Home » MAWblog » Miscellaneous » যে ৭ টি সিনেমা আপনাকে ব্যবসায় অনুপ্রাণিত করবে
Miscellaneous
Written by: এস এম নাহিয়ান
27-12-2023
প্রতিটি মানুষের জীবনেই বিনোদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান আছে। গান শোনা, বই পড়া, সিনেমা দেখা, ঘুরতে যাওয়া থেকে শুরু করে এক জন মানুষের বিনোদনের মাধ্যমের অভাব নেই। এই সকল বিনোদন মাধ্যমের ভীড়ে সিনেমা প্রেমিকের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। অনেকে যেমন বই পড়ে অনুপ্রেরণা খোঁজেন, অনেকেই বেছে নেন সিনেমাকে। আর সিনেমা গুলো যদি হয় নিজের ব্যক্তি কিংবা কর্মজীবন কেন্দ্রিক, তাহলে সে সব সিনেমার স্থানে হয়তো অনেকেই নিজেকে কল্পনা করে ফেলেন। আজকের লেখাটি তেমনই কিছু সিনেমা নিয়ে। যে সব সিনেমা আপনাকে শেখাবে নতুন করে ভাবতে, ভিন্ন কিছু করার ইচ্ছা জাগিয়ে তুলতে। এ সিনেমা গুলো হয়তো পারবে আপনাকে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখাতে। তাই আপনার ভেতর যদি একজন সফল ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা হওয়ার সুপ্ত বাসনা থেকে থাকে, তাহলে এ লেখাটি আপনার জন্যই।
২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাটি আজ অবধি সবচেয়ে প্রেরণাদায়ক সিনেমা গুলোর মধ্যে একটি। একজন কর্পদশূণ্য, গৃহহীন, বেকার বাবার সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াই যেন এ সিনেমায় বাস্তব হয়ে ফুটে উঠেছে। প্রতিটি মানুষের জীবনে ভাল-খারাপ সময় থাকেই। কিন্তু সবচেয়ে খারাপ সময়েও কিভাবে লড়াই চালিয়ে উঠে দাঁড়াতে হয় তার একটি দারুণ দৃশ্যায়ন এই সিনেমাটি।
ব্যবসা সম্পর্কে ধারনা রয়েছে এমন প্রত্যেক ব্যক্তিই স্টক মার্কেট সম্পর্কে কিছু হলেও জানেন। কিন্তু একদম শূন্য থেকে শুরু করে কিভাবে এই মার্কেটের সবচেয়ে সফল ট্রেডার হওয়া যায়, সেই গল্পটিই দেখতে পারবেন পারসিউট অফ হ্যাপিনেস সিনেমাটিতে। তবে একই সাথে রয়েছে অক্লান্ত পরিশ্রম এবং লাগাতার অধ্যাবসায় এর শিক্ষা।
এই সিনেমার একটি বিখ্যাত ডায়লগ হয়তো অনেক তরুণকেই অনুপ্রাণিত করেছে Don’t ever let someone tell you, you can’t do something. Not even me. You got a dream, you got to protect it. People can’t do something themselves, they want to tell you you can’t do it. You want something, go get it.’
কমেডি, রোমান্স, অ্যাডভেঞ্চার সব কিছুর একটি নিখুঁত মিশ্রণ উলফ অফ দি ওয়াল স্ট্রিট। এত কিছুর ভেতরেও ব্যবসায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে দারুণ একটি ধারনা দেয় সিনেমাটি। বাস্তব কাহিনীর উপর নির্মিত এই সিনেমাটির প্রধান চরিত্র জর্ডান বেলফোর্ড। আর এই চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তোলার জন্য বোধ করি লিওনার্ডো ডি ক্যাপ্রিও থেকে ভাল কেউ হয় না। এর গল্পটিও আবর্তিত হয়েছে আমেরিকান স্টক মার্কেটকে নিয়ে। ১৯৮৭ সালে ব্রোকার ফার্মে চাকরি করা একজন তরুণ কিভাবে অল্প কয়েক বছরেই ধনকুবের হয়, তার গল্প এটি।
তবে স্বভাবতই এই সিনেমাতে টাকা কামানোর বেশ কিছু অবৈধ পথের চিত্র দেখানো হয়েছে। কিন্তু এ সব কিছুর বাইরে সিনেমাটির সবচেয়ে শিক্ষণীয় বিষয়টি হলো কিভাবে একজন ক্রেতার মাঝে চাহিদা তৈরি করা যায়। যেকোনো ব্যবসার মূল চালিকা শক্তি হলো গ্রাহকদের চাহিদা। আর আপনি কিভাবে আপনার গ্রাহকদের ভেতর অদম্য চাহিদা তৈরি করতে পারবেন, তার একটি জান্তব উদাহরণ এই সিনেমাটি।
