চাকরি নিয়ে বিদেশ যেতে চান? জেনে নিন প্রয়োজনীয় সব তথ্য।(Want to go abroad with a job? Know the necessary information.)

Description

আপনি যদি বিদেশে গিয়ে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর চিন্তা করে থাকেন, সেটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে আপনার অভিবাসন যেন অবশ্যই নিরাপদ হয়। আর সে কারণেই বিদেশে যাওয়ার আগে কিছু তথ্য জেনে রাখা দরকার। অন্যথায় প্রতারণার শিকার কিংবা বিপদে পড়ার আশঙ্কা থাকে। যাঁরা চাকরি নিয়ে বিদেশে যান তাঁরা সাধারণত সুনির্দিষ্ট সময় পর চলে আসেন। জটিলতা আর দালাল এড়িয়ে একজন মানুষের স্বল্প খরচে বিদেশে যাওয়া, নিরাপদে সেই দেশে পৌঁছানো, ঠিকমতো কাজ পাওয়া এবং ভালোভাবে আবার দেশে ফিরে আসাই নিরাপদ অভিবাসন। এই ভিডিওতে আমরা চাকুরী নিয়ে বিদেশে যাবার আগে কিছু প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করবো। যেমন, আপনি সরকারের বৈধ কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই বিদেশে যাচ্ছেন কি না? কোন দেশে যাচ্ছেন, কত টাকা বেতনে? খরচের সেই টাকা কত দিনে তুলতে পারবেন? এবং তার সাথে প্রয়োজনীয় কিছু নম্বর ও ঠিকানা।

  • প্রশ্নঃ ১- চাকরি নিয়ে বিদেশে যাওয়ার আগে আমাদের কোন কোন বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত?

    উত্তরঃ 

     

    • প্রথমত, আপনি সরকারের বৈধ কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশে যাচ্ছেন কিনা। 
    • যে কাজে যাচ্ছে সেই কাজে আপনি দক্ষ কিনা,
    • কোন দেশে যাচ্ছেন, কত টাকা বেতনে যাচ্ছেন এসব প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব পেলে  তবেই বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিন।
  • প্রশ্নঃ ২- নাম নিবন্ধন করবেন কিভাবে?

    উত্তরঃ আমাদের দেশে নতুন আইন অনুযায়ী সরকারিভাবে নিবন্ধন করা ছাড়া এখন আর কারো বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই। কাজেই বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে আপনাকে শুরুতেই ঢাকার জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) কিংবা আপনার জেলার জনশক্তি কার্যালয় গিয়ে নাম নিবন্ধন করতে হবে। ৮০ টাকা খরচ করে বিএমইটি ডাটাবেজে নাম নিবন্ধন করা যাবে।

  • প্রশ্নঃ ৩- কোথায় যাবেন, কত খরচ?

    উত্তরঃ এর কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই। আপনি কোন দেশে যাচ্ছেন, কি কাজে যাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে অনেক কিছু। যত বেশি দালালদের এড়িয়ে চলতে ততই খরচ কমবে। ঢাকায় এসে সরাসরি রিক্রুটিং এজেন্সি বা বোয়েসেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন তাহলে খরচ কম পড়বে। টাকা লেনদেন অবশ্যই ব্যাংক বা রশিদের মাধ্যমে করবেন। পারলে কয়েকজন সাক্ষী রাখবেন। রশিদ না রাখতে পারলে যত টাকায় দেন না কেন তার কোনো বৈধতা থাকেনা।

  • প্রশ্নঃ ৪- মেয়েদের জন্য সুযোগ কোথায়?

