Community
Written by: সুরাইয়া জামান
10-06-2024
বছরঘুরে আবারো দোর-গোড়ায় ঈদ-উল-আজহা। জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে পশু কোরবানির মাধ্যমে সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা ঈদ-উল-আজহা বা কোরবানির ঈদ পালন করে থাকেন। এই ঈদে জামায়াতে নামাজ শেষে পশু জবাই, মাংস বিতরণ, মাংস রান্না, অতিথি আপ্যায়ন ইত্যাদি কাজকর্মের মাঝে ব্যস্ততায় কেটে যায় সময়। তবে আগে থেকে প্রস্তুতি হিসেবে কিছু কাজ গুছিয়ে রাখলে সারাদিনের সমস্ত কাজ কিছুটা সহজ হয়ে যায় এবং সময়েরও সাশ্রয় হয়। আসন্ন কোরবানির ঈদে আগে থেকে কি কি প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে তা নিয়েই আজকের লেখাটি।
চলছে গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর এবং সতেজ খাবার খাওয়া অত্যন্ত কার্যকরী। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পড়তে পারেন- গ্রীষ্মের গরম মোকাবিলায় যেসব খাবার খাওয়া উচিৎ
পশু কেনার প্রস্তুতি
ঈদের আগে পশু কেনা, বাড়িতে নিয়ে আসা, পশুর খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করা এই সবই যেন ঈদের আনন্দঘন অংশ। তবে যেনতেন পশু দিয়ে কোরবানি দিলে হবে না। সাধারণত গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কোরবানির মাধ্যমে কোরবানির সওয়াব আদায় হয়। এছাড়া অন্য কোনো পশু দিয়ে কোরবানি করার বিধান নেই। তাই ঈদের অন্তত ৫-৭ দিন আগে যাচাই করে কোরবানির পশু কেনা উত্তম। তবে গ্রামে পশুর পরিচর্চা সহজ হলেও শহরে তা মোটেও সহজ নয়। সেজন্য নিজেদের সুবিধামতো সময়ের মধ্যে পশু কিনে ফেলা উচিত। পশু কেনার সময় যে যে বিষয়গুলো লক্ষণীয়-
১. কোরবানির জন্য অবশ্যই সুস্থ, স্বাভাবিক, সবল পশু কিনতে হবে। দূর্বল, অসুস্থ কিংবা অস্বাভাবিক আচরণের পশু দ্বারা কোরবানি আদায় হবে না। তাই কেনার সময় অভিজ্ঞ লোকের পরামর্শ অনুযায়ী যাচাই করে পশু কেনা উত্তম।
২. দোষত্রুটিমুক্ত পশু কোরবানির জন্য বাছাই করতে হবে। দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি না থাকা, লেজের বেশির ভাগ অংশ কাটা, জন্মগতভাবে কান না থাকা, কানের বেশির ভাগ কাটা, গোড়াসহ শিং উপড়ে যাওয়া ইত্যাদি ত্রুটি থাকলে সেই পশু কোরবানির জন্য অযোগ্য বলে গণ্য হবে।
৩. কেনার সময় পশুর বয়স বিবেচনা করে কিনতে হবে। উট এর ক্ষেত্রে এর বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর হতে হবে। গরু-মহিষ কমপক্ষে দুই বছরের হতে হবে। ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে এক বছরের হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি দেখতে মোটাতাজা হয় এবং এক বছর বয়সের মতো মনে হয়, তাহলে তা দিয়েই কোরবানি বৈধ।
৪. ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদির ক্ষেত্রে একটি পশু শুধু এক ব্যক্তিই কোরবানি দিতে পারবে। তবে গরু, মহিষ, উট সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি মিলে কোরবানি দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে যারা যারা বড় পশু কোরবানিতে শরীক হতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য সঠিক হতে হবে। তাই শরীক নির্বাচনে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পশু জবাইয়ের প্রস্তুতি
১. আগে থেকে পশু জবাইয়ের স্থান এবং কসাই নির্বাচন করা
পরিবেশ দূষণ রোধ ও সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কোরবানির পশু জবাইয়ের নির্ধারিত স্থান সিটি কর্পোরেশন থেকে নির্ধারন করা হয়ে থাকে। তবে তা বেশি দূরে হলে বা ভীড়ের কারণে আশেপাশের খোলামেলা, যথাযথ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা আছে এমন স্থান নির্বাচন করা উচিত। একইভাবে আগে থেকেই কসাইয়ের সঙ্গে কথা বলে দরদাম ও সময় ঠিক করে নিতে হবে। তাহলে ঈদের দিন কসাই নির্বাচন নিয়ে বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হবে না।
২. ছুরি, চাপাতি, বটিতে শান দেওয়া
কোরবানি ঈদের অন্যতম আনুষাঙ্গিক হচ্ছে মাংস কাটার সরঞ্জাম যেমন- ছুরি, চাপাতি, দাঁ বা বটি। এগুলো সাধারণত বছরে একবারই ব্যবহৃত হয়। ঈদের আগেই এগুলো বের করে ভালো করে শান দিয়ে রাখা উচিত। এতে পশুর চামড়া বা মাংস কাটতে সহজ হয়ে যায়। ফলে কোরবানির কাজ খুব সহজেই অল্প সময়ে গুছিয়ে আনা সম্ভব হয়।
