জাপান থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি আমদানির পদ্ধতি | How to import second hand cars from Japan

Description

যেহতু বাংলাদেশে বিপুল পরিমান সেকেন্ড হ্যান্ড জাপানি গাড়ি আমদানি করা হয়, এই আমদানির কাজটি কখনো কখনো বিভিন্ন এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি মানুষের সুবিধার্থে করে দেয়। 

 সেকেন্ড হ্যান্ড জাপানি গাড়ি, মাইক্রোবাস, ট্রাক্টর, মিনিবাস, জীপগাড়ি এবং পুরানো গাড়ি জাপান থেকে আনা যাবে। তবে এসব সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি আনার জন্য কিছু শর্ত ও নিয়ম মানতে হয়। 

এই ভিডিওতে আমরা এক নজরে বাংলাদেশে গাড়ির আমদানি প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানবো

  • প্রশ্ন ১: অন্য দেশ থেকে কিভাবে সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি বাংলাদেশে আমদানির করা হয় ?

    উত্তরঃ সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি, মাইক্রোবাস, ট্রাক্টর, মিনিবাস, জীপগাড়ি এবং পুরানো গাড়ি  অন্য দেশ  থেকে আনা যাবে। তবে এসব সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি আনার জন্য কিছু শর্ত ও নিয়ম মানতে হয়।

    a) ব্যবহৃত গাড়ি গাড়িগুলো যে দেশে তৈরি, শুধুমাত্র সে দেশ থেকেই আনা যাবে। তৃতীয় কোন দেশ থেকে আনা যাবে না। অর্থাৎ এক দেশে তৈরি করে, অন্য দেশ থেকে পাঠানো যাবেনা।

    b) যানবাহনগুলো চার বছরের বেশী পুরান হওয়া যাবেনা।

    c) আমদানিকৃত গাড়িগুলোর বয়স নির্ধারণের জন্য, চ্যাসিস উৎপাদনের পরবর্তী বছরের প্রথম দিন থেকে গাড়ির বয়স গণনা করতে হবে।

    d) বাংলাদেশে গাড়ি আমদানির জন্য গাড়িগুলোকে ‘রাইট হ্যান্ড ড্রাইভ’- অর্থাৎ গাড়ির ইস্টিয়ারিং ডান দিকে হতে হবে।

    e) যদি জাপান থেকে গাড়ি আমদানি করনে তবে জাপান অটো অ্যাপ্রাইসাল ইন্সটিটিউট কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেটে সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ির বয়স, মডেল নম্বর,  চেসিস নম্বর ইত্যাদি থাকতে হবে। এই সার্টিফিকেটগুলো অবশ্যই কাস্টমস অথোরিটির নিকট জমা দিতে হবে।

     

    যেহেতু প্রক্রিয়াটি দীর্ঘমেয়াদি হয় তাই কমপক্ষে এক মাসের জন্য পোর্টে স্টোরেজ রাখা উচিৎ।

     
  • প্রশ্ন ২: কীভাবে গাড়ি পাঠানো হয়?

    উত্তরঃ জাপান থেকে গাড়ি বাংলাদেশে সমুদ্রপথে জাহাজে করেই আনতে হয়। জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে গাড়িগুলো ঢাকায় আসে। জাপানি গাড়িগুলোর মধ্যে টয়োটা গাড়ি সবথেকে বেশী পরিমাণে বাংলাদেশে আমদানি করা হয়। কারন টয়োটার চাহিদাই বাংলাদেশে সবচাইতে বেশি।

    সাধারণত বিদেশ থেকে জাহাজে গাড়ি আনার প্রক্রিয়াটিকে ‘রোরো’ বলা হয়। রোরো বলতে ‘রোর অন’ এবং ‘রোর অফ’। অর্থাৎ গাড়ি কন্টেইনার থেকে নামানো বা ওঠানো বোঝানো হয়। এরপরও যদি কোন ক্রেতা বিশেষ কোন পদ্ধতিতে গাড়ি আনাতে চায় তাহলে আনাতে পারে। সেক্ষেত্রে আনার পদ্ধতি ও কন্টেইনারের উপর নির্দিষ্ট পরিমান খরচ দিতে হয়।

     

  • প্রশ্ন ৩: পোর্ট ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কি কি কাগজ পত্র লাগে?

