Home » MAWblog » Top 10 in Bangladesh » বাংলাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত ১০ টি খাবার
Top 10 in Bangladesh
Written by: এস. এম. নাহিয়ান
02-11-2023
কথিত আছে, বাঙালী নাকি ভোজনরসিক। কথাটি মিথ্যা নয় বটে। ছোট এই দেশটির স্বল্প পরিধির মধ্যেই রয়েছে যেন হরেক রকমের সুস্বাদু খাবার। বিশেষত দীর্ঘকাল ধরে এই অঞ্চলে আসা নানা বিদেশী শক্তির আগমন এবং স্থানীয় সংস্কৃতির মিশ্রণ হয়ে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার সব রান্নার। বাঙালীর রদ্ধনশৈলীকে তাই বলা যায় বিশ্বের অন্যতম বৈচিত্রময় রন্ধনশৈলী। উপমহাদেশের সকল দেশের মতই এদেশের রান্নায় মশলার ব্যবহার একটূ বেশি। তবে মশলা ছাড়াও বিভিন্ন মিষ্টি-মিঠাই থেকে শুরু করে নানা বিখ্যাত খাবারের অস্তিত্ব রয়েছে এ অঞ্চলে। তার ভেতর থেকেই সেরা ১০টি খাবার সম্পর্কে তুলে ধরা হলো আপনাদের সামনে।
পুরানো ঢাকার বিরিয়ানি বলতেই মনে পড়ে হাজি নান্না বিরিয়ানির কথা। তবে এই খাবারটির জন্ম কিন্তু আজ থেকে শতাধিক বর্ষ পূর্ব, বর্তমানের ইরানে। পারস্য অঞ্চলে এর সৃষ্টি হওয়ার পর মোগলদের মাধ্যমে এটি ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিমদের মাঝে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। আর কালের পরিক্রমায় আজ এই সমগ্র অঞ্চলের মানুষই প্রতিনিয়ত উপভোগ করে বিরিয়ানি। পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ, এই তিন দেশের বিরিয়ানির তুলনা হলে পাকিস্তানি বিরিয়ানি সম্ভবত সবচেয়ে উপরের স্থানটি দখল করবে। আর তার পরেই বাংলাদেশী বিরিয়ানির স্থান। তবে হালের অনেক বিখ্যাত ফুড ব্লগার আবার বাংলাদেশের বিরিয়ানিকেও প্রথম স্থানে রেখেছেন।
সমগ্র বাংলাদেশ জুড়েই বিরিয়ানি পাওয়া গেলেও এদেশে সবচেয়ে বিখ্যাত হাজি নান্না বিরিয়ানি। এই নামে অনেক দোকান থাকলেও পুরানো ঢাকার বেচারাম দেউরিতে অবস্থিত দোকানটি আদি ও অকৃত্রিম। ১৯৬০ সালে শুরু হওয়া দোকানটি আজও চলছে। প্রথমে মোরগ পোলাও এর সাহায্যে দোকানের সুখ্যাতি হলেও বর্তমানে এটি বিরিয়ানির জন্যই সর্বাধিক পরিচিত। তবে চাইলে এর আশে পাশেই অবস্থিত আরও অসংখ্য বিরিয়ানির দোকান থেকে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের বিরিয়ানি আস্বাদন করে দেখতে পারেন।
পুরোনো ঢাকার আরেকটি বিখ্যাত খাবার হলো বাকরখানি। এই নামটির পেছনে রয়েছে চমৎকার এক প্রেমকাহিনী। যদিও নানা জনের নানা মত রয়েছে, কিন্তু নাজির হোসেন রচিত ‘কিংবদন্তি ঢাকা’ বইটি অনুসারে এই বাকরখানির খাবারটির নাম এসেছে আগা মুহাম্মদ বাকের খান ও খনি বেগমের নাম থেকে। আগা মুহাম্মদ বাকের খান ছিলেন তৎকালীন নবাবা মুর্শিদকুলী খানের পালকপুত্র। তার প্রেয়সী ছিলেন খনি বেগম। পরবর্তীতে এই প্রেমের সূত্র ধরেই দন্দ্ব লাগে উজিরপুত্র জয়নুল খানের সাথে। শেষ অবধি খনি বেগমের মৃত্যুর পর বাকের খান প্রবর্তন করেন এক মিষ্টি রুটির যার নাম ছিল বাকের-খনি। পরবর্তীতে তাই লোক মুকে হয়ে যায় বাকরখানি।
ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষত পুরানো ঢাকায় বাকরখানির অভাব নেই। তবে একদম সেরা বাকরখানিটির স্বাদ নিতে চাইলে চলে যেতে হবে লালবাগ কেল্লার পাশে। সেখানে ৭০ এর দশক থেকে ব্যবসা করছেন শাহ আলম সাহেব। তারটিই সেখানকার সবচেয়ে পুরোনো বাকরখানি। এছাড়াও 'নাসু ফারুক এর সেরা বাকরখানি’ নামক দোকানটিও অনেকের কাছে সেরার তালিকায় আছে। সেটি অবস্থিত অদূরবর্তী নাজিমউদ্দিন রোডে।
বাংলাদেশের নানা অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা পদের দারুণ সুস্বাদু কিছু মিষ্টি। এর ভেতর অনেক মিষ্টির নাম অনেক পরিচিত হলেও কিছু মিষ্টির নাম রয়ে যায় অনেকটাই আড়ালে। তেমনই একটি মিষ্টি হলো কুড়িগ্রামের ক্ষীরমোহন। কুড়িগ্রামের এই বিশেষ মিষ্টিটি স্বাদে-মানে অন্যন্য। এই মিষ্টি তৈরি হয় ক্ষীর ও মোহনের সংমিশ্রণে। এর অন্যতম আকর্ষণ এর ক্ষীর। যা তৈরি হয় গরুর খাঁটি দুধকে জ্বাল দিয়ে ঘন করে তার ভেতর নানা পদের মসলা মিশিয়ে। সাথে থাকে মোহন বা মিষ্টির সাদা অংশ। এই ক্ষীরমোহনের আবিষ্কারক হলেন সুধীর সরকার। ১৯৫৮ সালে তিনি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ছেড়ে কুড়িগ্রামে এসে চাকরি নেন। এর পর থেকেই তার আবিষ্কৃত মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
ক্ষীরমোহনের প্রাপ্তিস্থান কুড়িগ্রামের উলিপুর। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা থেকে চিলমারী নদী বন্দরের দিকে এগোতে থাকলেই রাস্তার দুই পাশে চোখে পড়বে সারিবাধা অসংখ্য দোকান। এর প্রায় প্রতিটিতেই তৈরি হয় এই বিখ্যাত ক্ষীরমোহন। তবে এর ভেতর “ওকে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট” এবং “পাবনা ভাগ্যলক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার” দোকান গুলো বেশি পুরোনো।
বাংলাদেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী মিষ্টিগুলোর মধ্যে মুক্তাগাছার মণ্ডা অন্যতম। এর সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো এটি একটি পারিবারিক ব্যবসা মাত্র। আর মুক্তাগাছার মণ্ডা বানানোর আসল রেসিপিটি পরিবারটির মধ্যেই গোপনীয় আছে। অর্থাৎ ময়মনসিংহের অন্যান্যা দোকানে যে সকল মন্ডা পাওয়া যায়, তা কাছাকাছি স্বাদের হলেও আদি রেসিপির থেকে প্রস্তুতকৃত নয়। আদি রেসিপি অনুযায়ী এই মিষ্টিটি মূলত ছানা ও চিনির সাহায্যেই তৈরি। তবে এর অতুলনীয় স্বাদের রহস্য লুকিয়ে আছে এর রদ্ধনপ্রণালীর ভেতর।