৩. কাঠের গুঁড়ির ব্যবস্থা করা
মাংস কাটার জন্য কাঠের শক্ত এবং মজবুত গুঁড়ির প্রয়োজন হয়। আগের বছরের পুরনো বা ভঙ্গুর গুঁড়ির পরিবর্তে নতুন গুঁড়ি কিনে নেওয়া যেতে পারে।
৪. বড় চাটাই এবং পলিথিন কিনে রাখা
মাংস কাটার জন্য বড় চাটাই বা ত্রিপল কিনে রাখা উত্তম। সংগ্রহে না থাকলে আগে থেকেই এসবের ব্যবস্থা করে রাখা উচিত। মাংস প্রক্রিয়াকরনের পর তা বিতরনের জন্য প্রয়োজনীয় আকারের পলিথিন আগে থেকে কিনে রাখলে কোরবানির কাজের পুরো যাত্রাটাই সহজ হয়ে যায়।
৫. জীবাণুনাশক হাতের কাছে রাখা
পশু জবাই সহ মাংস কাটাকুটির পুরো সময়ে যেকোনো ছোট দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। হাড়ের আঘাতে কিংবা ছুড়ির খোঁচায় হাত কেটে যাওয়ার ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। তাই স্যাভলন অথবা ডেটল জাতীয় জীবাণুনাশক হাতের নাগালেই রাখা উচিত। এছাড়াও পুরো স্থানটি জীবাণু এবং দূর্গন্ধমুক্ত করতে জীবাণুনাশকের বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে ব্লিচিং পাউডারও ব্যবহার করা যেতে পারে।
৬. চুন অথবা হলুদ সংগ্রহে রাখা
মাংস কাটার সুবিধার্তে এবং পশুর ভূড়ি পরিষ্কার করার জন্য হলুদ এবং চুন খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান। এগুলো আগে থেকে গুছিয়ে রাখলে যথাসময়ে অযথা হুড়োহুড়ি করতে হয়না।
৭. বড় পাত্র ব্যবস্থা করা
কোরবানির মাংস রাখতে আলাদা আলাদা বড় পাত্রের প্রয়োজন হয়। তাই বড় বড় বারকোশ, প্লাস্টিকের বোল, অ্যালুমিনিয়ামের ডিশ বা ডেকচি- এই পাত্রগুলোর ব্যবস্থা করে ডিশওয়াশিং লিকুইড দিয়ে গরম পানিতে ভালোমতো ধুয়ে রাখা উচিত। এতে করে অনেকটা সময় বাঁচানো সম্ভব।
রান্নার প্রস্তুতি
কোরবানির পশু জবাই এবং তা প্রসেসিং এ অনেকটা সময় লেগে যায়। ফলে প্রায়শই তা রান্না করতে বেলা গড়িয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। মাংস রান্না এবং সংরক্ষণের জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে রান্নার পুরো কাজটি সহজ এবং দ্রুত হয়ে যায়। রান্নার প্রস্তুতি হিসেবে কিছু টিপস-
১. মাংস রান্নার প্রয়োজনীয় মশলাপাতি আগে কিনে তা হাতের কাছে গুছিয়ে রাখা যেতে পারে।
২. আদা রসুন আগেই বেটে তা হাতের কাছে রাখলে রান্না অনেক সহজ হয়ে যায়।
৩. একইভাবে পেয়াজ-রসুনের খোসা ছাড়িয়ে তা রেডি করে রাখা যেতে পারে।
৪. ঈদের দিন বাড়তি পদের রান্নার চাপ সামলাতে কিছু রান্না আগেই করে রাখা যেতে পারে।
৫. মাংস সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পলিথিন বা জিপার ব্যাগ পূর্বেই কিনে রাখা উচিত।
৬. ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ পরিষ্কার থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এই কাজটি ঈদের কিছুদিন আগেই করা যেতে পারে।
৭. বাড়িতে অতিথি এলে তাদের আপ্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় গ্লাস, প্লেট ইত্যাদি আনুষাঙ্গিক আগে থেকেই পরিষ্কার করে রাখা যেতে পারে।
প্রয়োজনের সময় হাতের কাছে কিছু খুঁজে না পেলে আমরা সবাইই বিরক্ত হই, উপরন্তু অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে যায়। ঈদের দিন অযথা রাগারাগি বা বিরক্তি এড়াতে উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে গুছিয়ে কাজ করলে কোরবানির ঈদের সমস্ত কাজের ধাক্কা সামলেও নিজের জন্য কিছু সময় বের করা সম্ভব। এছাড়াও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে গুছিয়ে কাজ করলে নির্বিঘ্নে কাজটি সম্পন্ন করা যায়। ফলে ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে না।
তথ্যসূত্রঃ
17-10-2024
Community
বর্তমান যুগে ডিজিটাল মার্কেটিং হলো যেকোনো ব্যবসার...
Read More27-06-2024
Community
প্রতিবছর ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বাংলাদেশে কোরবানির গরুর...
Read More31-05-2024
Community
আমেরিকান লেখক ক্যারোলিন মাইসের মতে, যেকোনো মুভমেন্ট বা...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.