Home » MAWblog » International » ট্রাম্পের জয়ঃ বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি নাকি আশংকা?
International
Written by: এস এম নাহিয়ান
24-11-2024
আধুনিক পৃথিবীতে যে নির্বাচনটি বিশ্বের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে, সেটি মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। ৪ বছর পর পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনটি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা প্রভাব ফেলে। কিন্তু হয়তো এই প্রথম বারের মতো বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে এতটা উত্তেজিত। অনেকের ধারনা ট্রাম্পের বিজয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বড় ভূমিকা রাখবে। কেউ বা মনে করেন এর প্রভাব হবে সামান্য। তবে নানা মুনীর নানা মত এড়িয়ে আজকের লেখায় এ বিষয়টিকে দেখা হয়েছে একটি নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে। চলুন জানা যাক মার্কিন রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য আসলে কি অর্থ বহন করে।
পুরো বিষয়টিকে যদি আমরা ‘কজ অ্যান্ড ইফেক্ট’ (Cause and Effect) পদ্ধতির সাহায্যে দেখি, তাহলে বুঝতে অনেকটাই সুবিধা হবে। এ পদ্ধতি অনুসারে আমরা প্রথমেই আলোচনা করবো বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পরিবর্তনের সম্ভাব্য কারণগুলো নিয়ে। আর তার পর আসবে ‘ইফেক্ট’ অর্থাৎ কারণ গুলো থেকে সৃষ্ট প্রভাব। চলুন জানা যাক ঠিক কিভাবে মার্কিন প্রশাসনের পরিবর্তন প্রভাবিত করতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ, বাংলাদেশকে।
ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগত সিধান্ত
বাইডেন প্রশাসনের সাথে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগত বেশ কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। এ সকল নীতিগত পার্থক্যের সাথে বাংলাদেশের তেমন কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই। কিন্তু আর দশটি দেশের মতো এ সকল সিধান্তে বাংলাদেশও বেশ প্রভাবিত হবে। লেখার প্রথম অংশে তাই তেমনই কিছু সার্বিক নীতিগত বিষয়ে আলোচনা করছি।
২০২৪ এর নির্বাচনে রিপাবলিকানদের নমিনেশন পাওয়ার আগেই ট্রাম্পের কিছু বক্তব্য পুরো বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয়। তার মাঝে একটি তার প্রস্তাবিত ‘বেজলাইন ট্যারিফ’। ট্রাম্পের ভাষ্যমতে এই বেজলাইন ট্যারিফের আওতায় থাকবে সকল আমদানিকৃত পণ্য। নূন্যতম ট্যাক্স থাকবে ১০%। অর্থাৎ যে সকল পণ্য দীর্ঘদিন ধরে বিনা অথবা স্বল্প শুল্ক সুবিধাতে আমেরিকান বাজারে পৌছেছে, তাদের সুবিধা মাটিতে মিশে যাবে মূহুর্তেই।
নমিনাল জিডিপির দিক থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনীতির প্রতিটি আমদানি পণ্যে যদি নূন্যতম ১০% ট্যাক্স আরোপিত হয়, তবে তা চিন্তার বিষয় বটে। এমন বিস্ফোরক মন্তব্যের কারণে এ বছরের শুরুতেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গুলোতে আলোচনায় এসেছিলেন ট্রাম্প। তার বিজয়ের পরে ইতোমধ্যে অটোমোবাইল, লাইনার শিপিং ইত্যাদি বিভিন্ন শিল্পের বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে উদ্বেগ জানাতে শুরু করেছেন।
বাংলাদেশের উপর ট্রাম্পের বাণিজ্য রক্ষণশীলতার প্রভাব
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রভাবটা অবশ্য গৌণ। তবে বেজলাইন ট্যারিফের ঘোষণা থেকে বোঝা যায় যে, ট্রাম্প প্রশাসন সকল আমদানিকৃত পণ্যেই বেশ বড় আকারের শুল্ক আরোপ করার কথা ভাবছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অসুবিধার মুখে পড়বে বাংলাদেশের ন্যায় নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ গুলো।
বিশেষ করে বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্পের সবচেয়ে বড় ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালে বাংলাদেশ সর্বমোট ১১.৭ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে। যার ভেতর ৯.৮২ বিলিয়ন ডলারই ছিল তৈরি পোষাক শিল্পের পণ্য। যদিও বাংলাদেশের তৈরি পোষাক আমদানি করতে মার্কিন আমদানিকারকদের পরিশোধ করতে হয় ১৫.৬২% ট্যাক্স। কিন্তু ১০% বেজলাইন ট্যারিফের সাথে সাথে রয়েছে এ খাতে শুল্ক আরও বৃদ্ধির শংকা।