    উত্তরঃ পোর্ট ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয়  কাগজ পত্র লাগে:

    i. ওয়ার্ক পারমিট এবং মূল পাসপোর্ট ।

    ii. রেজিস্ট্রেশন এবং গাড়ির বয়স নির্ধারণের জন্য চালানপত্র।

    iii. জাহাজে গাড়ি বহনের বিল এর মূল কপি।

    iv. বিদেশীদের জন্য আমদানি, রপ্তানির ক্ষেত্রে, প্রধান নিয়ন্ত্রকের থেকে আমদানির অনুমতিপত্র।

    v. শিরোনাম এবং নিবন্ধনের সার্টিফিকেট।

    vi. মূল দেশের সার্টিফিকেট (যে দেশে গাড়িটি তৈরি করা হয়েছে তার সার্টিফিকেট)।

    vii. গাড়ি আমদানির অনুমোদিত চিঠি।

    viii. গাড়ির অবস্থার পূর্ণাঙ্গ একটি রিপোর্ট।

  • প্রশ্ন ৪: কি পক্রিয়ায় বাংলাদেশে গাড়ি আমদানি করা হয় ?

    উত্তরঃ রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দাম নতুনের চেয়ে বেশ কম হয় এবং এই দাম কমার পেছনে কৃতিত্ব বিদ্যমান পুরোপুরি শুল্কব্যবস্থার।

    রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্ক আরোপের সময় মূল দাম বা ট্যারিফ মূল্য নতুন গাড়ির চেয়ে কিছুটা কমিয়ে ধরা হয়,মূলত এটাই দামের ব্যবধান গড়ে দেয়।

    বর্তমানে ৫ বছর পর্যন্ত পুরোনো রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমাদের দেশে আমদানি করা যায়। গাড়ির ইঞ্জিনের সিসিভেদে সম্পূরক শুল্ক কমবেশি হয়।

    (ট্যারিফ মূল্য তালিকা সাধারণত যে পোর্ট দিয়ে আমদানি করবেন সেই পোর্টেই পাবেন।)

    আসলে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ট্যারিফ মূল্য নির্ধারণের কৌশলটি একটু ভিন্ন, গাড়ি বেশি পুরোনো হলে ট্যারিফ মূল্য বেশি কমবে অর্থাৎ গাড়ির বয়স যতো বাড়বে রানিং ইয়ার থেকে ট্যারিফ মূল্য ততো বেশি কমবে।

    বছর হিসেবে অবচয়ন সুবিধা দিয়ে ট্যারিফ মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

    এবছর এনবিআরের নিয়ম অনুযায়ী,

     ৬ থেকে ১২ মাসের জন্য ১৫% ।

     ১-২ বছরের জন্য ২৫%,

     ২-৩ বছরের জন্য ৩৫% ,

     ৩-৪ বছরের জন্য ৪০%,

     ৪-৫ বছরের জন্য ৪৫% পর্যন্ত অবচয়ন সুবিধা পাওয়া যায়।

    ( উল্লেখ্য এই হিসাব প্রতিবছর পরিবর্তনশীল।)

    উদাহরণ দিয়ে বলছি , ধরুন আপনি একটি ৫বছরের পুরোনো একটি গাড়ি আমদানি করছেন (২০১৪ মডেলের কার, বর্তমানে ২০১৯ সাল চলে অর্থাৎ ২০১৯ সাল থেকে ৫ বছর আগের পুরোনো গাড়ি আমদানি করছেন) আমদানি করা ৫ বছরের পুরোনো রিকন্ডিশন্ড গাড়িটি ১০০ টাকা ঘোষণা দিয়ে আমদানি করলেন,