    উত্তরঃ মেয়েদের জন্য উপযুক্ত হচ্ছে জর্ডান ও লেবানন। ১৯৯০ সাল থেকে পুরুষের পাশাপাশি মেয়েরাও বিদেশে চাকরি নিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাচ্ছেন জর্ডান আর লেবাননে। সম্প্রতি হংকং সরকারিভাবে বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী নিচ্ছে। এর বাইরে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। 

     

    একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে কোনো নারী চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে পারবেন না। তবে গৃহকর্মী ও পোশাকশ্রমিকদের ক্ষেত্রে বয়স ২৫ হতে হবে। সরকারি একমাত্র জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল বিনা খরচে মেয়েদের বিদেশে পাঠানোর সহায়তা দেয়। কাজেই কোনো প্রতিষ্ঠান বা দালাল এড়িয়ে বোয়েসেলে যান এবং সেখান থেকে সঠিকভাবে তথ্য জেনেই কেবল মেয়েদের বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

  • প্রশ্নঃ ৫- বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণ এর ব্যবস্থা রয়েছে!

    উত্তরঃ বিদেশগামীদের অনেককেই বিদেশে যাওয়ার জন্য জমিজমা বিক্রি করতে হয়। অনেককে চড়া সুদে ঋণ নিতে হয়। তবে এই সমস্যার সমাধানের জন্য সরকার প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক চালু করেছে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে বিদেশগামীরা ঋণ নিতে পারবেন। এ জন্য তাঁকে বিদেশে চাকরির নিয়োগপত্র দেখালেই চলবে। এ ছাড়া সোনালী, অগ্রণী, জনতাসহ সরকারি-বেসরকারি আরও অনেক ব্যাংকই এখন বিদেশে যাওয়ার জন্য স্বল্পসুদে ঋণ দিচ্ছে।

  • প্রশ্নঃ ৬- সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায় কি?

    উত্তরঃ  শ্রমিক বা চাকুরীজীবী হিসেবে সরকারিভাবে বিদেশ যেতে চাইলে সর্বপ্রথমে প্রাথমিকভাবে একটি নিবন্ধন করতে হয়। শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের জন্য সর্বপ্রথমে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান জনশক্তি কর্মসংস্থান ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিএমইটি )কেন্দ্রীয় ডাটা ব্যাংকে নিবন্ধন করতে হবে। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে দক্ষ, স্বল্পদক্ষ ,অদক্ষ নারী-পূরুষ শ্রমিক ইত্যাদি সেক্টর বা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক ভাবে বিভিন্ন দেশে সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করা হয়।

    ব্যক্তিভেদে বিভিন্ন কাজে সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার অন্যতম খাত হচ্ছে-

     

    • শ্রমিক হিসেবে 
    • চাকরি প্রার্থী হিসেবে 
    • শিক্ষার্থী হিসেবে ইত্যাদি।
  • প্রশ্নঃ ৭- শ্রমিক হিসেবে সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায়!

     

    উত্তরঃ আপনি যদি শ্রমিক হিসেবে সরকারিভাবে বিদেশ যেতে চান তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে বিদেশে শ্রমিক নিয়োগের দৈনিক পত্রিকাগুলো দিয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বিদেশে বিভিন্ন শিল্প কারখানা ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ থেকে অন্যান্য দেশে নিয়োগের মাধ্যমে সরকারিভাবে শ্রমিক নেওয়া হয় এবং এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটি সময়সীমা দেওয়া হয় আবেদন বা রেজিস্ট্রেশন করার জন্য । এজন্য আপনি যদি শ্রমিক হিসেবে সরকারিভাবে বিদেশ যেতে চান,তাহলে আপনাকে বিভিন্ন দেশের শ্রমিক নিয়োগের নিয়মিত ও সঠিকভাবে খোঁজখবর রাখতে হবে যাতে আপনি সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য সঠিক সময়ে সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন।

  • প্রশ্নঃ ৮- চাকরি প্রার্থী হিসেবে সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায় কি ?