চিত্রঃ ২০২২ সালে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র আমদানি-রপ্তানির অবস্থান
এক্ষেত্রে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। কারণ তৈরি পোষাক শিল্পের পণ্য মৌলিক ভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ এবং এর উৎস সহজে পরিবর্তনযোগ্য। অর্থাৎ আমেরিকান ক্রেতারা অন্য যেকোনো দেশ থেকে কম দামে কাছাকাছি মানের পণ্য পেলে অর্ডার পরিবর্তন করতে দু’বার ভাববেন না। তার মোক্ষম চিত্র ইতোমধ্যে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের তৈরি পোষাকের বাজারে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ইতোমধ্যে বেশ কিছু অর্ডার চলে গেছে ভারতের হাতে। এর সাথে তুলনা করলে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ বেশ বড় বিষয়ই বটে। সে হিসেবে বলা যায়, ট্রাম্প যদি এ সিধান্ত বাস্তবায়ন করেন, তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ বড় ধরনের ধাক্কা খাওয়ার একটি সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদের চিত্র দেখলে বোঝা যায়, ট্রাম্প বরাবরই চীনকেই তার প্রধান প্রতিদ্বন্দী ভেবেছেন। পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটির হিসেবে চীন বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তি। একজন জাত ব্যবসায়ী হিসেবে তাই ট্র্যাম্পের এই ভয় অমূলক নয়।
যদি তৈরি পোষাক শিল্পের কথায় আবারও ফেরত আসি, এক সময়ে চীনের মার্কেট শেয়ার ৪০% থাকলেও বর্তমানে তা মাত্র ২৫%। এর কারণ হিসেবে বলা যায় যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের ক্রমাগত বাণিজ্য যুদ্ধ। আর এ বাণিজ্য যুদ্ধের চূড়ান্ত রুপ দেখা গিয়েছিলো ট্রাম্পের গত শাসনামলে। এ সুযোগের সদ্বব্যবহার করেছে ভিয়েতনাম। ২০১৪ সালে আমেরিকান পোষাক বাজারে তাদের রপ্তানি ছিল ৯.২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২৩ সালে এসে তা দাড়িয়েছে ১৪.১৮ বিলিয়ন ডলারে। যা প্রায় ৫২.৯৬% বৃদ্ধি।
ট্রাম্পের আগমন তাই যেমন হতে পারে বাংলাদেশী রপ্তানিকারকদের অশনি সংকেত। তেমনই খুলে যেতে পারে সম্ভাবনার দ্বার। এক্ষেত্রে ভিয়েতনামের পথ অনুসরণ হতে পারে একটি যৌক্তিক পন্থা। তৈরি পোষাক শিল্পের বাজারে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টমে। মার্কেট শেয়ারের দিক থেকে যা মাত্র ৯.৩%। চীনের উপর অধিক শুল্ক আরোপ হলে সে সুযোগ বাংলাদেশের নেওয়াটাই তাই যৌক্তিক।
দিনশেষে ট্রাম্প প্রশাসনের আগমন বাংলাদেশের রপ্তানি বাজারের জন্য ইতিবাচক হবে না নেতিবাচক, তা নির্ভর করবে বাংলাদেশের কূটনৈতিক শক্তি ও দুই দেশের ব্যবসায়ীদের বোঝাপড়ার উপর।
রাষ্ট্রীয় সাহায্যের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় যাবত যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম বড় সহযোগী। ২০০১ সাল থেকে ইউএসএইড এর মাধ্যমে বাংলাদেশে এখন অবধি বিপুল সহযোগিতা গ্রহণ করেছে। এ সহযোগিতার পালে সবচেয়ে শক্তিশালী হাওয়া লাগে ২০১৮ সালে। ২০১৭ সালে ২৮২ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০১৮ সালে সহযোগিতার পরিমাণ উন্নীত হয় ৫৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। ট্রাম্পের আমলেই বাংলাদেশ এ যাবত কালের সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়ে থাকে। ২০২০ সালে এর পরিমাণ ছিল ৫৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এ ধারা অব্যাহত ছিল পরবর্তী বছর গুলোতেও। ২০২১ এ সালে সাহায্যের পরিমাণ ছিল ৪৯৯ মিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালে সাউথ এশিয়ান অঞ্চলে আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। সে বছর ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’, ‘ইউনাইটেড নেশনস চিলড্রেন’স ফান্ড’, ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন’ ইত্যাদি আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে বাংলাদেশ পেয়েছিল ৪৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈশ্বিক তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল সপ্তম।