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গকে কে না চেনেন? কিন্তু কখনো কি মনে হয়েছে সে ঠিক কিভাবে হার্ভার্ডের একটি ডর্মিটরি থেকে আজ বিশ্বব্যাপী মাল্টি-বিলিয়ন ডলার কোম্পানির প্রতিষ্ঠা করেছে? ঠিক সেই গল্পটিই তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমাটিতে।
এই সিনেমাটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে অনেক বড় কিছুর শুরুও অনেক ছোট কিছু থেকে হতে পারে। ২০০৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শুরু করা একটি সামাজিক মাধ্যম যেভাবে আজ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এই সিনেমাটিতে ফেসবুকের উথানের সময়টাতে মার্ক জুকারবার্গ যে সকল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলো তার প্রায় সবই তুলে ধরা হয়েছে। অনেকের কাছেই মনে হতে পারে, একটি প্রযুক্তি কোম্পানির উত্থানের পুরোটা জুড়েই হয়তো আছে কম্পিউটার। কিন্তু এই পুরো সময় জুড়েই জুকারবার্গকে মোকাবেলা করতে হয়েছে অনেক জটিল পরিস্থিতির। ব্যক্তিগত সম্পর্কের জটিলতা থেকে নিদারুণ আইনি জটিলতা, কিভাবে সব কিছু কাটিয়ে সে আজকের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একজন তারই গল্প দেখতে পারবেন এই সিনেমাটিতে। সব মিলিয়ে একে পরিচালক ডেভিড ফিঞ্চারের অন্যতম সেরা কাজ বললেও ভুল হবে না।
প্রযুক্তির দুনিয়াতে অনেকেই যাকে গুরু মানেন, তিনি হলেন স্টিভ জবস। তার হাত ধরে অ্যাপল এমন কিছু পণ্য বাজারে এনেছিলো যা আজকের দুনিয়ায় অ্যাপলের তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তার মূল ভিত্তি। কিন্তু ব্যক্তি হিসেবে কেমন ছিলেন স্টিভ জবস? কেনই বা তাকে তার কোম্পানি থেকেই বের করে দেওয়া হয়েছিলো এক সময়। এ সব প্রশ্নেরই উত্তর মিলবে ‘স্টিভ জবস’ সিনেমাটিতে।
এই সিনেমায় স্টিভ জবস এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাইকেল ফ্যাসবেন্ডার। মজার ব্যাপার হলো মাইকেল ফ্যাসবেন্ডার এর চেহারা কিংবা গলার স্বর কোনোটিই স্টিভ জবসের মতো নয়। কিন্তু সিনেমাটি শেষ হলে আপনার মনে হবে পুরো সিনেমা জুড়ে যেন ব্যক্তি স্টিভ জবসকেই দেখেছেন। এই অসাধ্য সাধন হয়েছে অ্যারন সরকিন (Aaron Sorkin) এর অসাধারণ চিত্রনাট্য এবং ড্যানি বয়েল (Danny Boyle) এর অসাধারণ পরিচালনার জোরে। সিনেমাটির সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে অ্যাপলের প্রধান তিনটি প্রডাক্ট-লঞ্চ (Product Launch) অনুষ্ঠান। সব মিলিয়ে আপনি যদি ব্যক্তি স্টিভ জবসকে নিয়ে কিছুটা ধারনা পেতে চান, তাহলে এই সিনেমাটি আপনার জন্য দেখা অবশ্যকর্তব্য।
স্টিভ জবস সিনেমাটির মতো ‘দ্যা ফাউন্ডার’ সিনেমাটিও একটি বায়োপিক। আর এই বায়োপিকটি অন্য কারও নয়, বিখ্যাত ফাস্ট-ফুড চেইন ম্যাকডোনাল্ডস এর অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা রে ক্রক (Ray Croc) এর। এই সিনেমাটি দেখার আগ অবধি হয়তো আপনি জানবেন না ঠিক কিভাবে ম্যাকডোনাল্ডস ব্রাদার এর ফাস্ট-ফুড ‘রে ক্রক’ নামক এই বিক্রেতার কল্যাণে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিলো।
জন লি হ্যানকক পরিচালিত এই সিনেমাটি যেকোনো বিবিএ / এমবিএ ছাত্রের দেখা উচিত। কিভাবে অন্যের ব্যবসাকে ফুলিয়ে-ফাপিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, এবং নিজের লাভবান হওয়া যায়, তার একটি প্রকৃষ্ট চিত্রায়ন এই সিনেমাটি। দ্যা ফাউন্ডারস এ চিত্রায়িত রে ক্রক ছিলেন একজন সাধারণ বিক্রয় প্রতিনিধি। কিন্তু তার হাত ধরেই ম্যাকডোনাল্ডস আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফাস্ট-ফুড ব্র্যান্ড। এই সিনেমাটি তাই প্রমাণ করে, ব্যবসায় সফল হতে হলে সবসময় মূল ধন বা নিজস্ব ব্যবসার প্রয়োজন নেই। বরং একটি ব্যবসাকে শুধু নিজের বুদ্ধিমতা আর দক্ষতা দিয়েও বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করা যায়।