    উত্তরঃ আপনি যদি সরকারিভাবে বিদেশ গিয়ে চাকরি করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে সর্বপ্রথম কোন দেশের কোন কোম্পানি বা সেক্টরে চাকরির জন্য সার্কুলার দিয়েছে সে বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজখবর রাখতে হবে। পাশাপাশি, দেশের বেশিরভাগ চাকরি দক্ষতা অভিজ্ঞতা নির্ভর। এক্ষেত্রে আপনার প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য চাকরি প্রার্থী হিসেবে সরকারিভাবে বিদেশ যেতে চাইলে বৈদেশিক বিভিন্ন চাকরির সার্কুলার ছাপানো হয় এমন দৈনিক পত্রিকাগুলোতে নিয়মিত খেয়াল রাখতে হবে ।এছাড়া আপনি চাইলে অনলাইনে ও বৈদেশিক চাকরি সংক্রান্ত বিভিন্ন নোটিশ দেখতে পারেন ।

  • প্রশ্নঃ ৯- শিক্ষার্থী হিসেবে সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায় কি ?

    উত্তরঃ শিক্ষার্থী হিসেবে সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রায় সব প্রক্রিয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফলাফল ভিত্তিক। এক্ষেত্রে বৈদেশিক নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষাপ্রতষ্ঠানে পড়াশোনার করতে সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীর মেধা, যোগ্যতা ও বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর নির্বাচন করা হয়।

  • প্রশ্নঃ ১০- সরকারিভাবে বিদেশ যেতে নিবন্ধন করার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা কি ?

    উত্তরঃ

     

    • সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করার সময় নিবন্ধন কার্ডের বয়স অবশ্যই 18 বছরের উর্ধ্বে হতে হবে। তবে বিদেশ যাওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে বয়স সীমা বিভিন্ন হতে পারে।
    • সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার নিবন্ধন করার জন্য নিবন্ধন কারীর নিজস্ব মোবাইল থাকতে হবে। কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত নিবন্ধন সম্পর্কিত বিভিন্ন আপডেট প্রার্থীর মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে।
    • যেহেতু নিবন্ধন কারীর যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারিভাবে বিদেশ গিয়ে সে কী কাজ করবে তা নির্ধারণ করা হবে, তাই সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য নিবন্ধনের সময় সকল যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সনদ ডাটা ব্যাংকে প্রদান করতে হবে। তাই প্রার্থীর নিবন্ধন চলাকালীন সময়ের মধ্যে নতুন কোন যোগ্যতা অর্জিত হলে তা ডাটা ব্যাংকে যোগ করা যাবে।
    • বিদেশে অনেক সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মদক্ষতা ,যোগ্যতার ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে শ্রমিক বা কর্মী নিয়োগ দেয়। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি উক্ত বিষয় গুলোর জন্য আবেদন করতে চাইলে তাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কিত সনদপত্র আপনাকে প্রদান করতে হবে। এছাড়াও বিদেশে অনেক প্রশিক্ষণ ভিত্তিক কাজের নিয়োগ দিয়ে থাকে যেখানে কাজ করার জন্য আপনার বিভিন্ন প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হতে পারে।
    • সরকারিভাবে বিদেশ গিয়ে কাজ করার জন্য নিবন্ধনের সময় প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সঠিক ও নির্ভুল হতে হবে।
    • প্রাথমিকভাবে শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করতে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেও যোগাযোগ করা যেতে পারে।
  • প্রশ্নঃ ১১- সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি?

    উত্তরঃ সরকারিভাবে বিদেশ যেতে চাইলে আপনাকে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে। যে  সকল গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছাড়া আপনি কোনোভাবেই সরকারিভাবে বিদেশ যেতে পারবেন না, তা নিম্নরূপ: 

    • পাসপোর্ট 
    • চাকুরির চুক্তিপত্র 
    • একটি ব্যাংক একাউন্ট
    • দূতাবাসের ঠিকানা ও ফোন নাম্বার
    • ভিসা
    • জনশক্তি ব্যুরোর ছাড়পত্র
    • মেডিকেল রিপোর্ট
    • টিকেট
    • টাকা প্রদানের রশিদ ও চুক্তিপত্র ইত্যাদি।


Close
MAwbiz.com