মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের পরেই আসে শিক্ষা। শিক্ষা হচ্ছে জ্ঞানলাভের একটি পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের অন্তর্নিহিত গুণাবলী বিকশিত হয়। নৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের পাশাপাশি শিক্ষার অন্যতম প্রধান একটি লক্ষ্য হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে জীবনযাত্রার মান ঊর্ধ্বমুখী করা।
প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় পাঠদানের মাধ্যমে যে শিক্ষা প্রদান করা হয়, তা হচ্ছে পুঁথিগত শিক্ষা। আর পুঁথিগত শিক্ষা কাজের মাধ্যমে দক্ষতার সাথে বাস্তবায়িত করার নামই হচ্ছে কর্মমুখী শিক্ষা। সহজ করে বলতে গেলে, যেকোনো কর্মক্ষেত্রে সফল হতে প্রয়োজনীয় জ্ঞানের সাথে দক্ষতা অর্জনই হচ্ছে কর্মমুখী শিক্ষা।
বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কর্মহীনতা বা বেকারত্ব সমস্যা। জীবনের একটি দীর্ঘ সময় ধরে পড়াশুনা করে, ধাপে ধাপে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ডিগ্রী অর্জন করেও জনসংখ্যাস্ফীতির জন্য এ দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা হতাশাজনক এবং একইসাথে আশঙ্কাজনকও বটে। আবার ক্ষেত্র বিশেষে দেখা যাচ্ছে, দেশে সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী বেকারের অভাব না হলেও কোনো নির্দিষ্ট কাজে দক্ষ জনবলের বেশ অভাব। অর্থাৎ, প্রচলিত শিক্ষার হার বাড়লেও, কয়েক যুগ আগের থেকে দেশে শিক্ষিত মানুষের হার বাড়লেও রয়ে গেছে দক্ষ জনগোষ্ঠীর অভাব, যা কর্মমুখী শিক্ষার প্রভাব ছাড়া পূরণ করা প্রায় অসম্ভব।
দেশ ডিজিটাল হবার সাথে সরকারী এবং বেসরকারি বিভিন্ন খাতে দক্ষ লোকবলের অভাবও যেন প্রবল হচ্ছে। চাকরীর বাজারে আজ ডিগ্রীর পাশাপাশি দক্ষতার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কিছুক্ষেত্রে ডিগ্রী নয়, বরং দক্ষতাই হচ্ছে চাকরীর মূল যোগ্যতা। তাই ব্যক্তিগত কিংবা পেশাগতভাবে দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই।
যে শিক্ষা পদ্ধতিতে কর্মকে ঘিরে শিক্ষা প্রদান করা হয়, তাইই কর্মমুখী শিক্ষা। একজন ব্যক্তিকে তার আত্মপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করার লক্ষ্যে বিশেষ কোনো কর্মে প্রশিক্ষিত করে তোলা। অর্থাৎ যে শিক্ষাব্যবস্থায় মানুষ কোনো একটি বিষয়ে হাতে-কলমে শিক্ষা লাভ করে এবং শিক্ষা শেষে জীবিকার্জনের যোগ্যতা অর্জন করে, তাকেই কর্মমুখী শিক্ষা বলে।
ইউটিউবে এখন ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন বিষয়ের উপর ফ্রি ক্লাস পাওয়া যায়। এছাড়াও অনেক প্রতিষ্ঠান অল্প খরচে ফ্রিল্যান্সিং এর প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
অসুস্থ মানুষকে সেবাদান খুবই মহৎ একটি কাজ। আগে থেকেই সাধারণত এই কাজকে মানুষ বেশ সম্মান এবং গর্বের চোখে দেখে থাকে। তবে বর্তমানে স্বাস্থ্যখাতে নার্সিং পেশার গুরুত্ব বাড়ছে। তাই এই বিষয়ে পড়াশুনা করে নার্সিংকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করছেন অনেকেই।
ব্রাক ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক সহ আরো অনেক ব্যাংক অল্প সুদে চাষের জন্য লোন দিয়ে থাকে।
কুটির শিল্প বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি শিল্প। এ শিল্পে বাংলার আবহমান সংস্কৃতির প্রতিভাস ফুটে ওঠে, যার নির্মাতা পল্লী অঞ্চলের মানুষ। আক্ষরিক অর্থ অনুসারে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে পরিচালিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান যা বাড়িতে অথবা বাড়ির বাইরে কোথাও স্থাপিত হতে পারে সেটাই কুটির শিল্প। কুটির শিল্পে পারিবারিক সদস্যদের শ্রম এবং পারিবারিক পরিবেশে বিদ্যুৎ ও ভারী যন্ত্রপাতির ব্যবহার না করে হাতের সাহায্যে এসব দ্রব্য ও দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করা হয়।
বৃত্তিমুখী শিক্ষা হল, এমন এক শিক্ষা যার দ্বারা শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে বাস্তবে কাজের মাধ্যমে কোনো বিশেষ বৃত্তি সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে। এই শিক্ষার উদাহরণগুলি যেমন— কৃষিকাজ, ক্ষুদ্র ও বৃহৎ নানা শিল্পের কাজ, যন্ত্র চালানোর কাজ, বিভিন্ন ধরনের কাজ ইত্যাদি।
মানুষের জীবনযাত্রার ধরন ও বৈশিষ্ট্যের ব্যাপক পরিবর্তন এবং জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।
আমিষের চাহিদা পূরণে মাছ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশ প্রয়োজনীয় আমিষ গ্রহনের দেশগুলোর তালিকায় অনেক নীচে অবস্থান করছে। তাই জনসংখ্যার সাথে পাল্লা দিতে মাছ চাষের গুরুত্ব দিনদিন বাড়ছে।
সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে যে, সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষাজীবন শেষ করে একটা উপযুক্ত চাকরির অভাবে নিরন্তর সংগ্রাম করতে হয়, তার বিপরীতে কর্মমুখী শিক্ষা ঠিক তাই যেখানে শিক্ষার্থী শিক্ষালাভের পূর্বেই তার কর্মক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে থাকে।
নদীর প্রবহমান পানিতে প্রচুর অক্সিজেন থাকায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া খাঁচার মাছের বর্জ্য পানির স্রোতে অন্যত্র চলে যায়, ফলে পানি দূষিত হয় না। যদিও খাঁচা তৈরিতে কিছু খরচ হয়, তথাপি ভূমির মালিকানা সমস্যা, ভূমি ক্রয় এবং ভূমির ব্যবহার থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর দীর্ঘ এবং স্বল্পমেয়াদী বিভিন্ন কোর্স এবং প্রশিক্ষণ আছে। নিজস্ব চাহিদা অনুযায়ী সেগুলোর মধ্যে একটি বেছে নেওয়া যেতে পারে।
বর্তমানে দক্ষতার দিক থেকে এগিয়ে থাকা দর্জিরা বিভিন্ন পোষাক কারখানার সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ করে থাকে। তাই এই পেশাকে এখন আর ছোট করে দেখবার সুযোগ নেই। ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেনিং নেওয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোষাক হাউজে দর্জিদের ভালো বেতনে চাকরীর সুযোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।