দীর্ঘ মেয়াদে ব্যক্তিগত মূলধন কখনোই পর্যাপ্ত নয়। তবে কী পরিমাণ অর্থ ঋণ হিসেবে গ্রহণ করা হবে এবং সেগুলোর উৎস কী হবে, তা নির্ভর করে ব্যবসার পরিধি এবং ধরনের ওপর। আমাদের দেশে ব্যাংকগুলো মূলত পরিচিত গ্রাহকদের সঙ্গেই চুক্তিতে যেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তা ছাড়া ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে আগের বছরগুলোর আয়-ব্যয়, জামানত, পূর্বপরিচিতি, কোম্পানির কোনো পরিচালকের গ্যারান্টি ইত্যাদি খুঁজে থাকে।
এই ভিডিওতে আমরা ব্যবসায়ের জন্য মূলধন বাড়ানোর বিকল্প উত্সগুলি নিয়ে আলোচনা করব।
উত্তরঃ বিভিন্ন সময় সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চলমান সমস্যা সমাধানের উপায় খোঁজে। তা ছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্টার্টআপের জন্য মূলধন দেওয়ার সুযোগও পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে একজন উদ্যোক্তা তাঁর আইডিয়াটি জমা দেন, তারপর কমিটি সেটি বিচার–বিশ্লেষণের পর গ্রহণ করলে তহবিল পাওয়া যায়। স্টার্টআপের অর্থায়নের জন্যে এ ধরনের সরকারি প্রকল্পগুলো প্রোগ্রামগুলো বেশ কার্যকর। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় প্রায়ই এ ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়।
উত্তরঃ একটি স্টার্টআপ শুরু করার জন্য ব্যক্তির কিছু সঞ্চয় থাকা জরুরি, যা দিয়ে প্রাথমিকভাবে ছোট করে কাজটা শুরু করা যায়। নিজের জমানো টাকা কিংবা আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবের থেকে নেওয়া অর্থ দিয়ে কাজ শুরু করাটাকে বুটস্ট্র্যাপিং বলা হয়। তবে মনে রাখতে হবে, বড় ধরনের কোনো ব্যবসার জন্য এই ধরনের উৎস একমাত্র ভরসার জায়গা হতে পারে না। এগুলো ছোট ছোট উদ্যোগে বেশ ভালো কাজে আসে। ছোট ছোট উদ্যোগগুলো পরবর্তী সময়ে অনেক বড় হলেও প্রাথমিকভাবে খুব বেশি টাকাপয়সার দরকার হয় না।
উত্তরঃ প্রযুক্তির উন্নয়নের সুবাদে সামাজিক এই প্ল্যাটফর্ম ধীরে ধীরে বেশ সফলভাবে গড়ে উঠছে। এই প্ল্যাটফর্মে একজন উদ্যোক্তা শুরুতে তাঁর ভাবনা বা চ্যালেঞ্জগুলো একদল ব্যক্তি বা বিনিয়োগকারীর সামনে উপস্থাপন করেন। কেউ যদি আগ্রহী হন, তিনি আইডিয়াটিকে বাস্তবে রূপদান করতে টাকা দিতে পারেন। এভাবে এক বা একাধিক মানুষের দেওয়া টাকায় গড়ে ওঠে একটি ব্যবসা। বাংলাদেশে অপরাজয় ডট ওআরজি (oporajoy.org) নামে একটি ক্রাউড ফান্ডিংয়ের প্ল্যাটফর্ম আছে।
এই প্রক্রিয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এতে যেমন অর্থের জোগান হয়, তেমনি বিনা খরচায় এই উদ্যোগ বা উদ্যোক্তার একটা প্রচারণাও হয়ে যায়, ফলে সাধারণ মানুষ এ সম্পর্কে জানতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো, এই প্ল্যাটফর্ম অনেক বেশি প্রতিযোগিতাপূর্ণ। তাই যথেষ্ট ভালো ‘আইডিয়া’ নিয়েই আপনাকে ক্রাউড ফান্ডিংয়ের দ্বারস্থ হতে হবে।
উত্তরঃ বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে এখনো ব্যবসায় ঋণের জন্য মানুষের মূল ভরসার জায়গা বিভিন্ন ব্যাংক। সব সময় যে ঋণ গ্রহণের জন্য ব্যাংক একটি ভালো সিদ্ধান্ত, বিষয়টা এমন নয়। কারণ, আমাদের দেশে ব্যাংকগুলো মূলত পরিচিত গ্রাহকদের সঙ্গেই চুক্তিতে যেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তা ছাড়া ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে আগের বছরগুলোর আয়-ব্যয়, জামানত, পূর্বপরিচিতি, কোম্পানির কোনো পরিচালকের গ্যারান্টি ইত্যাদি খুঁজে থাকে। এসব একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসার পক্ষে গেলেও একদম শূন্য থেকে শুরু করা একজন উদ্যোক্তার পক্ষে থাকে না। এ ক্ষেত্রে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সবচেয়ে উত্তম সিদ্ধান্ত। নতুন একটি ব্যবসায়িক আইডিয়া যেখানে ঝুঁকিতে পরিপূর্ণ, সেখানে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট প্রতিষ্ঠান ঝুঁকি গ্রহণ করতে আগ্রহী থাকে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১১টির বেশি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনসহ পুরোদমে উদ্যোগের ক্ষেত্রে অর্থায়নের কাজ করে যাচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তাদের উচিত হবে, ব্যবসায় অর্থসংস্থানের জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটালের জোগান নিশ্চিত করা।
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল দিয়ে বিশ্বের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলো আজকের পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ, স্ন্যাপ ডট ইনক, কিং ডিজিটাল এন্টারটেইনমেন্ট, যা ক্যানডি ক্রাশ সাগা গেইমটি তৈরি করেছে—এরা সবাই ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মাধ্যমেই নিজেদের ব্যবসায় অর্থসংস্থান করেছে।
উত্তরঃ বর্তমানে দেশের স্টার্টআপ বা উদ্যোগগুলোকে তুলে ধরার জন্য রবির আর-ভেঞ্চারস, স্টার্টআপ বাংলাদেশের মতো বেশ কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য বা সেবা উদ্ভাবনের ধারণা তুলে ধরে যথাযথ মেন্টরিং, দিকনির্দেশনা ও বিনিয়োগের মতো সুযোগ পাচ্ছেন। স্থানীয় স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের জন্য গড়ে ওঠা ৫ প্ল্যাটফর্ম -
আর-ভেঞ্চারস (www. robiventures. com)
স্টার্টআপ বাংলাদেশ
স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপ
জিপি এক্সেলারেটর
টাইগার চ্যালেঞ্জ
এছাড়াও,
Idea
Future startup ও নতুনদের বেশ সাপোর্ট করে।