অফিস স্পেস সিনেমাটি তেমন বক্স অফিস হিট না হলেও একটি ক্লাসিক-কমেডি মুভি। জোর করে হাসানোর চেষ্টা নয় বরং ছোট ছোট সংলাপ আর চরিত্র গুলোর কাজের মধ্যে দিয়েই এর হাস্যরস প্রকাশ পায়। সিনেমাটির কাহিনী গড়ে উঠেছে চাকরিতে চূড়ান্ত অসন্তুষ্ট কিছু কর্মীদের নিয়ে।
যারা কর্পোরেট জব ছেড়ে ব্যবসাতে এসেছেন, তারা এই সিনেমাটির সাথে অনেকটিই নিজের পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা মেলাতে পারবেন। একজন চাকরিজীবীর হতাশা, বিরক্তি, আর ক্ষোভ সব হাস্যরসাত্নক উপায়ে ফুটে এসেছে এই সিনেমাটিতে। এই হাস্যরসের জন্য সিনেমাটি উপভোগ্য হলেও, অনেক মানুষই এটি দেখার পর চাকরিতে নিজের অবস্থান দ্বিতীয় বার ভেবে দেখেন। এটি এমন একটি সিনেমা যার সংলাপ আপনাকে নতুন কিছু করার উদ্দীপনা যোগাবে। জীবনের একঘেয়েমি ভেঙে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে অনুপ্রেরিত করবে।
উপরের সব কয়টি সিনেমার সাথে তালিকার শেষের এই সিনেমাটির বেশ বড় দুইটি পার্থক্য রয়েছে। তার মধ্যে প্রথমটি হলো তালিকার শুধু এই সিনেমাটিই বলিউডের। আর আরেকটি পার্থক্য হলো, উপরের সব কয়টি আত্নকেন্দ্রিক সিনেমা হলেও, এই সিনেমাটি অনেকটাই সামাজিক উন্নয়নের দৃষ্টি কোণ থেকে বানানো।
ভারতীয় এই সিনেমাটিতে অক্ষয় কুমার বেশ নিখুঁত ভাবেই অরুণাচলম মুরাঙ্গানাথাম (Arunachalam Muruganantham) এর চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেছেন। বাস্তব কাহিনীর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা এই সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর দারুণ প্রশংসিত হয়। সামাজিক ব্যবসা নতুন একটি বিষয় হলেও বর্তমানে অনেকেই এই ধরনের ব্যবসার সাথে যুক্ত হচ্ছেন। আর এ সকল ক্ষেত্রে অনুদান /বিনিয়োগও বেশি পাওয়া যায়। আর এমনই একটি সামাজিক ব্যবসার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমাটিতে। যদিও সিনেমার স্বার্থে এর ব্যবসায়িক দিকটাকে কিছুটা উপেক্ষা করে সমাজ সেবাকেই মুখ্য রাখা হয়েছে। কিন্তু সিনেমাটি একবার দেখলে সামাজিক সেবার পাশাপাশি যেকারো হৃদয়েই তেমন একটি ব্যবসার অনুপ্রেরণা জাগবে।
সর্বশেষে এটুকুই বলতে হয়, ব্যবসায় অথবা কর্মজীবনে সফলতা চাইলে অনুপ্রেরণার কোনো বিকল্প নেই। এমন অনেক বই রয়েছে যা হয়তো ব্যবসায় আপনাকে দারুণ ভাবে অনুপ্রাণিত করবে, অপরদিকে আজকের লেখায় উল্লেখিত সিনেমা গুলোও হতে পারে আপনার অনুপ্রেরণার উৎস। অনুপ্রেরণা যেখান থেকেই পান না কেন, সেই অনুপ্রেরণা অনুযায়ী কঠোর পরিশ্রম করলে ও লেগে থাকলেই কেবল সম্ভব সফলতার মুখ দেখা।
২। ইংক (Inc)
28-11-2024
Miscellaneous
সংবিধানকে বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক দলিল। সরকার...
Read More20-11-2024
Miscellaneous
শিশুদের মনোরঞ্জন এবং শেখার অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম হল...
Read More31-10-2024
Miscellaneous
বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের সূচনার শুরুটা বস্তুত...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.