভিত্তিক এগ্রোটেক অ্যাপও তৈরি করেছে তারা।
প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি
কাজ সফটওয়্যারের অফিস কালচার বা সংস্কৃতি নিয়ে কিছু না বললেই নয়। ম্যানেজারের সাথে খোলামেলা সমালোচনা করা, ইনডোর ক্রিকেট খেলা, অফিসের সবাই মিলে অফিসের খরচে বিদেশ ভ্রমণ করা, এ ধরনের দুর্লভ সুবিধার দেখা মেলে এ প্রতিষ্ঠানে। তাই কাজ করার জন্য নিঃসন্দেহে একে সেরা একটি প্রতিষ্ঠান বলা যেতে পারে।
সাউথ টেক (South Tech)
সাউথ টেকের সৃষ্টিকালে এর কর্মী সংখ্যা ছিল মাত্র ৪ জন। ২৬ বছর পরে বর্তমানে তা ৯০ এর উপরে। অবশ্য কর্মী সংখ্যার দিক থেকে অনেক কোম্পানিই হয়তো সাউথ টেক থেকে এগিয়ে থাকবে। কিন্তু কম সংখ্যক কর্মীর মাধ্যমে নিখুঁত ভাবে কাজ গুলো সম্পন্ন করাও একটি চ্যালেঞ্জ বটে। যেটি সাউথ টেক ভাল ভাবেই সম্পন্ন করছে।
সংক্ষিপ্ত পরিচয়
কাজের ধরনের দিক থেকে সাউথটেক তালিকার অন্যান্য কোম্পানি থেকে কিছুটা আলাদা। অন্য কোম্পানি গুলোর মতো শুধু ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস দেয় না প্রতিষ্ঠানটি। বরং নিজস্ব অবকাঠামোর সাহায্যে হোস্টিং সেবাও দিয়ে থাকে। রয়েছে নিজস্ব ডাটা সেন্টার।
মিয়ানমারের সর্ববৃহৎ মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যারের দিকটিও ২০১৬ থেকে দেখে আসছে সাউথটেক। এছাড়াও স্বাস্থ্য খাত, ব্যাংকিং খাতের অনেক বড় বড় নামের সাথে যুক্ত তারা। বিশেষত ব্যাংকিং খাতের বিভিন্ন আর্থিক সফটওয়্যার তৈরিতে বিশেষজ্ঞ তারা।
রাইজআপ ল্যাবস (Riseup Labs)
তালিকার অন্য সবকয়টি প্রতিষ্ঠানের পথ চলা নানা ধরনের সফটওয়্যার দিয়ে হলেও রাইজঅ্যাপ ল্যাব এক্ষেত্রে অনেকটাই অন্যরকম। ২০০৯ সালে প্রথম একটি গেম ডেভেলপ করার মাধ্যমে তাদের কোম্পানির শুরু। গেমটির নাম ছিল ‘ট্যাপ ট্যাপ অ্যান্টস’। তার প্রায় ৪ বছর পরে ২০১৩ সালে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে পা রাখে প্রতিষ্ঠানটি।
২০১৪ সালে জিতে নেয় জাতীয় মোবাইল অ্যাপ এওয়ার্ড। ২০১৭ সালে রাইজআপ ল্যাবের পার্টনারশিপ হয় ইউনিসেফ (UNICEF) ও রবি-আজিয়াটা (Robi-Axiata) গ্রুপের সাথে। অতঃপর ২০১৮ সালে সরকারি বিভিন্ন প্রজেক্ট, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন এনজিও এর প্রজেক্টের সাথে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৯ সালে দেশের বাইরে প্রথম অফিস স্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্রে। সর্বশেষ ২০২২ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এওয়ার্ড’ সহ আরও নানা পুরুষ্কার প্রায় প্রতিষ্ঠানটি।
সংক্ষিপ্ত পরিচয়
কাজের ধরন
সফটওয়্যার কোম্পানির মাপকাঠিতেও রাইজআপ অন্য অনেক কোম্পানি থেকে বেশ আধুনিক। তাদের কাজের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে অগমেন্টেড রিয়েলিটি (Augmented Reality), ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality) ও মেটাভার্স (Metaverse)। এছাড়াও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট (Virtual Assistant), ব্লকচেইন (Blockchain), ইন্টারনেট অফ থিংস (Internet of Things) এর মতো বিষয়েও কাজ করে রাইজাপ ল্যাবস।
ড্রিম ৭১ (Dream 71)
