কোমল পানীয় বা সফট ড্রিংকস পছন্দ করে না, বা পান করে না এমন মানুষ আজকের দিনে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। প্রচন্ড গরমে স্বস্তি পেতে কিংবা কোনো অনুষ্ঠান বাড়িতে আথিতেয়তার অন্যতম আনুষাঙ্গিক হচ্ছে কোমল পানীয়। এছাড়াও বন্ধুদের জমজমাটি চায়ের আড্ডা এই কোমল পানীয় ছাড়া যেন অসম্পূর্ণ। কোমল পানীয় এর ভেতরে কোকাকোলা ছাড়াও অন্যান্য ব্র্যান্ড যেমন পেপসি, সেভেন আপ, স্প্রাইট ইত্যাদি সমভাবে জনপ্রিয়। এই যে যেকোনো অবস্থায় গলা ভেজাতে পছন্দের কোমল পানীয়টি আমরা কিনে নিচ্ছি, আমরা কি জানি এই কোমল পানীয়ের ব্যবসা আসলে শুরু হলো কিভাবে? চলুন আজ জানার চেষ্টা করি, কিভাবে এই কোমল পানীয়ের ব্যবসার উৎপত্তি।
উত্তরঃ ১৭শ শতকে প্রথম কোমল পানীয় এর ব্যবসা শুরু হয়। এসময় বিক্রেতারা পিঠে পাত্রে করে কোমল পানীয় বহন করতেন এবং পথিকের তৃষ্ণা মেটাতেন। ১৬৭৬ সালে সর্বপ্রথম এই একচেটিয়া ব্যবসার দায়িত্বে ছিলেন প্যারিসের কম্প্যাগনি দেস লিমোনাডিয়ার্স।
উত্তরঃ কোমল পানীয় বা সফট ড্রিংকস হচ্ছে এক ধরনের এলকোহল মুক্ত তরল পানীয়। কার্বনসমৃদ্ধ পানির দ্রবীভূত রূপকে কার্বনেটেড বেভারেজ বলা হয়, যা আমরা কোমল পানীয় হিসেবে পান করি। ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের মিষ্টিযুক্ত ফ্লেভার যুক্ত করে কোমল পানীয়তে ভিন্নতা আনা হয়।
উত্তরঃ শুনলে অবাক হতে হবে যে, আজকের কোমল পানীয়র মূল উপকরণ কার্বন এবং চিনি হলেও অতীতে এমনটি ছিলো না। আবিষ্কারের শুরুতে কোমল পানীয়ের মূল উপকরণ ছিলো তাজা ফলের রস। মধ্যযুগে আপেল, বেদানা, আঙুর ইত্যাদি ফলের রসে সোডা মিশিয়ে তৈরি করে হতো কোমল পানীয়।
উত্তরঃ এলকোহল যুক্ত পানীয়কে হার্ড ড্রিংকস বলা হয়। কোমল পানীয় তৈরিতে কোনো ধরনের মাদক ব্যবহার করা হয় না। তাই হার্ড ড্রিংকস থেকে আলাদা করতেই পানীয়ের নাম কোমল পানীয় বা সফট ড্রিংকস রাখা হয়।
উত্তরঃ বিভিন্ন কোম্পানী কোমল পানীয়কে হজমে সহায়ক বললেও তা আসলে ভুল। ভরপেট ভারী আহারের পর কোমল পানীয় খেলে এতে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস দ্রবীভূত থাকে বলে এক ধরনের ঢেঁকুর এসে তা পেটের গ্যাস থেকে আরাম দেয় কিছুটা। এটাকেই আমরা হজমে সহায়তা করছে ভেবে ভুল করি।
উত্তরঃ কোমল পানীয়ের ক্যান কিংবা বোতল খুললে তা থেকে বুদবুদ উঠতে দেখা যায়। মূলত কার্বন ডাই অক্সাইডকে অতিরিক্ত চাপ দিয়ে পানির মধ্যে দ্রবীভূত করে কোমল পানীয় তৈরি করা হয়। সেই কারনেই কোমল পানীয়তে বুদবুদ বা গ্যাস বাবল উঠতে দেখা যায়।
উত্তরঃ ডীপ ফ্রিজে পানি বা যেকোনো বস্তু রাখলে তা বরফে পরিণত হয়ে যায়। কিন্তু কোমল পানীয় যাতে সহজে জমে যেতে না পারে কিংবা বরফে রূপান্তরিত না হতে পারে সেজন্য এই পানীয়তে ইথিলিন গ্লাইকল ব্যবহার করা হয়।
উত্তরঃ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে কোমল পানীয়ে রয়েছে ইথিলিন গ্লাইকল, কৃত্রিম রঙ, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, ফসফরিক এসিড, বেশি মাত্রার ক্যাফেইন, ঘনচিনি, অপিয়েট ও সিলডেনাফিল সাইট্রেট-এর মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান। এসব রাসায়নিক উপাদান গ্রহণে কিডনীতে পাথর, ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে হৃদরোগ হবার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এজন্যই কোমল পানীয়কে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।