মুক্তাগাছার মন্ডা প্রথম আবিষ্কার করেন গোপাল পাল। ১৮২৪ সালে তিনি তার বিখ্যাত “গোপাল পালের প্রসিদ্ধ মণ্ডার দোকান” প্রতিষ্ঠা করেন। পাঁচ পুরুষ যাবত আজও তার বংশধরেরা ব্যবসাটি চালু রেখেছেন। এই মন্ডার প্রসারের পেছনে অবশ্য দায়ী মুক্তাগাছার জমিদারবংশ। গোপাল পালের ইতিহাস অনুযায়ী, তিনি প্রথম মন্ডা খাওয়ান সে অঞ্চলের জমিদার সুকান্ত আচার্য চৌধুরীকে। পরবর্তীতে জমিদার বংশের হাত ধরেই এই মন্ডার সুখ্যাতি দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতার পূর্বে এবং পরে বহু বিখ্যাত ব্যক্তি এই মন্ডার স্বাদ নিয়েছেন। বর্তমানে তা বিদেশেও স্বল্প পরিমাণে রপ্তানি হচ্ছে।
“গোপাল পালের প্রসিদ্ধ মণ্ডার দোকান” এর কোনো শাখা বা বিক্রয় প্রতিনিধি নেই। তাই আসল মন্ডার স্বাদ নিতে চাইলে অবশ্যই তাদের দোকানে যেতে হবে। ময়মনসিসিংহ শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মুক্তাগাছা। সেখানে পৌছে মুক্তাগাছার জমিদার বাড়ি ভ্রমণ এবং মন্ডা আহার হতে পারে চমৎকার একটি দিনের স্বাক্ষী।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বিখ্যাত মাংস রন্ধনপ্রণালীর মধ্যে অন্যতম হলো খুলনার চুইঝাল। এই রান্নার বিশেষত্ব মূলত ‘চুই’। এই ‘চুই’ হলো এক ধরনের গাছের কান্ড। ঠিকই শুনেছেন, গাছের লতা পাতা নয় বরং সরাসরি কান্ডটিই ব্যবহৃত হয় এই রান্নায়। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা সহ দক্ষিণ-পশ্চিমের বেশ কিছু জেলায় চুই একটি গুরুত্বপূর্ণ মশলা। আর এই মশলার বিশেষত্ব হলো এর ঝাল ঝাল ভাব। খুব বেশি তীব্র নয় কিন্তু মাংসে ব্যবহার করলে সমগ্র রান্নাতেই একটি ঝাল ঝাল ভাব চলে আসে। ফলে মাংসের স্বাদটা যেন আরও খোলতাই হয়ে ওঠে। অনেকে আবার সরাসরি চুইটাও চাবিয়ে রস চুষে খান। প্রধানত গরু অথবা খাসি, এই দুই ধরনের মাংসতেই চুই ব্যবহার করা হয়।
বর্তমানে ঢাকা সহ নানা যায়গায় চুই ঝালের দোকান থাকলেও এর আদি ও অকৃত্রিম স্বাদ পেতে যেতে হবে খুলনার চুকনগরে। চুকনগরের বাসিন্দা আব্বাস আলি মোড়ল খাসির মাংস দিয়ে চুইঝালের রান্নার পথিকৃত। তিনি ভারতের মাদ্রাজ থেকে রান্না শিখে এসে হোটেল প্রতিষ্ঠা করেন। তার এই বিদ্যা গ্রহণ করেন তার ছেলে মোঃ সেলিম মোড়ল। বর্তমানে তিনিই এই হোটেলের সত্ত্বাধিকারী। এ হোটেলের চুইঝালই বাংলাদেশের সেরা চুইঝাল হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে খুলনা যাওয়ার সুযোগ না থাকলে ঢাকা থেকে সিরাজ চুইগোশ রেস্টুরেন্টে চুইঝাল পরখ করে দেখতে পারেন।