ড্রিম ৭১ কোম্পানিটার নাম সমসাময়িক সময়ে বেশ শোনা গিয়েছে। ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো গেমস ও বিভিন্ন অ্যাপ তৈরির মাধ্যমে কোম্পানিটির কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৪ সালে তারা প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর সাথে পার্টনারশিপে যায় প্রতিষ্ঠানটি। তবে ২০২০ সাল ছিল আরও গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। সে বছর ইউএনডিপির মাধ্যমে ড্রিম ৭১ এর কাজের পরিধি বৃদ্ধি পায় তুরুষ্ক, পূর্ব তিমুর ও কলাম্বিয়া অবধি।
দেশের বাইরে ড্রিম ৭১ এর অফিস না থাকলেও বাংলাদেশ বাদে ১২টির অধিক দেশে সফটওয়্যার রপ্তানি করে প্রতিষ্ঠানটি। যার ভেতর রয়েছে জাপান, নেদারল্যান্ডস, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ক্যামেরুন, পূর্ব তিমুর, নাইজেরিয়া, মোজাম্বিক ইত্যাদি।
কাজের ধরন
প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এরই কিছু বিশেষায়িত দক্ষতা থাকে। ড্রিম ৭১ এর ক্ষেত্রা তা ‘ই-গভর্নেন্স’। বাংলাদেশের সরকারি প্রায় ৩৭টি প্রজেক্টে যুক্ত আছে তারা। এর ভেতর এটুআই, আইসিটি ডিভিশন, বিমান বাংলাদেশ, ওয়াসা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পিডব্লিউডি, হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি, ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং, বাংলাদেশ ব্যাংক, ভূমি মন্ত্রণালয়, ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত তারা।
এর বাইরেও বিদেশেও বিভিন্ন সরকারি প্রজেক্টের কাজ পেয়েছে ড্রিম ৭১। তার ভেতর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো পূর্ব তিমুরের সংসদের জন্য অ্যাপ তৈরির কাজ পাওয়া। আন্তর্জাতিক এই টেন্ডারে বহুজাতিক বিভিন্ন কোম্পানি আবেদন করেছিলো। তাদের সবাইকে হারিয়ে ড্রিম ৭১ ই টেন্ডার জিতে নেয়। এছাড়াও বিশ্ব ব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল লেবর অর্গানাইজেশন (International Labour Organisation), জাইকার (JICA) মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকেও সেবা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
শেষকথা
সব মিলিয়ে এই বাংলাদেশের আইটি খাত যে দারুণ উন্নতি করেছে ও করছে, তা নিঃসন্দেহ বলা যায়। আর সেই উন্নয়নের ধারক ও বাহক হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম আসে সবার আগে। আগামীর পথ চলায় হয়তো এরাই হবে ভবিষ্যৎ আইটি ইন্ডাস্ট্রির সর্ববৃহৎ কিছু নাম।
তথ্যসূত্রঃ
১। ভিভাসফট
২। টেকনেক্সট
৩। ক্লাচ
৪। ভিভাসফট ২
৫। ডেইলি স্টার
৮। এনোসিস
১০। কাজ সফটওয়্যার
১১। রাইজআপ ল্যাবস
১২। ড্রিম ৭১
১৩। ডেইলি স্টার (৩)
23-12-2024
Top 10 in Bangladesh
গেমস, নামটি শুনলেই অনেকের মধ্যে হয়তো একটা ভাল লাগা কাজ...
Read More09-12-2024
Top 10 in Bangladesh
শীতকাল বাংলাদেশের ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণের...
Read More25-03-2024
Top 10 in Bangladesh
পবিত্র রমজানে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
International...
03-10-2024
Miscellaneous...
30-09-2024
Miscellaneous...
20-08-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.