ঢাকায় বাড়ি করাটা তো আর মুখের কথা না। সে ক্ষেত্রে ঝক্কি- ঝামেলাও অনেক। ঢাকাতে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে প্রথমেই প্রয়োজন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদন। এই ভিডিওতে আজকে আমরা রাজউকে বাড়ি নির্মাণের নকশা অনুমোদনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো । আশা করি ভিডিওটি আপনাকে সহজেই রাজউক থেকে বাড়ির নকশা অনুমোদন পেতে সহায়তা করবে।
রাজউকে বাড়ি নির্মাণের নকশা অনুমোদনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন থাকে তার জীবনের কষ্টার্জিত সকল সঞ্চয় দিয়ে তার কল্পলোকের বাড়িটি নির্মাণ করা। আর এ বাড়ি নির্মাণের প্রথম এবং অন্যতম প্রধান ধাপ হলো নকশা অনুমোদন। ঢাকায় এই অনুমোদন প্রদানের কাজটি করে থাকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। অনুমোদনের জন্য নির্ধারিত পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে অনেককেই পোহাতে হয় নানাবিধ ঝক্কি-ঝামেলা।
আজকে রাজউকে বাড়ি নির্মাণের নকশা অনুমোদনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো
রাজউকে সাধারণত তিন ধরনের ভূমি চিহ্নিত করা হয়—
1.রাজউকের প্লট রাজউকের প্লটে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য আবেদন করতে হলে রাজউকের এস্টেট শাখা থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে।
2.রাজউক অনুমোদিত আবাসিক প্রকল্পের প্লট রাজউক অনুমোদিত বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের প্লট হলে রাজউকের নগর পরিকল্পনা শাখার প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে।
3.ব্যক্তিমালিকানাধীন প্লট। আর যদি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্লট হয় সে ক্ষেত্রে রাজউকের নগর পরিকল্পনা বিভাগ থেকে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র নিতে হবে। নগর পরিকল্পনা বিভাগ এলাকা অনুযায়ী ছাড়পত্র দেবে। ওই ছাড়পত্র নিয়ে নির্মাণ অনুমোদনের জন্য নকশা রাজউকের ‘ইমারত নির্মাণ কমিটি’তে দাখিল করতে হয়।
রাজউক থেকে বাড়ির নকশা অনুমোদনের জন্য বেশ কিছু Technical / Engineering / Complex কাগজ পত্র জমা ও তৈরী করতে হয় , তাই অনুরোধ করবো যদি আপনি এই বিষয় গুলো ভালো মতো না জানেন , তাহলে দক্ষ ব্যক্তির পরমার্শ নিন
উত্তরঃ জমিতে বাড়ি নির্মাণের পূর্বে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জমির দাগ নম্বর এবং মৌজা নম্বর দিয়ে যাচাই করে দেখতে হবে যেজমিটি রাজউকের ড্যাপ অর্থাৎ ডিটেইল এরিয়া প্লানের কোন শ্রেণী ভুক্ত। ড্যাপে যদি জমির শ্রেণি আবাসিক হয়ে থাকে কেবল তখনি আপনি উক্ত জমিতে আবাসিক বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন পাবেন।
2. জমির শ্রেণী নিশ্চিত হওয়ার পরে এবার রাজউকের নির্ধারিত ফরমে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্রের বা NOC এর জন্য রাজউকের নিকট আবেদন করতে হবে।
1.