বর্তমানে কোনো আঞ্চলিক রান্না যদি সারা দেশ জুড়ে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়ে থাকে তাহলে সেটি চট্টগ্রামের মেজবান। শুদ্ধ বাংলায় এটিকে মেজবান বললেও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রীতিতে একে বলে ‘মেইজ্জান’ বা ‘মেজ্জান’। এই মেজবান শব্দের অর্থ নিমন্ত্রণকারী। মূলত মেজবান কোনো খাবার নয় বরং কোনো বিশেষ অনুষ্ঠান। অনেকে আবার মনে করেন এটি শুধু কুলখানি এর অনুষ্ঠান। সেটাও একটি ভুল ধারনা। কুলখানি, আকিকা, চল্লিশা ইত্যাদি নানা ধরনের অনুষ্ঠানে মেজবান খাওয়ানো হয়। আর এই মেজবানের সবচেয়ে মনকাড়া খাবার হলো বিশেষ ভাবে রাধা গরুর মাংস। আর বর্তমানে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ৮০ ভাগ লোকই এই গরুর মাংসকেই মনে করে মেজবান। মূলত বিশেষ ধরনের মশলা ব্যবহারের ফলেই এই মাংসটি এত মজা হয়। এছাড়াও এর সাথে পরিবেশন করা নলা কাজী ও নিহারী কাজি। কাজী হলা মূলত এক ধরনের টক। এছাড়াও সাথে থাকে বুটের ডাল অথবা মাশকলাই এর ডাল। অনেক সময়ই বড়ইসমৃদ্ধ সালাদও পরিবেশন করা হয় মেজবানের সাথে।
চট্টগ্রামে না গিয়ে ঢাকা শহরে বসে খেতে চাইলে ‘মেজ্জান হাইলে আইয়ুন’ রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন। ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে তাদের ব্রাঞ্চ রয়েছে। তবে সব ব্রাঞ্চের খাবার এক রকম মজা নয়। এছাড়াও চট্টগ্রামের আসল বাসিন্দারা অনেকেই ঢাকার মেজ্জান একদমই পছন্দ করেন না। আসল মেজ্জানের স্বাদ পেতে হলে চলে যেতে হবে চট্টগ্রামে। হালিশহরের আশেপাশে বিভিন্ন দোকানে পাবেন মেজ্জানের মাংস। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো দোকানে খেতে চাইলে পরিচিতজনদের উপদেশ নেওয়াটাই ভাল।
কালাভুনা নামক খাদ্যদ্রব্যটাও চট্টগ্রামের রন্ধনশৈলীর অংশ। সাধারণত গরুর মাংস দিয়েই তৈরি করা হয় কালাভুনা। রঙ কালো হলেও খেতে দারুণ সুস্বাদু এটি। তবে অনেকে মনে করেন মাংসের কালো এই রঙটি তৈরি হয় মাংসে তেলে ভাজার কারণে। কিন্তু বাস্তবে বিভিন্ন মশলা দিয়ে নির্দিষ্ট উপায়ে রেঁধে তবেই আনতে হয় কালাভুনার এই কালো রঙ।
কালাভুনা যেহেতু চট্টগ্রামের খাবার তাই চট্টগ্রামেই এর আসল স্বাদটি পাওয়া যাবে। তবে কোনো নির্দিষ্ট দোকান নয় বরং পরিচিত জনের পরামর্শ অনুযায়ী খেলেই ভাল করবেন চট্টগ্রামে। এছাড়াও ঢাকা শহরে খেতে চাইলে ‘মেজ্জান হাইলে আইয়ুন’ এর কালা ভুনা খেয়ে দেখতে পারেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, চট্টগ্রামের থেকে সবচেয়ে দূরের শহর রাজশাহী, সেখানেও রয়েছে কালাভুনা চল। রাজশাহীতে কালাভুনা খেতে হলে যেতে হবে কাটাখালি বাজারে।
বাংলাদেশ তো বটেই, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতেই বগুড়ার দই বিখ্যাত। মজার বেপার হলো এই বিখ্যাত দই যেমন বাংলাদেশী আবিষ্কার নয়, ঠিক তেমনই বগুড়ার দইয়ের উৎপত্তি স্থল ও ঠিক বগুড়া নয়। দই খাবারটি প্রথম আবিষ্কৃত হয় ৪০০০ বছর আগে। সুমেরীয় যাযাবর জাতি প্রথম ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে দই উৎপাদন প্রক্রিয়ার প্রচলন করে। আজ এত সহস্র বছর পরেও একই নিয়ম প্রচলিত আছে। তবে