    এবার তার ট্যারিফ মূল্য নির্ধারণ করতে হলে আমদানি মূল্য থেকে ৪৫% বাদ দিতে হবে। সেই হিসাবে ওই গাড়ির ট্যারিফ মূল্য হবে ৫৫ টাকা ,আমদানি ও সম্পূরক শুল্কসহ অন্যান্য শুল্ক-কর বসবে এই ৫৫ টাকার উপর। আর যদি গাড়িটি নতুন হতো তবে ১০০ টাকার উপর ই আমদানি ও সম্পূরক শুল্কসহ অন্যান্য শুল্ক-কর বসবে।

     

  • প্রশ্ন ৫: কিভাবে গাড়ীর টোটাল ডিউটি নির্ধারণ করা হয়?

    উত্তরঃ গাড়ীর টোটাল ডিউটি নির্ধারণ করা হয়:

    1) নতুন ও পুরোনো—দুই ধরনের গাড়ির ট্যারিফ মূল্যের ওপরেই ২৫% আমদানি শুল্ক, 

    2) সিসিভেদে সম্পূরক শুল্ক (১৫ থেকে ৫০০ শতাংশ),

    3) ১৫% মূল্য সংযোজন কর (মূসক),

    4) ৫% অগ্রিম কর,

    5) ৫%নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক,

    6) ৪% অগ্রিম ব্যবসায় মূসক (এটিভি) দিতে হয়।

     
  • প্রশ্ন ৬: গাড়ি আমদানি করার ধাপ গুলো কি কি ?

    উত্তরঃ গাড়ি আমদানি করার ধাপ গুলো:

    ১) এল সি ওপেন করতে হবে।

    ২) পি আই আনতে হবে।

    ৩) PSIC (Pre-shipment Inspection Certificate) লাগবে। এটার মাধ্যমে আপনার গাড়িটি কত বছরের পুরাতন সেটা জানতে পারবে।

    ৪।JAAI (The Japan Auto Appraisal Institute) থেকে Certificate আনতে হবে যদি গাড়িটি জাপান থেকে আনা হয়।

     

  • প্রশ্ন ৭ : একটা গাড়ী আমদানি করতে আর কি কি খরচ লাগে ?

    উত্তরঃ একটা গাড়ী আমদানি করতে আর খরচ লাগে:

    ১) Inspection Certificate চার্জ ৩০০০ ডলার ( কম বেশি)।

    ২) গাড়ীর দামের সাথে চট্টগ্রাম পোর্টে শিপমেন্ট কস্ট ১৩০০-১৪০০ ইউএস ডলার,

    ৩) PSIC (Pre-shipment JAAI ফী ইত্যাদি প্রায় $১৭০০-$১৮০০ ডলার এক্সট্রা যোগ হবে।)

    ৪) দেশে পৌছাঁলে সি & এফ এ্যাজেন্ট দিয়ে গাড়ী ছাড়াতে হবে - এখানে কিছু খরচ আছে।

    ৫) প্লাস cc অনুযায়ী ইমপোর্ট ডিউটি তো আছেই।

     

    বি:দ্র: স্বাভাবিক নিয়মে একটি গাড়ি আমদানির পর বন্দর থেকে ওই গাড়ি ৩০ দিনের মধ্যে খালাস করতে হয়। এর মধ্যে কোনো গাড়ি খালাস না হলে কাস্টমস থেকে গাড়ির মালিককে ১৫ দিনের মধ্যে গাড়ি খালাসের জন্য চিঠি দেয়া হয়। এতেও কাজ না হলে গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিয়ম মতে, নিলামে ওঠা প্রতিটি গাড়ির জন্য কিছু টাকা জরিমানা গুনতে হয়।

     
Close
Research Methodology & Paper Publication (With SPSS and AMOS basic)
MAwbiz.com