উত্তরঃ ব্যক্তিমালিকানাধীন বাড়ীর নকশা অনুমোদন করতে রাজউ কে যেসব কাগজ পত্র জমা দিতে হবে তাহলো, জমি রেজিস্ট্রেশনের ফটোকপি, খাজনা, জমা, খারিজ, CS, RS, মৌজা, থানানাম, অঙ্গীকারনামা, নির্ধারিত ফর্মে ছাড়পত্রের আবেদন ও উক্ত ফর্ম অনুযায়ী কাগজ পত্র ও দলিলাদি দাখিল করতে হবে । এছাড়া ব্যাংকে নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে।
উত্তরঃপ্রাতিষ্ঠানিক মালিকানাধীন স্থাপনার নকশা অনুমোদনে বরাদ্দপত্র, কিস্তি পরিশোধের রিসিট, ভূমি জরিপের নকশা, লিজ দলিল, পাওয়ার অব এ্যাটর্নী (তৃতীয় ব্যক্তিকে হস্তান্তরের ক্ষেত্রে), ছাড়পত্রের আবেদন ফরম ও উক্ত ফরম অনুসারে কাগজপত্র ও দলিলাদি দাখিল করতে হয়।
উত্তরঃ উভয় ধরনের মালিকানাধীন স্থাপনার নকশা প্রণয়নের ক্ষেত্রে “ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮” অনুযায়ী প্লটের সামনে বিদ্যমান রাস্তার জন্য প্রযোজ্য FAR অনুসরণ করতে হবে।
1.ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্রের ফরমের সাথে রাজউকের নির্ধারিত ফি প্রদানপূর্বক জমির কাগজপত্র এবং সাইট প্ল্যানের প্রিন্ট কপি জমা দিতে হবে।
2.আবেদনের পর রাজউকের জরিপ কর্মকর্তারা জমিতে পরিদর্শন করবেন। কর্মকর্তাদের রিপোর্ট পজেটিভ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজউক থেকে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র প্রদান করবে।
3.ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র পাওয়ার পর এবার জমির মাটি (সয়েল) টেস্ট করাতে হবে। সয়েল টেস্ট রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপে যেতে হবে।
4.এরপর দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে বাড়ির নকশা যেমন- স্ট্রাকচারাল ডিজাইন, লে আউট ডিজাইন, প্লাম্বার ডিজাইন ইত্যাদি নকশাগুলো করাতে হবে।
5.সবগুলো নকশা প্রস্তুত করে পুনরায় রাজউক থেকে উক্ত নকশাগুলো পাশ করাতে হবে। নকশা চূড়ান্তভাবে পাশ করাতে রাজউকের নির্ধারিত ফরমে পুনরায় আবেদন করতে হবে এবং সাথে নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে।
6.রাজউকের ইঞ্জিনিয়াররা আপনার ডিজাইনগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সন্তুষ্ট হলে এবং সব কিছু ঠিক থাকলে আপনার চাহিদা মোতাবেক বাড়ির নকশা অনুমোদন প্রদান করবে।
উত্তরঃনকশা অনুমোদনের জন্য যে সকল দলিল ও কাগজ জমা ও তৈরী করতে হয় একজন Non-Technical অথবা Engineer না হলেও যেন বুঝ্তে পারেন তা অত্যন্ত সহজ ভাবে উত্থাপন করছি
৮ প্রস্থ নক্সাসহ আবেদন ছক (ফরম-৩০১) পূর্ণাঙ্গভাবে পূরণ ও স্বাক্ষর।
নক্সা প্রণয়নকারী কারিগরী ব্যক্তির পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য নম্বরসহ স্বাক্ষর।
বৈধ মালিকানার হাল নাগাদ দলিলাদির সত্যায়িত অনুলিপি প্রদান।
A4 সাইজের কাগজে FAR এর হিসাব দাখিল করন।
গভীর ভিত্তি, পাইলিং, বেজমেন্ট নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ছকে (ইন্ডেমনিটি বন্ড ফরম – ৩০১) ক্ষতিপূরণ মুচলেকা প্রদান (প্রযোজ্য হলে)।
A0-A4 সাইজে মেট্রিক ম্যাপে নক্সা প্রণয়ন ও দাখিল করন।
নক্সায় আবেদনকারী (মালিক/আম-মোক্তার) নাম, ঠিকানা ও স্বাক্ষর প্রদান।
ছাদের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং পানির লে-আউট প্রদর্শন পূর্বক প্রণীত ছাদের নক্সা।
প্রবেশ, নির্গমন, ড্রাইভওয়ে প্রদর্শন পূর্বক পার্কিং প্ল্যান।
২ (দুই)টি সেকশন (লম্বালম্বি ও আড়াআড়ি)।
সকল দিকের উন্নতি চিত্র (এলিভেশন)।
প্লটের সীমানা রেখা হইতে নূন্যতম সেট ব্যাক প্রয়োজন।
রাস্তার জন্য জমি হস্তান্তরের অঙ্গীকার নামা (প্রযোজ্য হলে)।
বসবাসযোগ্য কক্ষ, রান্নাঘর ও গোসলখানা/টয়লেটের ন্যূনতম ক্ষেত্রফল ও ন্যূনতম প্রস্থ।