বাংলাদেশে দই বানানোর প্রচলন হয় শেরপুরে। বগুড়ার পাশেই অবস্থিত শেরপুরের ঘোষ পরিবার দই তৈরি শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে পাকিস্তান আমলে প্রধানমন্ত্রী নবাব মোহাম্মদ আলী অন্যতম কারিগর গৌর গোপালকে নিয়ে যান বগুড়ায়। সেখান থেকে বগুড়ার দই এর প্রচলন। তবে আজও বগুড়ার অধিকাংশ দই তৈরি হয় শেরপুরে। কিন্তু জিআই পণ্য হিসেবে পরিচিত বগুড়রার বিখ্যাত দই পেটেন্ট (Patent) করা হয়েছে বগুড়ার নামেই।
বগুড়ার দই এর ব্যবসা এতটা বিস্তৃত হয়েছে যে আসল বগুড়ার দই পাওয়া এখন অনেকটাই কঠিন। বিশেষ করে ঢাকায় বসে তা আরও দুঃসাধ্য। তাই নিশ্চিত ভাবে আসল স্বাদের সন্ধান পেতে চলে যেতে হবে শেরপুরে। বর্তমানে সেখানকার সাউদিয়া, আলিবাবা, সম্পা, বৈকালী, ইত্যাদি দোকান গুলো বেশি বিখ্যাত।
কুমিল্লার বিখ্যাত রসমালাই এর যাত্রা শুরু ১৯৩০ সালে। কুমিল্লার মনোহপুরে প্রথমে গড়ে ওঠে মাতৃভান্ডার নামের দোকান। এর নামেই কুমিল্লার রসমালাই আজ এক নামে পরিচিত। পরবর্তীতে এর পাশেই তৈরি হয় শীতল ভান্ডা ও ভগবতী পেড়া ভান্ডা। ১৯৫০ সালে যাত্রা শুরু করে কুমিল্লা মিষ্টি ভান্ডার। মূলত আসল দোকান বলতে এই চারটিই দোকান। প্রথমে ছানার মিষ্টি বানালেও সেখান থেকেই উদ্ভব হয় রসমালাই এর।
কুমিল্লার আসল রসমালাই পাওয়া বেশ দুঃসাধ্যই বটে। কারণ কুমিল্লা তো বটেই, সারা দেশ জুড়েই এখন অসংখ্য নকল মাতৃভান্ডারের দোকান। বিশেষ করে কুমিল্লার মহাসড়কের দুই পাশে অসংখ্য দোকান মাতৃভান্ডার নাম দিয়ে ব্যবসা করছে। এদের প্রত্যেকের নামের সাথে কোনো না কোনো অংশ যুক্ত রয়েছে। কিন্তু সে সব অংশ খুব ছোট করে লিখে ‘মাতৃভান্ডার’ শব্দটি বিশাল বড় করে লেখাটাই এদের পন্থা।
তাই আসল মাতৃভান্ডারের খোজে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে কুমিল্লার কান্দিরপাড়। সেখান থেকে ২০০ গজ দূরের স্থানটিই মনোহরপুর নামে পরিচিত। সেখানে সাধারণ টিনের একটি দোকানে তৈরি হয় কুমিল্লার আসল মাতৃভান্ডারের রসমালাই। বিখ্যাত চারটি দোকান ওখানে একসাথেই অবস্থিত।
উপরের সব কয়টি খাবারই আসলে বাঙালী রন্ধনশৈলীর অংশ। কিন্তু সমসাময়িক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বেশ কিছু খাবার সারা দেশব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তেমনই একটি খাবার হলো মুন্ডি। মূলত মারমা জনগোষ্ঠী এই খাবারটির প্রচলন করে। এটি মূলত নুডলস ঘরানার একটি খাবার যা বিকালের নাস্তা হিসেবে দারুণ কাজে দেয়। নুডলস এর সাথে এর প্রধান পার্থক্য হলো এই মুন্ডি তৈরি হয় ভাত থেকে। প্রথমে ভাত ২-৩ দিন পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। এরপর তা ভাল ভাবে পরিষ্কার করে শুকিয়ে ফেলা হয়। সেটাকে গুড়োগুড়ো করে এক ধরনের ঘরে তৈরি যন্ত্রের সাহায্যে নুডলসের ন্যায় মুন্ডি তৈরি করা হয়। এই খাবারটি পার্বত্য চট্টগ্রামে ঘুরতে যাওয়া পর্যটক তো বটেই, ঢাকার মানুষরাও পছন্দ করছে। মুন্ডির প্রধান আকর্ষণ হলো এর স্যুপ। সাধারণ নুডুলস এর মতই এর রয়েছে দারুণ মজাদার একটি স্যুপ। এই স্যুপটি তৈরি করা হয় মরিচের গুড়া, পেঁয়াজ, ধনিয়া পাতা, লেবুর টক এবং শুকনো মুরগি বা মাছের সাথে।