চিত্রঃ বাংলাদেশকে আমেরিকা কর্তৃক প্রদানকৃত সহায়তা
কিন্তু সমসাময়িক সময়ে ট্রাম্পের কিছু মন্তব্য অনেকেরই চিন্তার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। বিশেষত ন্যাটো রাষ্ট্র গুলোর কড়া সমালোচনা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক্ষেত্রে তার প্রস্তাবিত নীতি হলো, আর্থিক ভার যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিছুটা হটিয়ে বাকি সকল মিত্র রাষ্ট্র গুলোরও নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে তার প্রথম শাসনামলে বাংলাদেশ যেই বিপুল আর্থিক সহায়তা পেয়েছিলো, তার এবারও পাবে কি না, সে নিয়েও কিছুটা প্রশ্ন উঠেছে।
চিত্রঃ ন্যাটো সম্পর্কে বক্তব্য প্রদান করার সময়ে ট্রাম্প
কঠোর অভিবাসন নীতির জন্য আমেরিকার ইতিহাসে ট্রাম্প প্রশাসন বিখ্যাত। গতবারের মতো এবারও তার ভোট জয়ের বড় একটি হাতিয়ার ছিল অভিবাসী সমস্যা। তবে এক্ষেত্রে আলোচনার মূলে থাকে লাতিন আমেরিকার সাথে আমেরিকার বর্ডার। কিন্তু এর পাশাপাশি নাগরিকত্ব, ভিসা ইত্যাদি প্রদানের ক্ষেত্রে গত শাসনামলে বেশ কঠোর ছিলেন ট্রাম্প। অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করার জন্যে, এমনকি বৈধ অভিবাসন কমানোর জন্য গত শাসনামলে ট্রাম্প প্রশাসন অন্তত ৪০০টি নির্বাহী আদেশ জারি করেছে। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদেও একই অবস্থার অবতারণা হবে বলে ধারনা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের উপর অভিবাসন নীতির প্রভাব আর দশটি দেশের মতই হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রথমে যেই কারণ গুলো নিয়ে কথা বলা হয়েছে সেগুলো মূলত বৈশ্বিক কারণ। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের তেমন কোনো অবদান নেই। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে সমীকরণটা কিছুটা বদলে যাবে। লেখার এই অংশে আলোচনা করা হয়েছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সম্পর্ক ও তার সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়ে।
বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনুস এর সাথে সদ্য বিজয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক ঠিক মধুর বলা যাবে না। জনসম্মুখে এ তিক্ততা প্রকাশ পায় ২০১৬ সালে। ড. ইউনুস এর মার্কিন রাজনৈতিকদের সাথে বিপুল সখ্যতা নতুন কিছু নয়। তবে সে সখ্যতা প্রধানত ডেমোক্রেটদের সাথেই। তারই জের ধরে ২০১৬ সালে ড. ইউনুস ট্রাম্পকে নিয়ে কিছুটা তির্যক মন্তব্য করেন।
তার ভাষ্যমতে ট্রাম্পের জয় ছিল ‘সূর্য গ্রহণের ন্যায়’। এবং সে ঘটনা যেন ‘আমাদের দুর্বল করে মনোবল ভেঙ্গে ফেলতে না পারে’ এমন মন্তব্য ও করেছিলেন ড. ইউনুস। এছাড়াও ট্রাম্পকে উদ্দ্যেশ্য করে তিনি বলেন ‘যেহেতু তুমি এখন প্রেসিডেন্ট, তোমাকে বিশ্বকে আরও সহনশীল দৃষ্টিতে দেখতে হবে’। ড. ইউনুসের এমন বক্তব্যের সূত্র মূলত সাবেক আমেরিকান রাষ্ট্রপতি বিল ক্লিনটন এবং হিলারি ক্লিনটনের সাথে ড. ইউনুসের সখ্যতা।
চিত্রঃ প্যারিসে এ বক্তব্য দেওয়ার সময় ড. ইউনুস
‘সাউথ এশিয়া ইন্সটিটিউট অ্যাট দি উইলসন সেন্টার’ (South Asia Institute at the Wilson Center) এর প্রধান মাইকেল কুজেলম্যান (Michael Kugelman) এর ভাষ্যমতে, বাইডেন প্রশাসনের ক্ষেত্রে সরকার প্রধান হিসেবে ড. ইউনুসের উপস্থিতি যেমন প্রগাড় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল, ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষেত্রে তার বিপরীতটি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে অস্থিতিশীল। বিষয়টি যে ট্রাম্পের নজর এড়ায় নি তা তিনি নির্বাচনের আগেই একটি টুইট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। সে টুইটের ভাষ্যমতে, ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশে বিভিন্ন সংখ্যালঘুদের উপর ‘বর্বর আক্রমণ’ হতে দিতেন না। এমন টুইটে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যথেষ্ট ফুলকি ছড়িয়েছে।
চিত্রঃ ট্রাম্পের টুইট
কিন্তু একাধিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী এটি আসলে ভোটের আগে আমেরিকাতে অবস্থিত ভারতীয় হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভোট আদায়ের একটি কৌশল ছিল মাত্র। আদৌ ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জ্ঞান ও আগ্রহ আছে, সে নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন রয়েছে। তবে প্রশ্ন থাকলেও এ নিয়ে বেশ কিছুটা জল ঘোলা করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ। একটি পক্ষ যেন খড়কুটোর টুকরোর মতো এই টুইটটিকেই আকড়ে ধরতে চাইছেন। অপর পক্ষ আবার এটিকে পাত্তা দিতেই রাজি নন। তবে শেষ কথা হলো, নির্বাচিত হওয়ার আগেই ট্রাম্পের একটি টুইট এ দেশের রাজনীতিতে বিশাল প্রভাব ফেলেছে।
বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারীর তালিকায় প্রথম অবস্থানটি দীর্ঘদিন ছিল আমেরিকার দখলে। ২০২৩ সালে সে স্থান চীনের হলেও যুক্তরাষ্ট্র এখনও এদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ সহযোগী। সৈয়দ আখতার মাহমুদের বিশ্লেষণ অনুসারে, বাংলাদেশে আমেরিকান বিনিয়োগের মূল ক্ষেত্র মূলত এনার্জি সেক্টর। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ট্রাম্প প্রশাসনের সময়েই বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি হয়েছে। বরং গত এক দুই বছরে মার্কিন বিনিয়োগ কিছুটা পড়তির দিকেই।
তবে এক্ষেত্রে মার্কিন রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনের চাইতেও বড় বিষয় ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ। এ সংক্রান্ত সমস্যা এখনও বিদ্যমান। তাই বলা যায়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধান না হলে বাইডেন থাকুন বা ট্রাম্প, মার্কিন বিনিয়োগের পরিমাণে খুব একটা হেরফের হবে না।
শেষকথা
পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক দল ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়কে অনেক বড় করে দেখলেও, বিষয়টি সেরকম নয়। আবার একই সাথে এর প্রভাব উপেক্ষা করার সামর্থ্যও বাংলাদেশের নেই। এছাড়াও বর্তমান সরকার প্রধান ড. ইউনুসের সাথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক কিছুটা অস্বস্তিদায়ক হলেও উদ্বেগজনক নয়। কারণ ড. ইউনুসের পরিচিতি ও সখ্যতা যে শুধু ডেমোক্রেটদের সাথেই বিষয়টি তা নয়। বিশ্বের নানা প্রান্তে, আমেরিকার বিভিন্ন মহলে, এমনকি রিপাবলিকানদের মাঝেও তিনি একজন সমাদৃত ব্যক্তি।
এছাড়াও বাংলাদেশ এখনও তেমন পর্যায়ে পৌছায় নি যার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে আহামরি কোনো প্রভাব পড়বে। বরঞ্চ এই অঞ্চলে সামগ্রিক ভাবে চীন বিরোধী নীতিই অনুসরণ করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাই বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটা ঠিক কেমন হবে, তাতে অন্য সব কিছুর চাইতে চীনের সমীকরণটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্রঃ
১। নেত্র নিউজ
৬। দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (১)
৭। দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (২)
৮। দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (৩)
৯। দ্যা ইকোনমিক টাইমস - ইন্ডিয়া
১৩। সিএনবিসি
১৫। দ্যা ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস
১৬। ওইসিডি
১৭। আন্দালু এজেন্সি
১৮। ইউএসএইড
১৯। অ্যাপারেল রিসোর্সেস
২০। মাইগ্রেশন পলিসি
21-11-2024
International
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) বিশ্বের অন্যতম প্রধান...
Read More14-11-2024
International
সত্য নাদেলা মাইক্রোসফটের সিইও হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের...
Read More09-11-2024
International
অ্যাপল (Apple Inc.) বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি জগতে এক বিস্ময়কর...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.