আসল মুন্ডির স্বাদ পেতে হলে চলে যেতে হবে পার্বত্যচট্টগ্রাম। এটি একটি ঘরোয়া খাবার হলেও বান্দরবন, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি সব স্থানেই এটি এখন বাণ্যিজ্যিক ভাবে বিক্রি হয়। আর ঢাকায় খেতে চাইলে সিএইচটি কালিনারি, হেবাং ইত্যাদি ধরনের রেস্টুরেন্টে যেতে পারেন।
প্রতিটি মানুষের রুচি ভিন্ন ভিন্ন। প্রতিটি খাবার হয়তো সকলের কাছে ভাল লাগবে না। কিন্তু বাংলাদেশের বিখ্যাত খাবার গুলোর মধ্যে এগুলো অন্যতম। তবে এই তালিকার বাইরে আরও অনেক খাবারই রয়েছে যা মোটেও ফেলনা নয়। এসব খাবারের পাশাপাশি তাই সেসব খাবার পরখ করে দেখাটাও বাঞ্ছনীয়।
উত্তরঃ এটি যার যার পছন্দের উপর নির্ভর করে। তবে সেরা কিছু মিষ্টি হলো মুক্তাগাছার মন্ডা, কুড়িগ্রামের ক্ষীরমোহন, কুমিল্লার রসমালাই, টাঙ্গাইলের চমচম, নওগাঁর প্যারা সন্দেশ, নাটোরের কাচাগোল্লা ইত্যাদি।
উত্তরঃ এ বিষয়ে অনেক মতভেদ থাকলেও ‘মেজ্জান হাইলে আইয়ুন’ বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয়।
উত্তরঃ হাজী নান্না বিরিয়ানি, হাজীর বিরিয়ানি, হানিফ বিরিয়ানি, মাখন বিরিয়ানি ইত্যাদি।
25-03-2024
Top 10 in Bangladesh
পবিত্র রমজানে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের...
Read More18-03-2024
Top 10 in Bangladesh
চলছে রমজান মাস। ধর্মীয় দিক থেকে অনেক বেশি ফজিলতপূর্ণ...
Read More05-03-2024
Top 10 in Bangladesh
শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময় থেকে শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোই...
Read MoreTop 10 in...
03-10-2022
Miscellaneous...
20-08-2024
Miscellaneous...
10-12-2023
International...
03-10-2024
MAWblog strives to provide a platform for authors, reporters, business owners, academics, people who do writing as a hobby and concerned citizens to let their voices be heard by a wider community. Our goal is to publish contents that are in line with our core goals of promoting sustainable business practices, improving community harmony and facilitating knowledge sharing and ethical labour market practices.
We invite you to write and publish under any of our nine chosen categories and make an impact towards building a better and more sustainable future.